নড়াইলে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত, তদন্ত প্রতিবেদন পেছালো

৬ জুলাই দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও সম্প্রীতি সমাবেশ

নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন গতকাল দেয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার নির্ধারণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের অন্য তদন্ত টিম কাজ করছে। ঘটনায় আগামী ৬ জুলাই ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও সম্প্রীতি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। গতকাল বেলা ১১টার দিকে নড়াইল রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ভবন মিলনায়তনে সুধী সমাবেশে এ ঘোষণা দেন তারা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শফিউর রহমান ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ নেতা রণজিৎ চ্যাটার্জি।

এর আগে নেতারা নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে অধ্যক্ষকে হেনস্তার দায় সরকারকেই নিতে হবে। পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেইসবুক আইডিতে নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে লেখেন, প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম। এ পোস্ট দেয়ার পর গত ১৮ জুন সকালে কলেজে আসেন রাহুল। এরপর তার বন্ধুরা পোস্টটি মুছে ফেলতে বললেও সে পোস্ট মুছেননি রাহুল। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানান। এক পর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে কলেজ চত্বরে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হন।

এদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ এনে বিক্ষুদ্ধ জনতা ঘটনার দিন ১৮ জুন বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়কে গলায় জুতার মালা পরিয়ে প্রতিবাদ জানান।

শুক্রবার, ০১ জুলাই ২০২২ , ১৭ আষাড় ১৪২৮ ২৯ জিলকদ ১৪৪৩

নড়াইলে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত, তদন্ত প্রতিবেদন পেছালো

৬ জুলাই দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও সম্প্রীতি সমাবেশ

প্রতিনিধি, নড়াইল

নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন গতকাল দেয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামীকাল শনিবার নির্ধারণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের অন্য তদন্ত টিম কাজ করছে। ঘটনায় আগামী ৬ জুলাই ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও সম্প্রীতি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। গতকাল বেলা ১১টার দিকে নড়াইল রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ভবন মিলনায়তনে সুধী সমাবেশে এ ঘোষণা দেন তারা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শফিউর রহমান ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ নেতা রণজিৎ চ্যাটার্জি।

এর আগে নেতারা নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে অধ্যক্ষকে হেনস্তার দায় সরকারকেই নিতে হবে। পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেইসবুক আইডিতে নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে লেখেন, প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম। এ পোস্ট দেয়ার পর গত ১৮ জুন সকালে কলেজে আসেন রাহুল। এরপর তার বন্ধুরা পোস্টটি মুছে ফেলতে বললেও সে পোস্ট মুছেননি রাহুল। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানান। এক পর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে কলেজ চত্বরে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে। ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হন।

এদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ এনে বিক্ষুদ্ধ জনতা ঘটনার দিন ১৮ জুন বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়কে গলায় জুতার মালা পরিয়ে প্রতিবাদ জানান।