করোনা : শনাক্ত কমেছে, বেড়েছে মৃত্যু

টানা চার দিন দুই হাজারের বেশি মানুষের কোভিড শনাক্তের পর একদিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। শনাক্তের হারও সামান্য কমেছে। তবে বেড়েছে মৃত্যু। সম্প্রতি শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে আগামী কয়েকদিনে মৃত্যু আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। তারা বলেন, এখন ওমিক্রনের বিএ-৫ ভ্যারিয়েন্টের (ধরন) সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এটি ওমিক্রণের অন্য সব ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে শনাক্ত কোভিড রোগীর মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে সর্বশেষ একদিনে এর চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল গত ৬ মার্চ; ওইদিন আটজনের মৃত্যু হয়েছিল। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি খুব একটা অনুসরণ করছেন না। মাস্ক পরছে না। জনসমাগম হয়-এমন স্থানগুলোতেও মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যাচ্ছে না। এ কারণে আগামী সংক্রমণও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দৈনিক শনাক্ত হাজারের নিচে নেমে আসে। গত ৫ মে মাত্র চারজনের দেহে করোনা শনাক্তের তথ্য দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। শনাক্তের হারও এক শতাংশের কম ছিল। এরপর বেশ কিছুদিন কারো মৃত্যুর খবর দেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে গত জুনের শুরু থেকেই পুনরায় বাড়তে থাকে সংক্রমণ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে বলা হয়, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এক হাজার ১০৫ জনের দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন শুক্রবার এক হাজার ৮৯৭ জনের দেহে কোভিড শনাক্ত হয়েছিল। তার আগে টানা চার দিন দুই হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওই সময় শনাক্তের হার প্রায় ১৫ শতাংশের মতো ছিল।

সর্বশেষ একদিনে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে কোভিড শনাক্তের হার ছিল ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। এ হিসাবে সংক্রমণ হার সামান্য কমেছে। আর এ পর্যন্ত দেশে মোট কোভিড শনাক্তের হারের ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। একদিনে শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে মোট কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৭ জনে। আর ছয়জনের মৃত্যুতে কোভিডে মোট ২৯ হাজার ১৬০ জনের মৃত্যু হলো।

জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক ডা. মুশতাক হোসেন গতকাল সংবাদকে বলেছেন, ‘মৃত্যু আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। এখন যারা মারা যাচ্ছেন তারা তিন সপ্তাহ আগে আক্রান্ত হয়েছিল। ওই সময় শনাক্ত কিছুটা কম ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে শনাক্ত বেড়েছে শনাক্ত বাড়লে মৃত্যুও বাড়ে এটাই স্বাভাবিক।’

একদিনের ব্যবধানে শনাক্ত ও শনাক্তের হার কিছুটা কমেছে; এটি পরিস্থিতির উন্নতির ইঙ্গিত বহন করে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উন্নতি হচ্ছে বলা যাবে না; আরও এক সপ্তাহ দেখতে হবে।’

এখন ‘ওমিক্রণের বিএ-৫’ সাবভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে আইইডিসিআরের সাবেক এই প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বিএন-৫ কিন্তু ওমিক্রনের আগের যে ভ্যারিয়েন্ট ছিল সেটির চেয়েও ভয়ংকর। এ কারণে মৃত্যু আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদি সংক্রমণ কমে যায় তারপরও মৃত্যু বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২৮ জুন আবারও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরাসহ বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ মেনে চলা বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ওইদিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে ছয়টি নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিককালে সারাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তের হার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে ও জনগণের মধ্যে মাস্ক পরিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে যথেষ্ট শৈথিল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে মর্মে সরকারের উচ্চ মহলে আলোচনা হচ্ছে।’

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির গত ১৪ জুন অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সুপারিশ প্রতিপালনের জন্য এবং কোভিড প্রতিরোধকল্পে নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করা হলো।’ নির্দেশনাগুলো হলোÑ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে সব গণমাধ্যমে অনুরোধ জানাতে হবে। সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম যথাসম্ভব বর্জন করতে হবে।

ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানগুলো (মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। জ্বর, সর্দি, কাশি বা কোডিড ১৯ এর উপসর্গ দেখা দিলে কোভিড টেস্ট করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

অন্যান্য নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে দোকান, শপিংমল, বাজার, ক্রেতা-বিক্রেতা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজে খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন।

এদিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ফের ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠক ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা কক্ষ থেকে মন্ত্রিসভার সদস্যরা ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশ নেবেন। করোনা সংক্রমণ কমে আসায় গত মার্চ থেকে স্বাভাবিক পরিবেশেই মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনাক্ত রোগীর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২৩৩ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ সাত হাজার ৯৯০ জন সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। একদিনে মারা যাওয়া ছয়জনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও তিনজন ছিলেন নারী। এর মধ্যে তিনজন সরকারি এবং তিনজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে তিনজন ঢাকা বিভাগ, দুজন চট্টগ্রাম বিভাগ এবং একজন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

শনাক্ত বেশি ঢাকায়

সর্বশেষ একদিনে শনাক্ত এক হাজার ১০৫ জনের মধ্যে ৮৮৬ জনই মহানগরসহ ঢাকা জেলার বাসিন্দা। ঢাকা ছাড়া এদিন ৩১টি জেলায় কম-বেশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিনও ঢাকায় সাড়ে ১৩শ’ রোগী শনাক্ত হয়েছিল। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

রবিবার, ০৩ জুলাই ২০২২ , ১৯ আষাড় ১৪২৮ ২৩ জিলহজ ১৪৪৩

করোনা : শনাক্ত কমেছে, বেড়েছে মৃত্যু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

