ঘাতক শিক্ষার্থীর প্রেমিকাও বহিষ্কার, এক সপ্তাহ পর ক্লাস শুরু

সাভারে ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুর প্রেমিকাকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাজী ইউনুছ আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান। এদিকে এক সপ্তাহ পর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গতকাল থেকে আবার ক্লাস শুরু হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো হয়।

অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান জানান, স্কুলের প্রভাতী ও দিবা শাখার ক্লাস সময়মতো শুরু হয়েছে, তবে শিক্ষার্থী উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম। তিনি আরও বলেন, স্কুল ও কলেজ শাখা মিলিয়ে অর্ধেকের কিছু বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে।

এদিকে গতকাল অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গত ২৫ জুন শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে নৃশংসভাবে আঘাত করা হলে পরদিন তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে ও আসামির জবানবন্দিতে ওই ছাত্রীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান জানান, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুসারে শুক্রবার জিতুকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার প্রেমিকাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। যদি প্রমাণিত হয় ওই ছাত্রীর জন্যই ঘটনা ঘটেছে। তাহলে ওই শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।

গত ২৫ জুন সাভারে ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। হঠাৎ অভিযুক্ত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক উৎপলকে স্টাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মারা যান তিনি।

জিতু চিত্রশালাই এলাকার উজ্জ্বল হাজীর ছেলে এবং ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত ছিল। এ ঘটনায় রোববার আশুলিয়া থানায় নিহত শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে জিতুর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে বুধবার র‌্যাবের একটি দল গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে আটক করে। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিতু স্বীকার করে প্রেমিকাকে হিরোইজম দেখাতেই শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পেটায়।

রবিবার, ০৩ জুলাই ২০২২ , ১৯ আষাড় ১৪২৮ ২৩ জিলহজ ১৪৪৩

সাভারে শিক্ষক হত্যা

ঘাতক শিক্ষার্থীর প্রেমিকাও বহিষ্কার, এক সপ্তাহ পর ক্লাস শুরু

প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা)

সাভারে ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুর প্রেমিকাকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাজী ইউনুছ আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান। এদিকে এক সপ্তাহ পর ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গতকাল থেকে আবার ক্লাস শুরু হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো হয়।

অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান জানান, স্কুলের প্রভাতী ও দিবা শাখার ক্লাস সময়মতো শুরু হয়েছে, তবে শিক্ষার্থী উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম। তিনি আরও বলেন, স্কুল ও কলেজ শাখা মিলিয়ে অর্ধেকের কিছু বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে।

এদিকে গতকাল অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গত ২৫ জুন শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে নৃশংসভাবে আঘাত করা হলে পরদিন তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে ও আসামির জবানবন্দিতে ওই ছাত্রীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান জানান, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুসারে শুক্রবার জিতুকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার প্রেমিকাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। যদি প্রমাণিত হয় ওই ছাত্রীর জন্যই ঘটনা ঘটেছে। তাহলে ওই শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।

গত ২৫ জুন সাভারে ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। হঠাৎ অভিযুক্ত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক উৎপলকে স্টাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মারা যান তিনি।

জিতু চিত্রশালাই এলাকার উজ্জ্বল হাজীর ছেলে এবং ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত ছিল। এ ঘটনায় রোববার আশুলিয়া থানায় নিহত শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে জিতুর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে বুধবার র‌্যাবের একটি দল গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে আটক করে। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিতু স্বীকার করে প্রেমিকাকে হিরোইজম দেখাতেই শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পেটায়।