রংপুরের কাউনিয়ায় মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবা আবুল বাশারতকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাবা ও ছেলেকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বিকেলে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক তারিক হোসেন এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে পুলিশি পাহারায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে প্রথমে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার জিগাবাড়ি গ্রামের মা মরজিনা বেগম ও বাবা আবুল বাশারতের মেয়েকে পার্শ্ববর্তী বিশ্বনাথপুর গ্রামের মাহবুর ইসলাম স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি মেয়ের বাবা নিহত আবুল বাশারত বেশ কয়েকবার আসইম মাহবুর ইসলামের বাবা নুর আমিনকে জানান। কিন্তু নুর আমিন ছেলেকে শাসন না করে তার অপকর্মকে সমর্থন দিয়ে উল্টো তাকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করে আসছিল। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা ঝগড়াও হয়। এই ঘটনার জের ধরে ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর ভিকটিম আবুল বাশারত আসামি মাহবুর ইসলাম ও তার বাবা নুর আমিনের বিশ্বনাথপুর গ্রামের বাড়ির সামনে দিয়ে নিজের জিগাবাড়ি বাসায় ফেরার পথে আসামিরা আবুল বাশারতের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে তাকে উপর্যুপরি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত আবুল বাশারতের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে আসামি মাহবুর ইসলাম ও তার বাবা নুর আমিনসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে বাবা নুর আমিন ও ছেলে মাহবুর ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারক ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন। সেই সঙ্গে দুজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন আদালত। অন্যদিকে দুই আসামি মাইদুল ও মাহফুজার রহমানকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি নয়নুর রহমান টফি অ্যাডভোকেট এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলো বলে তিনি মনে করেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রশীদ চৌধুরী বলেন, তারা ন্যায্য বিচার পাননি। এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
শুক্রবার, ০১ জুলাই ২০২২ , ১৭ আষাড় ১৪২৮ ২৯ জিলকদ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর
রংপুরের কাউনিয়ায় মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবা আবুল বাশারতকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাবা ও ছেলেকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বিকেলে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক তারিক হোসেন এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে পুলিশি পাহারায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে প্রথমে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাদের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার জিগাবাড়ি গ্রামের মা মরজিনা বেগম ও বাবা আবুল বাশারতের মেয়েকে পার্শ্ববর্তী বিশ্বনাথপুর গ্রামের মাহবুর ইসলাম স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। বিষয়টি মেয়ের বাবা নিহত আবুল বাশারত বেশ কয়েকবার আসইম মাহবুর ইসলামের বাবা নুর আমিনকে জানান। কিন্তু নুর আমিন ছেলেকে শাসন না করে তার অপকর্মকে সমর্থন দিয়ে উল্টো তাকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করে আসছিল। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা ঝগড়াও হয়। এই ঘটনার জের ধরে ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর ভিকটিম আবুল বাশারত আসামি মাহবুর ইসলাম ও তার বাবা নুর আমিনের বিশ্বনাথপুর গ্রামের বাড়ির সামনে দিয়ে নিজের জিগাবাড়ি বাসায় ফেরার পথে আসামিরা আবুল বাশারতের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে তাকে উপর্যুপরি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত আবুল বাশারতের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে আসামি মাহবুর ইসলাম ও তার বাবা নুর আমিনসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে বাবা নুর আমিন ও ছেলে মাহবুর ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারক ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন। সেই সঙ্গে দুজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন আদালত। অন্যদিকে দুই আসামি মাইদুল ও মাহফুজার রহমানকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি নয়নুর রহমান টফি অ্যাডভোকেট এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলো বলে তিনি মনে করেন।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রশীদ চৌধুরী বলেন, তারা ন্যায্য বিচার পাননি। এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।