সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে শিক্ষক হত্যা ও নির্যাতন

শিক্ষক হত্যা ও শিক্ষক নির্যাতন এখন একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। সারাদেশে শিক্ষক নির্যাতনের মহড়া চলছে। শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মান পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং শতভাগ উৎসব ভাতাসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি না মানলে সারাদেশের বিক্ষুব্ধ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা ঢাকায় মহাসমাবেশসহ কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি আয়োজিত শিক্ষক হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদানসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ, ঈদুল আজহার আগে পূর্ণাঙ্গ বোনাসসহ শিক্ষকদের অধিকারবিষয়ক ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ জানিয়ে এই শিক্ষক নেতা আরও বলেন, শিক্ষক হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারের পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা না গেলে জাতিকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। শিক্ষক হত্যা ও নির্যাতনকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করে। দাবিগুলো হলোÑ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা। আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান। পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রথা চালু করা এবং পেনশন প্রথা চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদান এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা। স্বীকৃতি প্রাপ্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ‘প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক’ এর বেতন স্কেল যথাক্রমে ৬ষ্ঠ ও ৭ম গ্রেডে প্রদান। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি প্রথা চালু করা। শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করা। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা এবং শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা সহায়ক ডিভাইস প্রদান। ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সব বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষানীতি-২০১০ দ্রুত বাস্তবায়ন করা।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টাম-লীর অন্যতম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম, সহসভাপতি আলী আসগর হাওলাদার ও বেগম নূরুন্নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মো. সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, সহ-মহিলাবিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগম, সহদপ্তর সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য প্রবীর রঞ্জন দাস, আজম আলী খানসহ প্রমুখ।

রবিবার, ০৩ জুলাই ২০২২ , ১৯ আষাড় ১৪২৮ ২৩ জিলহজ ১৪৪৩

সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে শিক্ষক হত্যা ও নির্যাতন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

সিরাজগঞ্জ : শিক্ষক হত্যা ও অবমাননার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ -সংবাদ

শিক্ষক হত্যা ও শিক্ষক নির্যাতন এখন একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। সারাদেশে শিক্ষক নির্যাতনের মহড়া চলছে। শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মান পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং শতভাগ উৎসব ভাতাসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি না মানলে সারাদেশের বিক্ষুব্ধ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা ঢাকায় মহাসমাবেশসহ কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি আয়োজিত শিক্ষক হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদানসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ, ঈদুল আজহার আগে পূর্ণাঙ্গ বোনাসসহ শিক্ষকদের অধিকারবিষয়ক ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ জানিয়ে এই শিক্ষক নেতা আরও বলেন, শিক্ষক হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারের পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা না গেলে জাতিকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। শিক্ষক হত্যা ও নির্যাতনকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করে। দাবিগুলো হলোÑ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা। আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান। পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রথা চালু করা এবং পেনশন প্রথা চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা প্রদান এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা। স্বীকৃতি প্রাপ্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ‘প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক’ এর বেতন স্কেল যথাক্রমে ৬ষ্ঠ ও ৭ম গ্রেডে প্রদান। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি প্রথা চালু করা। শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করা। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা এবং শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা সহায়ক ডিভাইস প্রদান। ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সব বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষানীতি-২০১০ দ্রুত বাস্তবায়ন করা।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টাম-লীর অন্যতম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম, সহসভাপতি আলী আসগর হাওলাদার ও বেগম নূরুন্নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মো. সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, সহ-মহিলাবিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগম, সহদপ্তর সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সদস্য প্রবীর রঞ্জন দাস, আজম আলী খানসহ প্রমুখ।