মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে অবৈধভাবে গরুর হাট বসানো হয়েছে। এতে স্থানীয় তরুণদের খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। তবে পশুর হাট আয়োজনকারী স্থানীয় পৌর মেয়রের দাবী এখানে কোন স্টেডিয়াম নেই। এটা দীর্ঘদিনের গরুর হাট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সংশ্লিøষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের চর ঠেঙ্গামারা এলাকায় নদীর পাড়ের বিশাল অংশ জুড়ে মাঠ ছিল। এই মাঠে ২০১৭ সালে ১৭ ডিসেম্বর তৎকালীন স্থানী সংসদ সদস্য আফম বাহাউদ্দিন নাছিম স্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরে এই মাঠটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে নামকরণ করে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছে। পাশেই পাকা ঘর, শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। সেই মাঠেই কালকিনি পৌরসভার আয়োজনে গরুর হাট বসানো হয়েছে। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম মোল্লা বলেন,‘এই মাঠে প্রতিদিন বিকেলে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা খেলাধুলা করে। বড় খেলার আয়োজনও করা হয় মাঝে মধ্যে।’
কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই মাঠটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে শেখ রাসেলের নামে। এখানে গরুর হাট না বসিয়ে অন্য কোথাও বসানো উচিত ছিলো। কিন্তু পৌরসভার মেয়র তার ক্ষমতাবলে এই কাজ করেছে। কাজটি ঠিক করেননি। আমরা চাই গরুর হাটটি অপসারণ করা হোক।
সরেজমিন দেখা গেছে, কালকিনি পৌরসভার চর ঠেঙ্গামারা এলাকায় নির্মিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম জুড়ে বাঁেশর বেড়া দিয়ে গরুর হাট তৈরি করা হয়েছে। বাঁশের বেড়ার সাথে বিক্রির জন্য গরু বেঁধে রাখা হয়েছে।
মাদারীপুর জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. বকতিয়ার রহমান গাজী বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলাতেই শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম রয়েছে। কালকিনিতেও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম আছে। গরুর হাট বসানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি স্টেডিয়ামে কেউ হাট বসাতে চায় তাইলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের অনুমতি নিতে হবে। কালকিনি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে গরুর হাট বসাতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের অনুমতি দিয়েছে বলে আমার জানা নেই।’ তবে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বিষয়টা ভালো জানেন বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি পিংকী সাহা বলেন, ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম তো আমাদের মাঠ। ওখানে গরুর হাটের অনুমতি দেয়া হয়নি। আমরা কালকিনিতে ১৫টি হাটের অনুমতি দিয়েছি।
সেই তালিকায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নেই। আমি মাঠটি পরিদর্শন করে দেখবো।’ তবে ভিন্ন কথা বললেন কালকিনি পৌর মেয়র এসএম হানিফ। তিনি বলেন, পৌরসভা থেকে গরুর হাটের জন্য একটি জমি অধিগ্রহণ করা। এটা দীর্ঘ দিনে গরুর হাট। সেই জমিতে শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের নামে কারা যেন একটি ভবন নির্মাণ করেছে। কারা এই ঘর করেছে, কাদের কাছে ঘর হস্তান্তর করেছে জানি না।
এই গরুর হাটকে স্টেডিয়ামে রুপান্তর করেছে এমন কোন কাগজপত্রও আমরা পাইনি। স্টেডিয়ামের কোন কার্যক্রমও নেই বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, স্টেডিয়াম হলে তো মেয়র হিসেবে আমি জানবো। আমি জানি না। তৎকালীন সংসদ সদস্য স্থানীয়দের দাবী পরিপ্রেক্ষিতে স্টেডিয়ামের একটি ঘোষণা দিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এখনও হয়নি।
এই বিষয়ে কালকিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিক বলেন, ‘চর ঠেংগামারা এলাকার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে।
তবে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে কারা এবং কিভাবে গরুর হাট বসানো হয়েছে? বিষয়টি আমার জানা নেই।
সোমবার, ০৪ জুলাই ২০২২ , ২০ আষাড় ১৪২৮ ২৪ জিলহজ ১৪৪৩
