সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সব মহাসড়কে ঈদের সময় মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। এছাড়া পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের একদিন পর থেকে সেতুতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করে সেতু কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে মোটরসাইকেলের পক্ষে ও বিপক্ষে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু বছর দশক আগেও সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেলের তেমন চাহিদা ছিল না। ২০১০ সাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীতে নিবন্ধনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৮৭৯টি। বর্তমানে ঢাকায় নিবন্ধকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৯ লাখ ৬১ হাজার ২২১টি। ঢাকাসহ সারাদেশে মোটরসাইকেলের সংখ্যা প্রায় অর্ধ কোটি বলে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্রে জানা গেছে।
২০১৬-১৭ সালে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে রাইড শেয়ারিং মাধ্যমে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হলে বেড়ে যায় এর চাহিদা। ঢাকার শহরে যানজটের মধ্যে সহজে চলাচলের জন্য মোটরবাইকে ব্যবহার করে। তাই টাকা আয়ের পথ হিসেবে অনেকেই রাইড শেয়ারিং মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। রাইড শেয়ারিংয়ের কারণে মোটরসাইকেল আর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এখন মোটরসাইকেল শুধু সড়ক ও মহাসড়ক নয় পল্লী অঞ্চলের মাটির সড়কও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অনেক এলাকায় সরকারি নিবন্ধন ছাড়াই চলছে এসব মোটরবাইক। তাই সড়ক দুর্ঘটনাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন থেকে চার বছরের মধ্যে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ অপ্রাপ্ত বয়সের কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান সংবাদকে বলেন, ‘গত জুন মাসেও ৪২ দশমিক ১৮ শতাংশ দুর্ঘটনা হয়েছে মোটরসাইকেলে। কারণ সড়ক ও মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এসব মোটরসাইকেল বেশিরভাগ চালক হলো কিশোর ও যুবক। তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণও থাকে না। এছাড়া মোটরসাইকেল আমদানির করা শর্ত শিথিল করার কারণে যত্রতত্র মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি নিবন্ধনও করা হয়। এসব মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করার কারণে দুর্ঘটনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।’ শুধু ঈদের সময় নয় সব সময় সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর কঠোর নজরদারীর পরামর্শ দেন তিনি।
জুনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়
নিহত ২০৪ জন
গত জুন মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৬৭টি। নিহত ৫২৪ জন এবং আহত ৮২১ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৮, শিশু ৭৩। এর মধ্যে ১৯৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২০৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় ১০৭ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৮৬ জন, অর্থাৎ ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। এই সময়ে ৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, ১৬ জন আহত হয়েছে এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। ১৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। গতকাল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে সংগঠনটি।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ :
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ২. বেপরোয়া গতি; ৩. চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; ৪. বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; ৬. তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; ৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; ৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; ১০. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। সুপারিশসমূহ :
১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; ২. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; ৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে; ৬. পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; ৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; ৮. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; ৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; ১০. ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঈদের সাত দিন মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ
অনুমোদিত এলাকার বাইরে মোটরসাইকেল রাইড-শেয়ারিং করা যাবে না এবং ঈদুল আজহার আগের তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের তিন দিন সারাদেশের মহাসড়কে যৌক্তিক কারণ ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। পাশাপাশি এক জেলায় রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেল অন্য জেলায় চালানো যাবে না। তবে যৌক্তিক ও অনিবার্য প্রয়োজনে পুলিশের অনুমতি নিয়ে মোটরসাইকেল চালানো যাবে। গত রোববার সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদ যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় জানানো হয়, ঈদের সময় নিত্যপণ্য, কাঁচামাল, ওষুধ, জ্বালানি তেল, গার্মেন্টস সামগ্রী, রপ্তানি পণ্য, পচনশীল দ্রব্য, পশুবাহী ট্রাক ছাড়া ভারী পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান এবং লরি ঈদের আগের তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের তিন দিন সারাদেশের মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ। এ নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এর আগে গত ৪ জুন মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সড়কে নতুন উপদ্রব মোটরসাইকেল। ইদানীং তরুণ তুর্কিরা যেভাবে উন্মাদ অবস্থায় সড়কে মোটরসাইকেল চালায় তা দুর্ভাগ্যজনক। তারা আইন মানে না, মাথায় হেলমেট পরে না। ঢাকা শহরে অবশ্য অনেক পীড়াপীড়ি করে পরিবর্তন করা গেছে। এই শহরে এখন ৯৫ শতাংশ চালক ও আরোহী হেলমেট ব্যবহার করে। এটার জন্য পুলিশ প্রশাসনের অবদান আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বলেছেন, যারা নিয়ম মানবে না, তাদের তেল দেয়া হবে না। সব পেট্রল পাম্পকে বলে দিয়েছে। আমার মনে হয় বিষয়টি ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে দেয়া উচিত। আমি রাজনৈতিক ব্যক্তি। আমি দেখি রাস্তায় ঝাঁকে-ঝাঁকে মোটরসাইকেল আরোহী ছোটাছুটি করে এবং চালকরা নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করে না। তারা হেলমেটও পরে না। এটি ঢাকা শহরের অধিকাংশ চালক মানে। কিন্তু রাজনীতির নতুন কর্মীরা আইনকে ডোন্ট কেয়ার করে, তারা মানতে চায় না। এ বিষয়ে অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকা উচিত।’
মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই ২০২২ , ২১ আষাড় ১৪২৮ ২৫ জিলহজ ১৪৪৩
ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সব মহাসড়কে ঈদের সময় মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। এছাড়া পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের একদিন পর থেকে সেতুতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করে সেতু কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে মোটরসাইকেলের পক্ষে ও বিপক্ষে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু বছর দশক আগেও সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেলের তেমন চাহিদা ছিল না। ২০১০ সাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীতে নিবন্ধনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১০ হাজার ৮৭৯টি। বর্তমানে ঢাকায় নিবন্ধকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৯ লাখ ৬১ হাজার ২২১টি। ঢাকাসহ সারাদেশে মোটরসাইকেলের সংখ্যা প্রায় অর্ধ কোটি বলে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্রে জানা গেছে।
২০১৬-১৭ সালে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে রাইড শেয়ারিং মাধ্যমে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হলে বেড়ে যায় এর চাহিদা। ঢাকার শহরে যানজটের মধ্যে সহজে চলাচলের জন্য মোটরবাইকে ব্যবহার করে। তাই টাকা আয়ের পথ হিসেবে অনেকেই রাইড শেয়ারিং মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। রাইড শেয়ারিংয়ের কারণে মোটরসাইকেল আর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এখন মোটরসাইকেল শুধু সড়ক ও মহাসড়ক নয় পল্লী অঞ্চলের মাটির সড়কও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অনেক এলাকায় সরকারি নিবন্ধন ছাড়াই চলছে এসব মোটরবাইক। তাই সড়ক দুর্ঘটনাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন থেকে চার বছরের মধ্যে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ অপ্রাপ্ত বয়সের কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান সংবাদকে বলেন, ‘গত জুন মাসেও ৪২ দশমিক ১৮ শতাংশ দুর্ঘটনা হয়েছে মোটরসাইকেলে। কারণ সড়ক ও মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এসব মোটরসাইকেল বেশিরভাগ চালক হলো কিশোর ও যুবক। তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণও থাকে না। এছাড়া মোটরসাইকেল আমদানির করা শর্ত শিথিল করার কারণে যত্রতত্র মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি নিবন্ধনও করা হয়। এসব মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করার কারণে দুর্ঘটনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।’ শুধু ঈদের সময় নয় সব সময় সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর কঠোর নজরদারীর পরামর্শ দেন তিনি।
জুনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়
নিহত ২০৪ জন
গত জুন মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৬৭টি। নিহত ৫২৪ জন এবং আহত ৮২১ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৮, শিশু ৭৩। এর মধ্যে ১৯৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২০৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২ দশমিক ১৮ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় ১০৭ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৮৬ জন, অর্থাৎ ১৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। এই সময়ে ৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, ১৬ জন আহত হয়েছে এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। ১৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। গতকাল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে সংগঠনটি।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ :
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ২. বেপরোয়া গতি; ৩. চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; ৪. বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; ৬. তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; ৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; ৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; ১০. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। সুপারিশসমূহ :
১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; ২. চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; ৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে; ৬. পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; ৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; ৮. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; ৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; ১০. ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঈদের সাত দিন মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ
অনুমোদিত এলাকার বাইরে মোটরসাইকেল রাইড-শেয়ারিং করা যাবে না এবং ঈদুল আজহার আগের তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের তিন দিন সারাদেশের মহাসড়কে যৌক্তিক কারণ ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। পাশাপাশি এক জেলায় রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেল অন্য জেলায় চালানো যাবে না। তবে যৌক্তিক ও অনিবার্য প্রয়োজনে পুলিশের অনুমতি নিয়ে মোটরসাইকেল চালানো যাবে। গত রোববার সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদ যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় জানানো হয়, ঈদের সময় নিত্যপণ্য, কাঁচামাল, ওষুধ, জ্বালানি তেল, গার্মেন্টস সামগ্রী, রপ্তানি পণ্য, পচনশীল দ্রব্য, পশুবাহী ট্রাক ছাড়া ভারী পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান এবং লরি ঈদের আগের তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের তিন দিন সারাদেশের মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ। এ নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সভায় ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এর আগে গত ৪ জুন মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সড়কে নতুন উপদ্রব মোটরসাইকেল। ইদানীং তরুণ তুর্কিরা যেভাবে উন্মাদ অবস্থায় সড়কে মোটরসাইকেল চালায় তা দুর্ভাগ্যজনক। তারা আইন মানে না, মাথায় হেলমেট পরে না। ঢাকা শহরে অবশ্য অনেক পীড়াপীড়ি করে পরিবর্তন করা গেছে। এই শহরে এখন ৯৫ শতাংশ চালক ও আরোহী হেলমেট ব্যবহার করে। এটার জন্য পুলিশ প্রশাসনের অবদান আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বলেছেন, যারা নিয়ম মানবে না, তাদের তেল দেয়া হবে না। সব পেট্রল পাম্পকে বলে দিয়েছে। আমার মনে হয় বিষয়টি ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে দেয়া উচিত। আমি রাজনৈতিক ব্যক্তি। আমি দেখি রাস্তায় ঝাঁকে-ঝাঁকে মোটরসাইকেল আরোহী ছোটাছুটি করে এবং চালকরা নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করে না। তারা হেলমেটও পরে না। এটি ঢাকা শহরের অধিকাংশ চালক মানে। কিন্তু রাজনীতির নতুন কর্মীরা আইনকে ডোন্ট কেয়ার করে, তারা মানতে চায় না। এ বিষয়ে অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকা উচিত।’