যানজটের লাগাম টানতে রাজধানীতে দ্রুত সার্কুলার রোড করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি ঢাকায় কারওয়ান বাজারের মতো বড় পরিসরের আরও চারটি বাজার করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর ঢাকা মহানগরীর ভেতরের কাঁচা বাজারগুলো সরিয়ে ঢাকার প্রান্ত এলাকা কাঁচপুর, আমিন বাজার, কেরানীগঞ্জসহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় অংশ নেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষ থেকে যুক্ত ছিলেন।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সর্বক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সুশাসন থাকায় পদ্মা সেতুর মতো একটি বিশাল ও জটিল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।’
সুশাসন এবং প্রশাসনিকভাবে কঠোর নজরদারির জন্য পদ্মা সেতু সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘এজন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
পদ্মা সেতু হওয়ায় ‘স্বাভাবিকভাবেই’ রাজধানীতে গাড়ি চলাচল বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ চাপ কমিয়ে রাজধানীর বাইরে দিয়ে বিকল্প সার্কুলার রোড করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাতে দূরপাল্লার যানবাহনগুলোকে শহরের ভেতরে ঢুকতে না হয়।’
পদ্মায় সেতু নির্মাণ ঐতিহাসিক ঘটনা
বিশে^র অন্যতম খরস্রোতা নদী পদ্মা। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে এই নদীতে সেতু নির্মাণকে ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় আরও বলেন, ‘এই প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতু তৈরি করাটাই একটি ইতিহাস। সেক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী এবং সচিব যারা ছিলেন, অর্থ বরাদ্দে এতটুকু কার্পণ্য করেননি বরং কীভাবে আমরা নিজেদের টাকায় করতে পারি, সে জিনিসটি আরও সহজ করে দিয়েছেন।’
সেতু নির্মাণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ মন্ত্রিপরিষদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১২ সাল থেকেই তো এই যুদ্ধ শুরু। কত অপবাদ, ষড়যন্ত্র এর জন্য মোকাবিলা করতে হয়েছে। সবথেকে দুঃখজনক যে আরও আগে সেতুর কাজ শুরু করা গেলে আরও আগেই শেষ করা সম্ভব হতো। আরেকটি বিষয় আমার কাছে অবাক লাগে, আমাদের কিছু অর্থনীতিবিদ এবং জ্ঞানী-গুণীরা যে বলেছিল, এটা ভায়াবল হবে না, কে এখান থেকে চলবে, কোন টাকা উঠবে না। কিন্তু এখন কী দেখা যাচ্ছে?’
সেতু নির্মাণের প্রথম দিকে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না এবং এরপরই ঘোষণা দিলাম, নিজের টাকাতেই পদ্মা সেতু করব, অন্যের টাকা নেব না।’
বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু তৈরির আগে প্রতিবছর উত্তরবঙ্গে মঙ্গা দেখা দিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অথচ এই একটি সেতু নির্মাণের পর সেখানের মঙ্গা আর নেই।’
পদ্মা সেতু হওয়ায় মানুষের জীবন ও জীবিকার আমূল পরিবর্তন আসবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেখানে পদ্মা সেতুর দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সাপ্লাই চেইন স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমকা পালন করবে। ইলিশের মওসুম এসে যাওয়ায় রাজধানীতে বসেই তাজা ইলিশ প্রাপ্তিও সম্ভব হবে। অন্যদিকে জেলেরাও লাভবান হবে।’
সোমবার, ০৪ জুলাই ২০২২ , ২০ আষাড় ১৪২৮ ২৪ জিলহজ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
যানজটের লাগাম টানতে রাজধানীতে দ্রুত সার্কুলার রোড করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি ঢাকায় কারওয়ান বাজারের মতো বড় পরিসরের আরও চারটি বাজার করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর ঢাকা মহানগরীর ভেতরের কাঁচা বাজারগুলো সরিয়ে ঢাকার প্রান্ত এলাকা কাঁচপুর, আমিন বাজার, কেরানীগঞ্জসহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় অংশ নেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষ থেকে যুক্ত ছিলেন।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সর্বক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সুশাসন থাকায় পদ্মা সেতুর মতো একটি বিশাল ও জটিল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।’
সুশাসন এবং প্রশাসনিকভাবে কঠোর নজরদারির জন্য পদ্মা সেতু সফলভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘এজন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
পদ্মা সেতু হওয়ায় ‘স্বাভাবিকভাবেই’ রাজধানীতে গাড়ি চলাচল বেড়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ চাপ কমিয়ে রাজধানীর বাইরে দিয়ে বিকল্প সার্কুলার রোড করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাতে দূরপাল্লার যানবাহনগুলোকে শহরের ভেতরে ঢুকতে না হয়।’
পদ্মায় সেতু নির্মাণ ঐতিহাসিক ঘটনা
বিশে^র অন্যতম খরস্রোতা নদী পদ্মা। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে এই নদীতে সেতু নির্মাণকে ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় আরও বলেন, ‘এই প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতু তৈরি করাটাই একটি ইতিহাস। সেক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী এবং সচিব যারা ছিলেন, অর্থ বরাদ্দে এতটুকু কার্পণ্য করেননি বরং কীভাবে আমরা নিজেদের টাকায় করতে পারি, সে জিনিসটি আরও সহজ করে দিয়েছেন।’
সেতু নির্মাণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ মন্ত্রিপরিষদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১২ সাল থেকেই তো এই যুদ্ধ শুরু। কত অপবাদ, ষড়যন্ত্র এর জন্য মোকাবিলা করতে হয়েছে। সবথেকে দুঃখজনক যে আরও আগে সেতুর কাজ শুরু করা গেলে আরও আগেই শেষ করা সম্ভব হতো। আরেকটি বিষয় আমার কাছে অবাক লাগে, আমাদের কিছু অর্থনীতিবিদ এবং জ্ঞানী-গুণীরা যে বলেছিল, এটা ভায়াবল হবে না, কে এখান থেকে চলবে, কোন টাকা উঠবে না। কিন্তু এখন কী দেখা যাচ্ছে?’
সেতু নির্মাণের প্রথম দিকে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না এবং এরপরই ঘোষণা দিলাম, নিজের টাকাতেই পদ্মা সেতু করব, অন্যের টাকা নেব না।’
বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু তৈরির আগে প্রতিবছর উত্তরবঙ্গে মঙ্গা দেখা দিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অথচ এই একটি সেতু নির্মাণের পর সেখানের মঙ্গা আর নেই।’
পদ্মা সেতু হওয়ায় মানুষের জীবন ও জীবিকার আমূল পরিবর্তন আসবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেখানে পদ্মা সেতুর দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সাপ্লাই চেইন স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমকা পালন করবে। ইলিশের মওসুম এসে যাওয়ায় রাজধানীতে বসেই তাজা ইলিশ প্রাপ্তিও সম্ভব হবে। অন্যদিকে জেলেরাও লাভবান হবে।’