প্রতিনিধি, মাদারীপুর
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে অবৈধভাবে গরুর হাট বসানো হয়েছে। এতে স্থানীয় তরুণদের খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। তবে পশুর হাট আয়োজনকারী স্থানীয় পৌর মেয়রের দাবী এখানে কোন স্টেডিয়াম নেই। এটা দীর্ঘদিনের গরুর হাট হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সংশ্লিøষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের চর ঠেঙ্গামারা এলাকায় নদীর পাড়ের বিশাল অংশ জুড়ে মাঠ ছিল। এই মাঠে ২০১৭ সালে ১৭ ডিসেম্বর তৎকালীন স্থানী সংসদ সদস্য আফম বাহাউদ্দিন নাছিম স্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। পরে এই মাঠটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে নামকরণ করে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছে। পাশেই পাকা ঘর, শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। সেই মাঠেই কালকিনি পৌরসভার আয়োজনে গরুর হাট বসানো হয়েছে। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম মোল্লা বলেন,‘এই মাঠে প্রতিদিন বিকেলে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা খেলাধুলা করে। বড় খেলার আয়োজনও করা হয় মাঝে মধ্যে।’
কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই মাঠটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে শেখ রাসেলের নামে। এখানে গরুর হাট না বসিয়ে অন্য কোথাও বসানো উচিত ছিলো। কিন্তু পৌরসভার মেয়র তার ক্ষমতাবলে এই কাজ করেছে। কাজটি ঠিক করেননি। আমরা চাই গরুর হাটটি অপসারণ করা হোক।
সরেজমিন দেখা গেছে, কালকিনি পৌরসভার চর ঠেঙ্গামারা এলাকায় নির্মিত শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম জুড়ে বাঁেশর বেড়া দিয়ে গরুর হাট তৈরি করা হয়েছে। বাঁশের বেড়ার সাথে বিক্রির জন্য গরু বেঁধে রাখা হয়েছে।
মাদারীপুর জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. বকতিয়ার রহমান গাজী বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলাতেই শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম রয়েছে। কালকিনিতেও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম আছে। গরুর হাট বসানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি স্টেডিয়ামে কেউ হাট বসাতে চায় তাইলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের অনুমতি নিতে হবে। কালকিনি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে গরুর হাট বসাতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের অনুমতি দিয়েছে বলে আমার জানা নেই।’ তবে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বিষয়টা ভালো জানেন বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি পিংকী সাহা বলেন, ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম তো আমাদের মাঠ। ওখানে গরুর হাটের অনুমতি দেয়া হয়নি। আমরা কালকিনিতে ১৫টি হাটের অনুমতি দিয়েছি।
সেই তালিকায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নেই। আমি মাঠটি পরিদর্শন করে দেখবো।’ তবে ভিন্ন কথা বললেন কালকিনি পৌর মেয়র এসএম হানিফ। তিনি বলেন, পৌরসভা থেকে গরুর হাটের জন্য একটি জমি অধিগ্রহণ করা। এটা দীর্ঘ দিনে গরুর হাট। সেই জমিতে শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের নামে কারা যেন একটি ভবন নির্মাণ করেছে। কারা এই ঘর করেছে, কাদের কাছে ঘর হস্তান্তর করেছে জানি না।
এই গরুর হাটকে স্টেডিয়ামে রুপান্তর করেছে এমন কোন কাগজপত্রও আমরা পাইনি। স্টেডিয়ামের কোন কার্যক্রমও নেই বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, স্টেডিয়াম হলে তো মেয়র হিসেবে আমি জানবো। আমি জানি না। তৎকালীন সংসদ সদস্য স্থানীয়দের দাবী পরিপ্রেক্ষিতে স্টেডিয়ামের একটি ঘোষণা দিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এখনও হয়নি।
এই বিষয়ে কালকিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিক বলেন, ‘চর ঠেংগামারা এলাকার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে।
তবে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে কারা এবং কিভাবে গরুর হাট বসানো হয়েছে? বিষয়টি আমার জানা নেই।