টানা চার দিন দুই হাজারের বেশি মানুষের কোভিড শনাক্তের পর একদিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। শনাক্তের হারও সামান্য কমেছে। তবে বেড়েছে মৃত্যু। সম্প্রতি শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে আগামী কয়েকদিনে মৃত্যু আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। তারা বলেন, এখন ওমিক্রনের বিএ-৫ ভ্যারিয়েন্টের (ধরন) সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এটি ওমিক্রণের অন্য সব ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে শনাক্ত কোভিড রোগীর মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে সর্বশেষ একদিনে এর চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল গত ৬ মার্চ; ওইদিন আটজনের মৃত্যু হয়েছিল। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানুষ স্বাস্থ্যবিধি খুব একটা অনুসরণ করছেন না। মাস্ক পরছে না। জনসমাগম হয়-এমন স্থানগুলোতেও মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যাচ্ছে না। এ কারণে আগামী সংক্রমণও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দৈনিক শনাক্ত হাজারের নিচে নেমে আসে। গত ৫ মে মাত্র চারজনের দেহে করোনা শনাক্তের তথ্য দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। শনাক্তের হারও এক শতাংশের কম ছিল। এরপর বেশ কিছুদিন কারো মৃত্যুর খবর দেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে গত জুনের শুরু থেকেই পুনরায় বাড়তে থাকে সংক্রমণ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে বলা হয়, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে এক হাজার ১০৫ জনের দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন শুক্রবার এক হাজার ৮৯৭ জনের দেহে কোভিড শনাক্ত হয়েছিল। তার আগে টানা চার দিন দুই হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওই সময় শনাক্তের হার প্রায় ১৫ শতাংশের মতো ছিল।

সর্বশেষ একদিনে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে কোভিড শনাক্তের হার ছিল ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। এ হিসাবে সংক্রমণ হার সামান্য কমেছে। আর এ পর্যন্ত দেশে মোট কোভিড শনাক্তের হারের ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। একদিনে শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে মোট কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৭ জনে। আর ছয়জনের মৃত্যুতে কোভিডে মোট ২৯ হাজার ১৬০ জনের মৃত্যু হলো।

জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক ডা. মুশতাক হোসেন গতকাল সংবাদকে বলেছেন, ‘মৃত্যু আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। এখন যারা মারা যাচ্ছেন তারা তিন সপ্তাহ আগে আক্রান্ত হয়েছিল। ওই সময় শনাক্ত কিছুটা কম ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে শনাক্ত বেড়েছে শনাক্ত বাড়লে মৃত্যুও বাড়ে এটাই স্বাভাবিক।’

একদিনের ব্যবধানে শনাক্ত ও শনাক্তের হার কিছুটা কমেছে; এটি পরিস্থিতির উন্নতির ইঙ্গিত বহন করে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উন্নতি হচ্ছে বলা যাবে না; আরও এক সপ্তাহ দেখতে হবে।’

এখন ‘ওমিক্রণের বিএ-৫’ সাবভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে আইইডিসিআরের সাবেক এই প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বিএন-৫ কিন্তু ওমিক্রনের আগের যে ভ্যারিয়েন্ট ছিল সেটির চেয়েও ভয়ংকর। এ কারণে মৃত্যু আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদি সংক্রমণ কমে যায় তারপরও মৃত্যু বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২৮ জুন আবারও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক পরাসহ বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ মেনে চলা বাধ্যতামূলক করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ওইদিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে ছয়টি নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিককালে সারাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্তের হার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে ও জনগণের মধ্যে মাস্ক পরিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে যথেষ্ট শৈথিল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে মর্মে সরকারের উচ্চ মহলে আলোচনা হচ্ছে।’

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির গত ১৪ জুন অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত সুপারিশ প্রতিপালনের জন্য এবং কোভিড প্রতিরোধকল্পে নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করা হলো।’ নির্দেশনাগুলো হলোÑ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে সব গণমাধ্যমে অনুরোধ জানাতে হবে। সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম যথাসম্ভব বর্জন করতে হবে।

ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানগুলো (মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। জ্বর, সর্দি, কাশি বা কোডিড ১৯ এর উপসর্গ দেখা দিলে কোভিড টেস্ট করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

অন্যান্য নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে দোকান, শপিংমল, বাজার, ক্রেতা-বিক্রেতা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সব মসজিদে জুমার নামাজে খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন।

এদিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ফের ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠক ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা কক্ষ থেকে মন্ত্রিসভার সদস্যরা ভার্চুয়ালি বৈঠকে অংশ নেবেন। করোনা সংক্রমণ কমে আসায় গত মার্চ থেকে স্বাভাবিক পরিবেশেই মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনাক্ত রোগীর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২৩৩ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ সাত হাজার ৯৯০ জন সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। একদিনে মারা যাওয়া ছয়জনের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও তিনজন ছিলেন নারী। এর মধ্যে তিনজন সরকারি এবং তিনজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে তিনজন ঢাকা বিভাগ, দুজন চট্টগ্রাম বিভাগ এবং একজন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

শনাক্ত বেশি ঢাকায়

সর্বশেষ একদিনে শনাক্ত এক হাজার ১০৫ জনের মধ্যে ৮৮৬ জনই মহানগরসহ ঢাকা জেলার বাসিন্দা। ঢাকা ছাড়া এদিন ৩১টি জেলায় কম-বেশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিনও ঢাকায় সাড়ে ১৩শ’ রোগী শনাক্ত হয়েছিল। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।