টাইফয়েড রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া হচ্ছে সালমোনেলা টাইফি। এই ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে বলে জানা গেছে। ল্যানসেট মাইক্রোব সাময়িকীতে প্রকাশিত ‘দি ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ইন্টারকন্টিনেন্টাল স্প্রেড অ্যান্ড এক্সপ্যানশন অব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স স্যালমোনেলা টাইফি : অ্যা জিনোমিক এপিডেমিওলজি স্টাডি শীর্ষক এক গবেষণা থেকে জানা গেছে এ তথ্য। গবেষণায় দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালে সালমোনেলা টাইফির নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
কেবল টাইফয়েড রোগেরই নয়, এর আগে অন্যান্য অনেক রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। দেশে শ্বাসতন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ, মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ, ত্বকের সংক্রমণ, কানের রোগ, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়াজনিত রোগ, যক্ষ্মা, গনোরিয়া, সিফিলিসের চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সরকারের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা, ওষুধ প্রশাসন, আইসিডিডিআরবি, গ্লোবাল অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স ও দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ ডিনামিক্স, ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিসির দেয়া যৌথ প্রতিবেদনে বিষয়টি এর আগে প্রকাশ পেয়েছে।
এছাড়া আইসিডিডিআর,বি ও ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটাল (এমজিএইচ) পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, দেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অনেক শিশুর মধ্যে রোগজীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। এ কারণে অনেক শিশু অকালে মারা যাচ্ছে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. হ্যারিস বলেছিলেন, করোনা মহামারীকে যদি জলোচ্ছ্বাস হিসেবে ধরা হয় তবে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সমস্যাকে বলতে হবে বন্যা।
বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘকাল ধরেই আশঙ্কা করছেন যে, ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে উঠলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বড় বিপরর্যেয় ঘটবে। কোন কোন বিশেষজ্ঞ বলছেন, এ সমস্যা ইতোমধ্যে গুরুতর আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সতর্ক না হলে, মানুষ সচেতন না হলেÑ করোনা মহামারীর চেয়েও ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়তে হতে পারে।
যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। অনেক রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের কোর্স সম্পন্ন করেন না। অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের নিয়ম চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যথার্থভাবে না মানা হলে সংশ্লিষ্ট রোগীর শরীরে কোনো কোন অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। যেসব রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার জরুরি সেসব ক্ষেত্রে যেন নিয়ম ও মাত্রা মেনে ওষুধ গ্রহণ করা হয় সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
দেশের একশ্রেণির ওষুধ বিক্রেতার বিরুদ্ধে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এই বিপজ্জনক প্রবণতা বন্ধ করার কথা বলা হলেও সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি। প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক যেন বিক্রি করা না হয় তা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার, ০৪ জুলাই ২০২২ , ২০ আষাড় ১৪২৮ ২৪ জিলহজ ১৪৪৩
টাইফয়েড রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া হচ্ছে সালমোনেলা টাইফি। এই ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে বলে জানা গেছে। ল্যানসেট মাইক্রোব সাময়িকীতে প্রকাশিত ‘দি ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ইন্টারকন্টিনেন্টাল স্প্রেড অ্যান্ড এক্সপ্যানশন অব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স স্যালমোনেলা টাইফি : অ্যা জিনোমিক এপিডেমিওলজি স্টাডি শীর্ষক এক গবেষণা থেকে জানা গেছে এ তথ্য। গবেষণায় দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালে সালমোনেলা টাইফির নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
কেবল টাইফয়েড রোগেরই নয়, এর আগে অন্যান্য অনেক রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে। দেশে শ্বাসতন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ, মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ, ত্বকের সংক্রমণ, কানের রোগ, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়াজনিত রোগ, যক্ষ্মা, গনোরিয়া, সিফিলিসের চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সরকারের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা, ওষুধ প্রশাসন, আইসিডিডিআরবি, গ্লোবাল অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স ও দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ ডিনামিক্স, ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিসির দেয়া যৌথ প্রতিবেদনে বিষয়টি এর আগে প্রকাশ পেয়েছে।
এছাড়া আইসিডিডিআর,বি ও ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটাল (এমজিএইচ) পরিচালিত একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, দেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অনেক শিশুর মধ্যে রোগজীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। এ কারণে অনেক শিশু অকালে মারা যাচ্ছে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. হ্যারিস বলেছিলেন, করোনা মহামারীকে যদি জলোচ্ছ্বাস হিসেবে ধরা হয় তবে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সমস্যাকে বলতে হবে বন্যা।
বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘকাল ধরেই আশঙ্কা করছেন যে, ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে উঠলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বড় বিপরর্যেয় ঘটবে। কোন কোন বিশেষজ্ঞ বলছেন, এ সমস্যা ইতোমধ্যে গুরুতর আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সতর্ক না হলে, মানুষ সচেতন না হলেÑ করোনা মহামারীর চেয়েও ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়তে হতে পারে।
যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। অনেক রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের কোর্স সম্পন্ন করেন না। অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের নিয়ম চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যথার্থভাবে না মানা হলে সংশ্লিষ্ট রোগীর শরীরে কোনো কোন অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। যেসব রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার জরুরি সেসব ক্ষেত্রে যেন নিয়ম ও মাত্রা মেনে ওষুধ গ্রহণ করা হয় সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
দেশের একশ্রেণির ওষুধ বিক্রেতার বিরুদ্ধে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। এই বিপজ্জনক প্রবণতা বন্ধ করার কথা বলা হলেও সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি। প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক যেন বিক্রি করা না হয় তা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে।