দ্বিতীয় দিনেই এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল স্বাভাবিক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) টোল আদায়ের গতকাল দ্বিতীয় দিনেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। প্রথমদিন টোল প্লাজায় বুথের সংখ্যা কম থাকায় টোল আদায়ে বেশ চাপ তৈরি হলে এক্সপ্রেসওয়ের দুই প্রান্তে দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু অকার্যকর বুথগুলো ক্রমান্বয়ে চালু হলে টোল আদায়ে চাপ কমে আসে। সেই সঙ্গে এক্সপ্রেসওয়ের দুই প্রান্তে যানজটও সৃষ্টি হয়নি। আগের দিন দীর্ঘ যানজট থাকলেও গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, গাড়ির চাপ কম থাকায় টোল প্লাজায় দীর্ঘ যানজট নেই। গাড়ি আসছে, টোল দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চলে যাচ্ছে।

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক্সপ্রেসওয়েতে স্থাপিত যেসব বুথ অকার্যকর রয়েছে সেগুলো কার্যকর করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আজ-কালের মধ্যে এই বুথগুলো সক্রিয় হবে। ঈদের আগে সবগুলো বুথ সচল হলে যানবাহনের চাপ বাড়লেও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাত্রীরা যাত্রা করতে পারবেন।

বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের এক প্রান্তে টোল আদায় করা হচ্ছে ভাঙ্গা গোলচত্বরের অদূরে ভাঙ্গা পৌরসভার বগাইল নামক স্থানে। ওই জায়গায় আসা-যাওয়ার দশ লেনে ১০টি টোল বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে টোল আদায়ের প্রথমদিন সচল ছিল মাত্র চারটি বুথ। এতে টোল আদায়ে ধীরগতি দেখা দেয়। যারফলে ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজায় তিন থেকে চার কিলোমিটার দীর্ঘ জট তৈরি হয়। সেদিন অনেকেই অভিযোগ করেন, টোল আদায়ে পর্যাপ্ত বুথের ব্যবস্থা না থাকায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা বেশি সময় ধরে টোল প্লাজায় অপেক্ষা করতে হয়েছে। অন্যদিকে এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় রাতে শুরু হলেও সকাল থেকে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া যানবাহনগুলোকে এক্সপ্রেসওয়ের আরেকপ্রান্ত ধলেশ্বরী টোল প্লাজায়ও কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। এখানেও বেশকিছু টোল বুথ অচল ছিল।

তবে গতকাল এক্সপ্রেসওয়ের উভয় প্রান্তেই আরও বুথ বাড়ানো হলে টোল আদায় স্বাভাবিক হতে দেখা গেছে। বগাইল টোল প্লাজা সূত্র জানায়, বগাইল টোল প্লাজায় চারটি বুথ চালুর মধ্য দিয়ে টোল আদায় শুরু হলেও পরে সেদিনই আরও তিনটি বুথ সচল করা হয়। গতকাল আরও একটি বুথ সক্রিয় করা হলে এখন ৮টি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া বাকি দুটি বুথ সচলে কাজ চলমান রয়েছে। এক দুই দিনের মধ্যে সবগুলো বুথ চালু করা সম্ভব হবে।

ধলেশ্বরী টোল প্লাজা সূত্র জানায়, এখানে স্থাপিত ১০টি টোল বুথই চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুতে যাওয়া যানবাহনের জন্য এবং বাকি ৫টি পদ্মা সেতু থেকে এসে ঢাকা যাওয়া যানবাহনের জন্য।

তবে টোল বুথে সিস্টেমের মাধ্যমে ম্যানুয়ালি টোল নেয়া হচ্ছে। যার কারণে প্রতিটি বুথেই কিছুটা সময় লাগছে টোল নিতে। সেক্ষেত্রে যানবাহনের চাপ বাড়লে যানজট লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন গাড়ি চালকরা। যদিও ধলেশ্বরী টোল প্লাজার টোল ম্যানেজার নূর হোসেন বলেন, ‘গতকাল সকাল থেকে কোন ধরনের যানজট লাগেনি। নতুন একটি বিষয় চালু করতে গেলেই কিছুটা তো সমস্যা হবেই। সামনের দিনে বড় কোন যানজট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই। সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে ৭০ লাখ টাকা টোল আদায়

সড়ক ও জনপথ সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে ( ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) প্রথম দিনে ৬৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৮০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এর মধ্যে যানবাহন পারাপার করেছে মোট ৪১ হাজার ৭১৪টি।

এর মধ্য ধলেশ্বরী সেতুর কাছের টোল প্লাজা দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৬ হাজার ৬৪। টোল আদায় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ২৪০ টাকা। আর ভাঙা দিয়ে যানবাহন পারাপার করেছে ১৫ হাজার ৬৫০টি। টোল আদায় করা হয়েছে ২৪ লাখ ৪ হাজার ৬৪০ টাকা।

এক্সপ্রেসওয়েতে টোল যত দিতে হচ্ছে

৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রেইলারে ১৬৯০ টাকা, হেভি ট্রাক ১১০০ টাকা, মিডিয়ার ট্রাক ৫৫০ টাকা, বড় বাস ৪৯৫ টাকা, মিনি ট্রাক ৪১৫ টাকা, মিনিবাস/কোস্টার ২৭৫ টাকা, মাইক্রোবাস ২২০ টাকা, ফোর হুইল চালিত যানবাহন ২২০ টাকা, সিডান কার ১৪০ টাকা, মোটরসাইকেলের ৩০ টাকা টোল দিতে হচ্ছে। তবে এই ৫৫ কিলোমিটারের মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার টোল নেয়া হচ্ছে ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় এবং মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটারের টোল নেয়া হচ্ছে ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজায়।

রবিবার, ০৩ জুলাই ২০২২ , ১৯ আষাড় ১৪২৮ ২৩ জিলহজ ১৪৪৩

দ্বিতীয় দিনেই এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল স্বাভাবিক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) টোল আদায়ের গতকাল দ্বিতীয় দিনেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। প্রথমদিন টোল প্লাজায় বুথের সংখ্যা কম থাকায় টোল আদায়ে বেশ চাপ তৈরি হলে এক্সপ্রেসওয়ের দুই প্রান্তে দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু অকার্যকর বুথগুলো ক্রমান্বয়ে চালু হলে টোল আদায়ে চাপ কমে আসে। সেই সঙ্গে এক্সপ্রেসওয়ের দুই প্রান্তে যানজটও সৃষ্টি হয়নি। আগের দিন দীর্ঘ যানজট থাকলেও গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, গাড়ির চাপ কম থাকায় টোল প্লাজায় দীর্ঘ যানজট নেই। গাড়ি আসছে, টোল দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চলে যাচ্ছে।

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক্সপ্রেসওয়েতে স্থাপিত যেসব বুথ অকার্যকর রয়েছে সেগুলো কার্যকর করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আজ-কালের মধ্যে এই বুথগুলো সক্রিয় হবে। ঈদের আগে সবগুলো বুথ সচল হলে যানবাহনের চাপ বাড়লেও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাত্রীরা যাত্রা করতে পারবেন।

বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের এক প্রান্তে টোল আদায় করা হচ্ছে ভাঙ্গা গোলচত্বরের অদূরে ভাঙ্গা পৌরসভার বগাইল নামক স্থানে। ওই জায়গায় আসা-যাওয়ার দশ লেনে ১০টি টোল বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে টোল আদায়ের প্রথমদিন সচল ছিল মাত্র চারটি বুথ। এতে টোল আদায়ে ধীরগতি দেখা দেয়। যারফলে ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজায় তিন থেকে চার কিলোমিটার দীর্ঘ জট তৈরি হয়। সেদিন অনেকেই অভিযোগ করেন, টোল আদায়ে পর্যাপ্ত বুথের ব্যবস্থা না থাকায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা বেশি সময় ধরে টোল প্লাজায় অপেক্ষা করতে হয়েছে। অন্যদিকে এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় রাতে শুরু হলেও সকাল থেকে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া যানবাহনগুলোকে এক্সপ্রেসওয়ের আরেকপ্রান্ত ধলেশ্বরী টোল প্লাজায়ও কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। এখানেও বেশকিছু টোল বুথ অচল ছিল।

তবে গতকাল এক্সপ্রেসওয়ের উভয় প্রান্তেই আরও বুথ বাড়ানো হলে টোল আদায় স্বাভাবিক হতে দেখা গেছে। বগাইল টোল প্লাজা সূত্র জানায়, বগাইল টোল প্লাজায় চারটি বুথ চালুর মধ্য দিয়ে টোল আদায় শুরু হলেও পরে সেদিনই আরও তিনটি বুথ সচল করা হয়। গতকাল আরও একটি বুথ সক্রিয় করা হলে এখন ৮টি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া বাকি দুটি বুথ সচলে কাজ চলমান রয়েছে। এক দুই দিনের মধ্যে সবগুলো বুথ চালু করা সম্ভব হবে।

ধলেশ্বরী টোল প্লাজা সূত্র জানায়, এখানে স্থাপিত ১০টি টোল বুথই চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুতে যাওয়া যানবাহনের জন্য এবং বাকি ৫টি পদ্মা সেতু থেকে এসে ঢাকা যাওয়া যানবাহনের জন্য।

তবে টোল বুথে সিস্টেমের মাধ্যমে ম্যানুয়ালি টোল নেয়া হচ্ছে। যার কারণে প্রতিটি বুথেই কিছুটা সময় লাগছে টোল নিতে। সেক্ষেত্রে যানবাহনের চাপ বাড়লে যানজট লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন গাড়ি চালকরা। যদিও ধলেশ্বরী টোল প্লাজার টোল ম্যানেজার নূর হোসেন বলেন, ‘গতকাল সকাল থেকে কোন ধরনের যানজট লাগেনি। নতুন একটি বিষয় চালু করতে গেলেই কিছুটা তো সমস্যা হবেই। সামনের দিনে বড় কোন যানজট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই। সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে ৭০ লাখ টাকা টোল আদায়

সড়ক ও জনপথ সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে ( ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) প্রথম দিনে ৬৯ লাখ ৮১ হাজার ৮৮০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এর মধ্যে যানবাহন পারাপার করেছে মোট ৪১ হাজার ৭১৪টি।

এর মধ্য ধলেশ্বরী সেতুর কাছের টোল প্লাজা দিয়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৬ হাজার ৬৪। টোল আদায় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ২৪০ টাকা। আর ভাঙা দিয়ে যানবাহন পারাপার করেছে ১৫ হাজার ৬৫০টি। টোল আদায় করা হয়েছে ২৪ লাখ ৪ হাজার ৬৪০ টাকা।

এক্সপ্রেসওয়েতে টোল যত দিতে হচ্ছে

৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে ট্রেইলারে ১৬৯০ টাকা, হেভি ট্রাক ১১০০ টাকা, মিডিয়ার ট্রাক ৫৫০ টাকা, বড় বাস ৪৯৫ টাকা, মিনি ট্রাক ৪১৫ টাকা, মিনিবাস/কোস্টার ২৭৫ টাকা, মাইক্রোবাস ২২০ টাকা, ফোর হুইল চালিত যানবাহন ২২০ টাকা, সিডান কার ১৪০ টাকা, মোটরসাইকেলের ৩০ টাকা টোল দিতে হচ্ছে। তবে এই ৫৫ কিলোমিটারের মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার টোল নেয়া হচ্ছে ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় এবং মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটারের টোল নেয়া হচ্ছে ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজায়।