রেঞ্জ দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে গ্রেপ্তার মাহদী, সে শিবিরকর্মী

পদ্মা সেতুর অবকাঠামোর ক্ষতিসাধনের উদ্দেশে ভিডিও ধারণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও অন্তর্ঘাতমূলক কাজে জড়িত মাহদি হাসান ওরফে মেহেদিকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। জানায়, গ্রেপ্তার মাহদি তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে আলিম-দাখিল শেষ করেছেন। তিনি মাদ্রাসায় পড়াকালীন শিবিরকর্মী ছিলেন। গত বুধবার রাতে লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ভিডিও ধারণকৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়।

গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, একদল অসাধু চক্র পদ্মা সেতু যাতে নির্মিত না হয় তার জন্য আগ থেকেই বিভিন্ন অপপ্রচারসহ সেতু ধ্বংস ও ক্ষয়ক্ষতিজনিত কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই বিভিন্ন গোষ্ঠী সেতুর বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে দেখা যায়।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের এই মাইলফলক দেশের বর্তমান সরকারের একটি অবিস্মরণীয় সাফল্য। এই সাফল্যকে ছোট করা ও জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি মহল সর্বদা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কিছু অসাধু ব্যক্তিকে দেখা যায় যারা স্থাপনায় উঠে বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। এর মধ্যে ২৬ জুন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হতে দেখা যায়, যেখানে গ্রেপ্তার মাহদি হাসান সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে সংযুক্তনাট-বল্টু খুলে প্রদর্শন করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রেপ্তার মাহদি হাসান সেতুর রেলিং থেকে নাট-বল্টু খুলছে আবার লাগিয়ে দিচ্ছে।

আসাদুজ্জামান বলেন, সিটিটিসি সাইবার ইন্টেলিজেন্স ডিভিশন আগে থেকেই এ বিষয়ে মনিটরিং করে আসছিল এবং থানা থেকে তথ্য পাওয়া মাত্রই তথ্য-প্রযুক্তি ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে আসামি মাহদি হাসানকে (ভিডিওতে অবস্থানকারী ব্যক্তি) শনাক্ত করে। গোয়েন্দা তথ্যমতে মাহদি হাসান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপন করেছে। সিটিটিসি সিটি ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস ডিভিশনের একটি চৌকশ টিম রামগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার মাহদি হাসানের দেয়া তথ্যানুযায়ী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা সেতু উত্তর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে। মাহদির কোন রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, মাহদি তারিুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে আলিম-দাখিল অধ্যয়নরত অবস্থায় শিবিরের সঙ্গে যুক্ত হয়। মাহদি নাট-বল্টু হাত দিয়ে খুলেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোবাইলে ভিডিও ধারণের আগে তিনি গোপনে রেঞ্জ দিয়ে নাট-বল্টু খুলেন। এ সময় তার সহযোগীরা এ কাজে সহায়তা করেন। এরপর ভিডিও ধারণের সময় হাত দিয়ে খুলে তা ভিডিও করে ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেন। তার অন্য সহযোগীদের নাম-পরিচয় না জানালেও তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলমান রয়েছে বলেও জানান সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান।

শুক্রবার, ০১ জুলাই ২০২২ , ১৭ আষাড় ১৪২৮ ২৯ জিলকদ ১৪৪৩

রেঞ্জ দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে গ্রেপ্তার মাহদী, সে শিবিরকর্মী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

পদ্মা সেতুর অবকাঠামোর ক্ষতিসাধনের উদ্দেশে ভিডিও ধারণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও অন্তর্ঘাতমূলক কাজে জড়িত মাহদি হাসান ওরফে মেহেদিকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। জানায়, গ্রেপ্তার মাহদি তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে আলিম-দাখিল শেষ করেছেন। তিনি মাদ্রাসায় পড়াকালীন শিবিরকর্মী ছিলেন। গত বুধবার রাতে লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ভিডিও ধারণকৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়।

গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, একদল অসাধু চক্র পদ্মা সেতু যাতে নির্মিত না হয় তার জন্য আগ থেকেই বিভিন্ন অপপ্রচারসহ সেতু ধ্বংস ও ক্ষয়ক্ষতিজনিত কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই বিভিন্ন গোষ্ঠী সেতুর বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে দেখা যায়।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের এই মাইলফলক দেশের বর্তমান সরকারের একটি অবিস্মরণীয় সাফল্য। এই সাফল্যকে ছোট করা ও জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি মহল সর্বদা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কিছু অসাধু ব্যক্তিকে দেখা যায় যারা স্থাপনায় উঠে বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। এর মধ্যে ২৬ জুন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হতে দেখা যায়, যেখানে গ্রেপ্তার মাহদি হাসান সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে সংযুক্তনাট-বল্টু খুলে প্রদর্শন করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রেপ্তার মাহদি হাসান সেতুর রেলিং থেকে নাট-বল্টু খুলছে আবার লাগিয়ে দিচ্ছে।

আসাদুজ্জামান বলেন, সিটিটিসি সাইবার ইন্টেলিজেন্স ডিভিশন আগে থেকেই এ বিষয়ে মনিটরিং করে আসছিল এবং থানা থেকে তথ্য পাওয়া মাত্রই তথ্য-প্রযুক্তি ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে আসামি মাহদি হাসানকে (ভিডিওতে অবস্থানকারী ব্যক্তি) শনাক্ত করে। গোয়েন্দা তথ্যমতে মাহদি হাসান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপন করেছে। সিটিটিসি সিটি ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস ডিভিশনের একটি চৌকশ টিম রামগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার মাহদি হাসানের দেয়া তথ্যানুযায়ী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা সেতু উত্তর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে। মাহদির কোন রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, মাহদি তারিুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে আলিম-দাখিল অধ্যয়নরত অবস্থায় শিবিরের সঙ্গে যুক্ত হয়। মাহদি নাট-বল্টু হাত দিয়ে খুলেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোবাইলে ভিডিও ধারণের আগে তিনি গোপনে রেঞ্জ দিয়ে নাট-বল্টু খুলেন। এ সময় তার সহযোগীরা এ কাজে সহায়তা করেন। এরপর ভিডিও ধারণের সময় হাত দিয়ে খুলে তা ভিডিও করে ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেন। তার অন্য সহযোগীদের নাম-পরিচয় না জানালেও তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলমান রয়েছে বলেও জানান সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান।