‘ক্ষুদ্র শিল্পই অর্থনীতির মেরুদণ্ড’

ক্ষুদ্র শিল্পই অর্থনীতির মেরুদণ্ড। আজ যারা ছোট উদ্যোক্তা একদিন তারাই বড় উদ্যোক্তা হবেন। প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। যতো বেশি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে, ততো বেশি কর্মসংস্থান হবে। আর কর্ম সংস্থান হলেই দেশে বেকারত্ব দূবে। গতকাল এক কর্মশালায় এমন মন্তব্য করেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। গতকাল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (বিডিএস) আয়োজিত ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ঋণ সংগ্রহে সহায়তামূলক কর্মশালা’ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংকিং খাতকে এখন সহজ করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে তারা আরও বলেন, ‘নারী উদ্যেক্তাদের জন্য বর্তমান সরকার যেমন সচেতন তেমনি সচেতন দেশের ব্যাংকগুলো।’

এ সময় তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির সঙ্গে বিডিএস’র একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির সভাপতি শাহিন আক্তার সাথী ও বিডিএস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ আলী।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোনালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে এবং উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। উদ্যোক্তা হওয়ার আগে কি ব্যবসা করবেন, ব্যবসার ধরন, আপনার জন্য ব্যবসা কতটা সহনীয় হবে এসব বিষয় দেখতে হবে। কোথায় কোথায় বাধা আসতে পারে তা যদি বুঝতে পারেন তবে যে কোন ব্যবসাতেই সফল হওয়া সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাকার জন্য আমরা আছি, লোন নেয়ার জন্য কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়, শুধু মাত্র সেসব ঠিক রাখবেন। ব্যাংকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলে আপনার ব্যবসা এগিয়ে যেতে বাধ্য।’

এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলম বলেন, ‘উদ্যেক্তা হওয়ার জন্য লাভ লস যাই হোক সব কিছুর হিসাব রাখাতে হবে।’

কাগজ পত্র সব ঠিক থাকার পরও লোন পেতে নানা ঝামেলায় পড়তে হয় এমন প্রশ্নের জাবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘একজন গ্রাহক বা উদ্যোক্তা মনে করেন তার কাছে সব ডকুমেন্ট আছে কিন্তু ব্যাংকার জানেন কোন কোন ডকুমেন্ট দরকার তাই তাদের সঙ্গে যোগযোগ করতে হবে।’

শাহ আলম উদ্যোক্তাদের ডাটাবেজ তৈরি করার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘অনেক সময় লোন নিতে গিয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা যেমন ঝামেলায় পরেন তেমনি আমরাও পরি। যদি ডাটাবেজ থাকে তবে এক ক্লিকই আমরা দেখে নিতে পারবো আপনাদের সব তথ্য। বিডিএস প্রশিক্ষণের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের ডাটা কিভাবে রাখা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।’

সাওল হার্ট সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি মোহন রায়হান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার। কিন্তু এত বছর পরও তা হয়নি। সেই অপমানের বোঝা নিয়ে আজ সাধারণ মানুষদের জন্য কাজ করছি। ব্যাংক টাকা দেয় লুটেরাদের। যে যত বড় চোর সে তত বেশি ঋণ পায়, সে তত বেশি ঋণ খেলাপি হয়। ক্ষুদ্র উদ্যেক্তাদের লোন দেয়ার কথা মনে করে না।’

জনপ্রতিনিধি ঢাকা উত্তরের ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন আক্তার সাথী বলেন, ‘আমরা যারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ব্যাংক লোন নিতে গিয়ে তাদের পদে পদে হেনস্তা হতে হয়। নারী উদ্যোক্তারা সহজে লোন পায়, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ পায় এসব ডাহা মিথ্যা কথা। ১০ লাখের জন্যও ৫ লাখ টাকা জামানত দেখাতে হয়।’

বিজনেজ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ আলী বলেন, ‘দেশে কর্মসংস্থানের প্রধান খাত এসএমই বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ। খাতটা এখন অস্থিতিশীল। এই খাতে যারা কাজ করছেন তারা নানা বাধা বিপত্তি নিয়ে কাজ করছেন। এই বাধা-বিপত্তি দূর করে উদ্যোক্তা হতে এ ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। আশা করবো, এমন কার্যক্রমে সরকার এগিয়ে আসবে।’

এ সময় তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির সঙ্গে বিডিএস’র একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির সভাপতি শাহিন আক্তার সাথী ও বিডিএস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ আলী। কর্মশালা শেষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের সনদপত্র প্রদান করা হয়।

শনিবার, ০২ জুলাই ২০২২ , ১৮ আষাড় ১৪২৮ ২২ জিলহজ ১৪৪৩

‘ক্ষুদ্র শিল্পই অর্থনীতির মেরুদণ্ড’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

ক্ষুদ্র শিল্পই অর্থনীতির মেরুদণ্ড। আজ যারা ছোট উদ্যোক্তা একদিন তারাই বড় উদ্যোক্তা হবেন। প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। যতো বেশি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে, ততো বেশি কর্মসংস্থান হবে। আর কর্ম সংস্থান হলেই দেশে বেকারত্ব দূবে। গতকাল এক কর্মশালায় এমন মন্তব্য করেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। গতকাল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (বিডিএস) আয়োজিত ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ঋণ সংগ্রহে সহায়তামূলক কর্মশালা’ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংকিং খাতকে এখন সহজ করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে তারা আরও বলেন, ‘নারী উদ্যেক্তাদের জন্য বর্তমান সরকার যেমন সচেতন তেমনি সচেতন দেশের ব্যাংকগুলো।’

এ সময় তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির সঙ্গে বিডিএস’র একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির সভাপতি শাহিন আক্তার সাথী ও বিডিএস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ আলী।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোনালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে এবং উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য এ ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। উদ্যোক্তা হওয়ার আগে কি ব্যবসা করবেন, ব্যবসার ধরন, আপনার জন্য ব্যবসা কতটা সহনীয় হবে এসব বিষয় দেখতে হবে। কোথায় কোথায় বাধা আসতে পারে তা যদি বুঝতে পারেন তবে যে কোন ব্যবসাতেই সফল হওয়া সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাকার জন্য আমরা আছি, লোন নেয়ার জন্য কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়, শুধু মাত্র সেসব ঠিক রাখবেন। ব্যাংকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখলে আপনার ব্যবসা এগিয়ে যেতে বাধ্য।’

এছাড়াও সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলম বলেন, ‘উদ্যেক্তা হওয়ার জন্য লাভ লস যাই হোক সব কিছুর হিসাব রাখাতে হবে।’

কাগজ পত্র সব ঠিক থাকার পরও লোন পেতে নানা ঝামেলায় পড়তে হয় এমন প্রশ্নের জাবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘একজন গ্রাহক বা উদ্যোক্তা মনে করেন তার কাছে সব ডকুমেন্ট আছে কিন্তু ব্যাংকার জানেন কোন কোন ডকুমেন্ট দরকার তাই তাদের সঙ্গে যোগযোগ করতে হবে।’

শাহ আলম উদ্যোক্তাদের ডাটাবেজ তৈরি করার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘অনেক সময় লোন নিতে গিয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা যেমন ঝামেলায় পরেন তেমনি আমরাও পরি। যদি ডাটাবেজ থাকে তবে এক ক্লিকই আমরা দেখে নিতে পারবো আপনাদের সব তথ্য। বিডিএস প্রশিক্ষণের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের ডাটা কিভাবে রাখা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।’

সাওল হার্ট সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি মোহন রায়হান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার। কিন্তু এত বছর পরও তা হয়নি। সেই অপমানের বোঝা নিয়ে আজ সাধারণ মানুষদের জন্য কাজ করছি। ব্যাংক টাকা দেয় লুটেরাদের। যে যত বড় চোর সে তত বেশি ঋণ পায়, সে তত বেশি ঋণ খেলাপি হয়। ক্ষুদ্র উদ্যেক্তাদের লোন দেয়ার কথা মনে করে না।’

জনপ্রতিনিধি ঢাকা উত্তরের ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন আক্তার সাথী বলেন, ‘আমরা যারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ব্যাংক লোন নিতে গিয়ে তাদের পদে পদে হেনস্তা হতে হয়। নারী উদ্যোক্তারা সহজে লোন পায়, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ পায় এসব ডাহা মিথ্যা কথা। ১০ লাখের জন্যও ৫ লাখ টাকা জামানত দেখাতে হয়।’

বিজনেজ ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ আলী বলেন, ‘দেশে কর্মসংস্থানের প্রধান খাত এসএমই বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ। খাতটা এখন অস্থিতিশীল। এই খাতে যারা কাজ করছেন তারা নানা বাধা বিপত্তি নিয়ে কাজ করছেন। এই বাধা-বিপত্তি দূর করে উদ্যোক্তা হতে এ ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। আশা করবো, এমন কার্যক্রমে সরকার এগিয়ে আসবে।’

এ সময় তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির সঙ্গে বিডিএস’র একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির সভাপতি শাহিন আক্তার সাথী ও বিডিএস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ আলী। কর্মশালা শেষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের সনদপত্র প্রদান করা হয়।