আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়া যথাযথভাবে ছাড়ানো, সংরক্ষণ, বর্জ্য অপসারণ ও নির্ধারিত দামে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সমন্বিত ব্যবস্থা ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিটি দেশের সব জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) কাছে পাঠানো হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্থানীয় চেম্বার অব কমার্স, চামড়ার আড়তদার, মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মসজিদের ঈমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক, এতিমখানা, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় কার্যালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পুলিশ বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদুল আজহার সময় দেশব্যাপী মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী স্থানীয়ভাবে চামড়া ক্রয় করে আড়তদারদের মাধ্যমে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করে। কোরবানির পর স্বল্প সময়ে কাঁচা চামড়া আড়তে পৌঁছানো না হলে বা স্থানীয়ভাবে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা না হলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়াও কোরবানির পশু জবাই, পশুর দেহ থেকে চামড়া ছাড়ানো ও চামড়া সংরক্ষণে অনভিজ্ঞতা ও অদক্ষতার জন্যও এর মূল্য ও গুণগত মান দুটোই কমে যায়। দেশের এ মূল্যবান সম্পদ রক্ষার্থে এ বিষয়ে জনসচেতনতা ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রতিবছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে থাকে। স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী, আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিজ নিজ ক্রয় পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং ব্যাংক ও অন্যান্য উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে থাকেন। স্থানীয় পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয়-বিক্রয়, চামড়া নিয়ে গুজব ও বিশৃঙ্খলা রোধ এবং চামড়া যাতে কোন পর্যায়ে নষ্ট না হয় সেজন্য স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে ঈদের আগেই আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এদিকে সম্প্রতি চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় চামড়া শিল্পের বিকাশকে সুসংহত এবং সাবির্ক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই করতে ‘চামড়া শিল্প ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ’ গঠন, দেশের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী চামড়া সংরক্ষণাগার স্থাপন, প্রয়োজনীয় লবণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে লবণ ডিলার নিয়োগ, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয়-বিক্রয় নিশ্চিত করতে সব স্টেকহোল্ডারের সমন্বয়ে একটি ‘কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল’ গঠন, সঠিকভাবে কোরবানির চামড়া ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার বিষয়সমূহ বিজ্ঞাপন/টিভিসি আকারে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ওই সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, কাঁচা চামড়ার সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। কোরবানির ঈদে চামড়ার বড় কারবার হয় বলে ওই সময় সরবরাহ বেশি হয়। ফলে অনেক সময় ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না। এজন্য প্রয়োজনে সরকারিভাবে চামড়া কেনার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
শুক্রবার, ০১ জুলাই ২০২২ , ১৭ আষাড় ১৪২৮ ২৯ জিলকদ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়া যথাযথভাবে ছাড়ানো, সংরক্ষণ, বর্জ্য অপসারণ ও নির্ধারিত দামে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সমন্বিত ব্যবস্থা ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিটি দেশের সব জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) কাছে পাঠানো হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্থানীয় চেম্বার অব কমার্স, চামড়ার আড়তদার, মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মসজিদের ঈমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক, এতিমখানা, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় কার্যালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পুলিশ বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদুল আজহার সময় দেশব্যাপী মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী স্থানীয়ভাবে চামড়া ক্রয় করে আড়তদারদের মাধ্যমে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করে। কোরবানির পর স্বল্প সময়ে কাঁচা চামড়া আড়তে পৌঁছানো না হলে বা স্থানীয়ভাবে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা না হলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়াও কোরবানির পশু জবাই, পশুর দেহ থেকে চামড়া ছাড়ানো ও চামড়া সংরক্ষণে অনভিজ্ঞতা ও অদক্ষতার জন্যও এর মূল্য ও গুণগত মান দুটোই কমে যায়। দেশের এ মূল্যবান সম্পদ রক্ষার্থে এ বিষয়ে জনসচেতনতা ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রতিবছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে থাকে। স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী, আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিজ নিজ ক্রয় পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং ব্যাংক ও অন্যান্য উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে থাকেন। স্থানীয় পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয়-বিক্রয়, চামড়া নিয়ে গুজব ও বিশৃঙ্খলা রোধ এবং চামড়া যাতে কোন পর্যায়ে নষ্ট না হয় সেজন্য স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে ঈদের আগেই আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এদিকে সম্প্রতি চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় চামড়া শিল্পের বিকাশকে সুসংহত এবং সাবির্ক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই করতে ‘চামড়া শিল্প ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ’ গঠন, দেশের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী চামড়া সংরক্ষণাগার স্থাপন, প্রয়োজনীয় লবণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে লবণ ডিলার নিয়োগ, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয়-বিক্রয় নিশ্চিত করতে সব স্টেকহোল্ডারের সমন্বয়ে একটি ‘কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল’ গঠন, সঠিকভাবে কোরবানির চামড়া ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার বিষয়সমূহ বিজ্ঞাপন/টিভিসি আকারে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ওই সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, কাঁচা চামড়ার সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। কোরবানির ঈদে চামড়ার বড় কারবার হয় বলে ওই সময় সরবরাহ বেশি হয়। ফলে অনেক সময় ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না। এজন্য প্রয়োজনে সরকারিভাবে চামড়া কেনার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।