রেলওয়ের পাকশী বিভাগের অন্য সব দপ্তরের কর্মকর্তা, শ্রমিক ও কর্মচারীরা বেতন ভাতা প্রতিমাসে নিয়মিত পেলেও এই বিভাগের ৪৭ জন ভ্রাম্যমান টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) গত ৩ মাস ধরে বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। ফলে এসব টিটিই পরিবার আর্থিক সংকটে পড়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন বেতন ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা ।
টিটিইরা জানান, ইতোমধ্যে বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ বাকি পড়েছে। ধারদেনা করে কেউ কেউ এতদিন সংসার চালালেও যেসব টিটিইরা বাজারসহ নিত্যপ্রয়াজেনীয় জিনিসপত্র বিভিন্ন দোকান থেকে মাসিক হিসেবে বাকিতে ক্রয় করে থাকেন তাদের অনেকেই গত ৩ মাস বাকি শোধ করতে পারেননি। দোকানিরাও তাদের চাল-ডাল সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আর বাকিতে দিচ্ছেন না। এই অবস্থায় সামনে ঈদুল আজহার সময় ৪৭ টিটিই’র বেতন বন্ধ কীভাবে পার করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব টিটিইরা। রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতনাদি প্রদানের নতুন আর্থিক ব্যবস্থা অনলাইন ভিত্তিক ‘আইবাস সপাস’ সিস্টেমে (সমন্বিত বাজেট ব্যবস্থাপনা) জটিলতার কারণে গত এক বছর ধরে প্রতিমাসে এসব টিটিইদের বেতন ভাতা প্রদানের নির্দিষ্ট সময় থেকে এক-দু সপ্তাহ করে পেছাতে পেছাতে এখন ৩ মাস পিছিয়ে গেছে। ফলে গত এপ্রিল মাস থেকে চলতি মাস পর্যন্ত তাদের বেতন ভাতা প্রদান বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় সামন ঈদুল আজহার আগে এসব টিটিইদের বেতন ভাতা ও বোনাস প্রদান করাও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ঈদের আগে এই ৪৭ জন টিটিইদের বেতন ভাতা প্রদান করা যাবে কিনা তারও কোন সদুত্তর দিতে পারেননি রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। পাকশী বিভাগের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) আব্দুল আলীম বিশ্বাস মিঠু জানান, মাস শেষে বেতন পেয়ে সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকি গত ৩ মাস ধরে বেতন না পেয়ে আর্থিক সংকটে পড়ে দুর্ভোগ পেহাতে হচ্ছে আমাদের। টিটিইরা বলেন, গত ৩ মাস ঠিকমত বাজার করতে পারিনি। বাকিতে যেসব দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনে থাকি তারা সাফ সাফ বলে দিয়েছেন আর বাকির জের টানা সম্ভব হচ্ছেনা। সন্তানদের আবদারও মেটাতে পারছিনা। পরিবারের কাছে এবং দেনাদারদের নিকট লজ্জায় পড়ে গেছি। আরো বেশ কয়েকজন টিটিইরা বলেন, বেতনের টাকা ছাড়া আমাদের অন্য কোন আয়ের উৎস নাই, ফলে বেতন না পাবার কারনে বাসা ভাড়া, বাজারসহ সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রয়োজন মেটাতে পারছিনা। আমরা টিটিইরা এই অবস্থার অবসান চাই।
এ বিষয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বিভাগীয় বানিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ৪৭ জন টিটিইদের বেতন প্রদান বন্ধ রয়েছে, আমি নিজেও গত মাসে বেতন পাইনি। টাকা বরাদ্দ চেয়ে কয়েকবার অর্থমন্ত্রনালয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তিনি বলেন, আগে ম্যানুয়ালী বেতন প্রদান হতো তাতে সমস্যা হতো না। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন বেতন ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২ , ১৬ আষাড় ১৪২৮ ২৮ জিলকদ ১৪৪৩
প্রতিনিধি, ঈশ্বরদী (পাবনা)
রেলওয়ের পাকশী বিভাগের অন্য সব দপ্তরের কর্মকর্তা, শ্রমিক ও কর্মচারীরা বেতন ভাতা প্রতিমাসে নিয়মিত পেলেও এই বিভাগের ৪৭ জন ভ্রাম্যমান টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) গত ৩ মাস ধরে বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। ফলে এসব টিটিই পরিবার আর্থিক সংকটে পড়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন বেতন ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা ।
টিটিইরা জানান, ইতোমধ্যে বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ বাকি পড়েছে। ধারদেনা করে কেউ কেউ এতদিন সংসার চালালেও যেসব টিটিইরা বাজারসহ নিত্যপ্রয়াজেনীয় জিনিসপত্র বিভিন্ন দোকান থেকে মাসিক হিসেবে বাকিতে ক্রয় করে থাকেন তাদের অনেকেই গত ৩ মাস বাকি শোধ করতে পারেননি। দোকানিরাও তাদের চাল-ডাল সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আর বাকিতে দিচ্ছেন না। এই অবস্থায় সামনে ঈদুল আজহার সময় ৪৭ টিটিই’র বেতন বন্ধ কীভাবে পার করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব টিটিইরা। রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতনাদি প্রদানের নতুন আর্থিক ব্যবস্থা অনলাইন ভিত্তিক ‘আইবাস সপাস’ সিস্টেমে (সমন্বিত বাজেট ব্যবস্থাপনা) জটিলতার কারণে গত এক বছর ধরে প্রতিমাসে এসব টিটিইদের বেতন ভাতা প্রদানের নির্দিষ্ট সময় থেকে এক-দু সপ্তাহ করে পেছাতে পেছাতে এখন ৩ মাস পিছিয়ে গেছে। ফলে গত এপ্রিল মাস থেকে চলতি মাস পর্যন্ত তাদের বেতন ভাতা প্রদান বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় সামন ঈদুল আজহার আগে এসব টিটিইদের বেতন ভাতা ও বোনাস প্রদান করাও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ঈদের আগে এই ৪৭ জন টিটিইদের বেতন ভাতা প্রদান করা যাবে কিনা তারও কোন সদুত্তর দিতে পারেননি রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। পাকশী বিভাগের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) আব্দুল আলীম বিশ্বাস মিঠু জানান, মাস শেষে বেতন পেয়ে সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকি গত ৩ মাস ধরে বেতন না পেয়ে আর্থিক সংকটে পড়ে দুর্ভোগ পেহাতে হচ্ছে আমাদের। টিটিইরা বলেন, গত ৩ মাস ঠিকমত বাজার করতে পারিনি। বাকিতে যেসব দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনে থাকি তারা সাফ সাফ বলে দিয়েছেন আর বাকির জের টানা সম্ভব হচ্ছেনা। সন্তানদের আবদারও মেটাতে পারছিনা। পরিবারের কাছে এবং দেনাদারদের নিকট লজ্জায় পড়ে গেছি। আরো বেশ কয়েকজন টিটিইরা বলেন, বেতনের টাকা ছাড়া আমাদের অন্য কোন আয়ের উৎস নাই, ফলে বেতন না পাবার কারনে বাসা ভাড়া, বাজারসহ সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রয়োজন মেটাতে পারছিনা। আমরা টিটিইরা এই অবস্থার অবসান চাই।
এ বিষয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বিভাগীয় বানিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ৪৭ জন টিটিইদের বেতন প্রদান বন্ধ রয়েছে, আমি নিজেও গত মাসে বেতন পাইনি। টাকা বরাদ্দ চেয়ে কয়েকবার অর্থমন্ত্রনালয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তিনি বলেন, আগে ম্যানুয়ালী বেতন প্রদান হতো তাতে সমস্যা হতো না। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন বেতন ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।