বিএনপির সময় আ,লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

গতকাল নবনির্মিত টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধনের পর তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সেখানে মতবিনিময় করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির সময় আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। জেল-জুলুম হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গেছে, অনেক লাশ হারিয়ে গেছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আরও বলেন, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, এরশাদ, জিয়া সব আমলেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু শত নির্যাতনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে সব সময় শক্তিশালী ছিল। বিশেষ করে আমাদের মাঠকর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারাই কিন্তু দলকে ধরে রাখেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুন্নত দক্ষিণ ও উত্তর অঞ্চলের অবস্থা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমি যখন দেশে ফিরে আসি তখন সবচেয়ে অবহেলিত ছিল দক্ষিণাঞ্চল। উত্তরাঞ্চল ছিল মঙ্গাকবলিত এলাকা। তখন কোন মানুষের গায়ে মাংস ছিল না। তাদের খাবার ছিল না। রোগের চিকিৎসা ছিল না। আর প্রতি বছর দুর্ভিক্ষ হতো। তখন থেকে আমার একটা প্রতিজ্ঞা ছিল, যখন সুযোগ পাবো তখন দেশের জন্য কাজ করবো। এখন উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা নাই। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

এ সময় শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, সহসভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল বিশ্বাসসহ টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে সঙ্গে নিয়ে সড়ক পথে পিতৃভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আসেন।

দুপুর পৌঁনে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তারপর তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। এ সময় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র ফাতেহা পাঠ, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিবারের সদস্যদের সুস্থতা, দীর্ঘায়ু, দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।

আজ সকালে গণভবন থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে সড়ক পথে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ৮টা ৪৮ মিনিটে মাওয়া টোল প্লাজায় পদ্মা সেতুর টোল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওঠেন সেতুতে। ব্রিজের মাঝামাঝি গিয়ে সন্তানদের নিয়ে কিছু সময় পার করেন শেখ হাসিনা। সোয়া ৯টার দিকে তিনি জাজিরা প্রান্তে যান। সেখানে সেতুর উদ্বোধনী ফলকের সামনে কিছু সময় দাঁড়ান। এরপর বিশ্রাম নেন জাজিরা প্রান্তের সার্ভিস এরিয়া-২ এ। উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতু দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় এটিই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত প্রথম সফর। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকাজুড়ে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টুঙ্গিপাড়া সেজে ওঠে বর্ণিল সাজে। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে।

বিকেল ৩টা ২৮ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী সড়ক পথে ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।

মধুমতী ভ্রমণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধুমতী নদী ভ্রমণের কর্মসূচি থকলেও তিনি সেখানে অংশ নেননি। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং পরিবারের সদস্যরা মধুমতী নদীতে নৌ-ভ্রমণ করেছেন। তারা এ সময় পাটাগাতী লঞ্চঘাটে নবনির্মিত দৃষ্টি নন্দন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ল্যান্ডিং স্টেশন পরিদর্শণ করেন।

মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই ২০২২ , ২১ আষাড় ১৪২৮ ২৫ জিলহজ ১৪৪৩

বিএনপির সময় আ,লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ

image

প্রধানমন্ত্রী গতকাল টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

গতকাল নবনির্মিত টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধনের পর তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সেখানে মতবিনিময় করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির সময় আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। জেল-জুলুম হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গেছে, অনেক লাশ হারিয়ে গেছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আরও বলেন, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, এরশাদ, জিয়া সব আমলেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু শত নির্যাতনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে সব সময় শক্তিশালী ছিল। বিশেষ করে আমাদের মাঠকর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারাই কিন্তু দলকে ধরে রাখেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুন্নত দক্ষিণ ও উত্তর অঞ্চলের অবস্থা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমি যখন দেশে ফিরে আসি তখন সবচেয়ে অবহেলিত ছিল দক্ষিণাঞ্চল। উত্তরাঞ্চল ছিল মঙ্গাকবলিত এলাকা। তখন কোন মানুষের গায়ে মাংস ছিল না। তাদের খাবার ছিল না। রোগের চিকিৎসা ছিল না। আর প্রতি বছর দুর্ভিক্ষ হতো। তখন থেকে আমার একটা প্রতিজ্ঞা ছিল, যখন সুযোগ পাবো তখন দেশের জন্য কাজ করবো। এখন উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা নাই। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

এ সময় শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এমপি, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, সহসভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল বিশ্বাসসহ টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে সঙ্গে নিয়ে সড়ক পথে পিতৃভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আসেন।

দুপুর পৌঁনে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তারপর তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। এ সময় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে সঙ্গে নিয়ে পবিত্র ফাতেহা পাঠ, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিবারের সদস্যদের সুস্থতা, দীর্ঘায়ু, দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।

আজ সকালে গণভবন থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে সড়ক পথে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ৮টা ৪৮ মিনিটে মাওয়া টোল প্লাজায় পদ্মা সেতুর টোল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওঠেন সেতুতে। ব্রিজের মাঝামাঝি গিয়ে সন্তানদের নিয়ে কিছু সময় পার করেন শেখ হাসিনা। সোয়া ৯টার দিকে তিনি জাজিরা প্রান্তে যান। সেখানে সেতুর উদ্বোধনী ফলকের সামনে কিছু সময় দাঁড়ান। এরপর বিশ্রাম নেন জাজিরা প্রান্তের সার্ভিস এরিয়া-২ এ। উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতু দিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় এটিই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত প্রথম সফর। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকাজুড়ে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টুঙ্গিপাড়া সেজে ওঠে বর্ণিল সাজে। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে।

বিকেল ৩টা ২৮ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী সড়ক পথে ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।

মধুমতী ভ্রমণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধুমতী নদী ভ্রমণের কর্মসূচি থকলেও তিনি সেখানে অংশ নেননি। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং পরিবারের সদস্যরা মধুমতী নদীতে নৌ-ভ্রমণ করেছেন। তারা এ সময় পাটাগাতী লঞ্চঘাটে নবনির্মিত দৃষ্টি নন্দন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ল্যান্ডিং স্টেশন পরিদর্শণ করেন।