লালমনিরহাটে নিজ ঘরে ফিরতে না পারা বানভাসি মানুষের জীবন কাটছে ভাসমান অবস্থায়। এখনও ডুবে আছে তাদের ঘর-বাড়ি। তাই আশ্রয় হয়েছে নৌকা ও কলাগাছের ভেলা ও অন্যের বাড়ি এবং ওয়াপদা বাঁধের উপর। কাটছে দুর্বিষহ জীবন। এদিকে উঠানামা করেছে পানি। উঁকি দিচ্ছে নানা ধরনের পানিবাহিত রোগব্যাধি। অনভ্যস্ত এই ভাসমান জীবন থেকে মুক্তি প্রয়োজন। কিন্তু বানভাসিদের জীবনে সেই দিন কবে আসবে কেউ জানে না। তিস্তা ও ধরলা পারের মানুষ। তাইতো পানির সঙ্গে সখ্যতা তাদের জন্ম-জন্মান্তরের। প্রতি বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় পানিতে ডুবে থাকে চারপাশ। চারপাশে পানি থাকলেও নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় জীবন অভ্যস্ত নয় এখানকার মানুষের। ভাসমান এই জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। এমনিতে দেখে বোঝার উপায় নেই কী বিপদ যাচ্ছে মানুষগুলোর ওপর দিয়ে। সন্ধ্যা নামে এদের বন্দী জীবনে। বিদ্যুৎ নেই। চুলার ব্যবস্থা আছে বা নেই। থাকলেও এক বেলার বেশি রান্না করার সুযোগ নেই। বানের পানি নামছে ধীরে ধীরে। কিন্তু সে ঘরে ওঠার পরিবেশ নেই তাদের।
জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৩টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানির সমতল ৫২.২৭ মিটার, (বিপৎসীমা=৫২.৬০ মিটার) যা বিপৎসীমার ৩৩ সে.মি. নিচে। কাউনিয়া পয়েন্টে পানির সমতল ২৮.৯৭ মিটার, (বিপৎসীমা=২৯.২০ মিটার) যা বিপৎসীমার ৫২ সে.মি. নিচে। ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪১ সে.মি. নিচে।
পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার পরিবারগুলো পানিবন্দী। ইতঃপূর্বে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো জলকপাট খোলা রয়েছে। তবে ভারতে পানির প্রবাহ কমে গেলে তিস্তার পানি আবারও কমবে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট, কুলাঘাট, বড়বাড়ী ইউনিয়ন ধরলা নদীর বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে হুমকির মুখে পড়েছে রাস্তাঘাট ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ভেঙে গেছে বাড়িঘর।
অন্যদিকে রতœাই, স্বর্ণামতি, সানিয়াজান, সাকোয়া, চাতলা, মালদহ, ত্রিমোহীনি, মরাসতি, গিরিধারী, গিদারী, ধোলাই, শিংগীমারী, ছিনাকাটা, ধলাই ও ভেটেশ্বর নদীতে বন্যার পানিও বাড়তে শুরু করেছে।
শনিবার, ০২ জুলাই ২০২২ , ১৮ আষাড় ১৪২৮ ২২ জিলহজ ১৪৪৩
প্রতিনিধি, লালমনিরহাট
লালমনিরহাটে নিজ ঘরে ফিরতে না পারা বানভাসি মানুষের জীবন কাটছে ভাসমান অবস্থায়। এখনও ডুবে আছে তাদের ঘর-বাড়ি। তাই আশ্রয় হয়েছে নৌকা ও কলাগাছের ভেলা ও অন্যের বাড়ি এবং ওয়াপদা বাঁধের উপর। কাটছে দুর্বিষহ জীবন। এদিকে উঠানামা করেছে পানি। উঁকি দিচ্ছে নানা ধরনের পানিবাহিত রোগব্যাধি। অনভ্যস্ত এই ভাসমান জীবন থেকে মুক্তি প্রয়োজন। কিন্তু বানভাসিদের জীবনে সেই দিন কবে আসবে কেউ জানে না। তিস্তা ও ধরলা পারের মানুষ। তাইতো পানির সঙ্গে সখ্যতা তাদের জন্ম-জন্মান্তরের। প্রতি বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় পানিতে ডুবে থাকে চারপাশ। চারপাশে পানি থাকলেও নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় জীবন অভ্যস্ত নয় এখানকার মানুষের। ভাসমান এই জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। এমনিতে দেখে বোঝার উপায় নেই কী বিপদ যাচ্ছে মানুষগুলোর ওপর দিয়ে। সন্ধ্যা নামে এদের বন্দী জীবনে। বিদ্যুৎ নেই। চুলার ব্যবস্থা আছে বা নেই। থাকলেও এক বেলার বেশি রান্না করার সুযোগ নেই। বানের পানি নামছে ধীরে ধীরে। কিন্তু সে ঘরে ওঠার পরিবেশ নেই তাদের।
জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৩টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানির সমতল ৫২.২৭ মিটার, (বিপৎসীমা=৫২.৬০ মিটার) যা বিপৎসীমার ৩৩ সে.মি. নিচে। কাউনিয়া পয়েন্টে পানির সমতল ২৮.৯৭ মিটার, (বিপৎসীমা=২৯.২০ মিটার) যা বিপৎসীমার ৫২ সে.মি. নিচে। ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪১ সে.মি. নিচে।
পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার পরিবারগুলো পানিবন্দী। ইতঃপূর্বে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো জলকপাট খোলা রয়েছে। তবে ভারতে পানির প্রবাহ কমে গেলে তিস্তার পানি আবারও কমবে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট, কুলাঘাট, বড়বাড়ী ইউনিয়ন ধরলা নদীর বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে হুমকির মুখে পড়েছে রাস্তাঘাট ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ভেঙে গেছে বাড়িঘর।
অন্যদিকে রতœাই, স্বর্ণামতি, সানিয়াজান, সাকোয়া, চাতলা, মালদহ, ত্রিমোহীনি, মরাসতি, গিরিধারী, গিদারী, ধোলাই, শিংগীমারী, ছিনাকাটা, ধলাই ও ভেটেশ্বর নদীতে বন্যার পানিও বাড়তে শুরু করেছে।