করোনা : শনাক্ত বেড়েছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ‘বিএ.৫’ উপধরনে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বেশি

একদিনে দেশে কোভিড রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু কমেছে। তবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার কিছুটা বেড়েছে। এদিন শনাক্তের হার পৌনে ১৭ শতাংশে পৌছেছে; যা আগের দিন সাড়ে ১৬ শতাংশ ছিল। রাজধানীতে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ‘বিএ.৫’ সাব-ভ্যারিয়েন্টে (উপ-ধরন) মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি)।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১১ হাজার ৯৩২টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ৯৯৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন দুই হাজার ২৮৫ জনের দেহে কোভিড শনাক্ত হয়েছিল।

সর্বশেষ একদিনে দেশে শনাক্ত কোভিড রোগীর মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন ১২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; যা গত ৫ মার্চের পর সর্বোচ্চ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে কোভিড শনাক্তের হার ছিল ১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং আগের দিন তা ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ ছিল।

নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৯৭২ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ১৮১ জন মারা গেছেন শনাক্ত রোগীর মধ্যে একদিনে ৪৯৪ জন কোভিড রোগীর সেরে ওঠার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১৯ লাখ ৯ হাজার ২৭৩ জন।

নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর মধ্যে এক হাজার ৩৬৩ জনই ঢাকা মহানগর ও জেলার বাসিন্দা। এদিন দেশের ৫৫টি জেলায় কম-বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এদিন মাদারীপুর, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে কোন রোগী শনাক্ত হয়নি।

একদিনে মৃত্যু হওয়া সাতজনের সবাই পুরুষ। এর মধ্যে ছয়জন সরকারি হাসপাতালে এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের পাঁচজন এবং বাকি দুইজন রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের (ধরন) সংক্রমণের কারণে চলতি বছরের শুরুর দিকে ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে রোগী শনাক্ত। এক পর্যায়ে দৈনিক শনাক্ত ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তবে ফেব্রুয়ারিতেই কমতে থাকে সংক্রমণ হার। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দৈনিক শনাক্ত হাজারের নিচে নেমে আসে। গত ৫ মে মাত্র চারজনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হারও এক শতাংশের কম ছিল। এরপর বেশ কিছুদিন করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হয়। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর দশ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।

ঢাকায় সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ওমিক্রনের বিএ.৫ উপ-ধরন :

ঢাকায় করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন ‘বিএ.৫’ সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরনে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি।

গতকাল প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। আইসিডিডিআরবি বলছে, গত ১৯ মে ঢাকায় প্রথম সন্দেহভাজন ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ.৫ শনাক্ত হয়। এরপর গত প্রায় ছয় সপ্তাহে উপ-ধরনটি সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে রাজধানীতে। এ সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং ব্যবহার করে ৫২টি কোভিড-১৯ পজেটিভের মধ্যে ৫১টি বিএ.৫ সাব-ভ্যারিয়েন্ট এবং একটি বিএ.২ হিসাবে শনাক্ত করা হয়।

ওমিক্রনের বিএ.৪ বা বিএ.৫ সাব-ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং এটি সংক্রমণ বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, এ উপ-ধরনটি ভাইরাসের অতীত সংস্করণগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য প্রস্তুত। বাংলাদেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত হয় ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর।

image
আরও খবর
কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়লো
হেনোলাক্স গ্রুপের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা, স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে মোটরসাইকেল নিবন্ধন বন্ধের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
অনার্স পাস ছাত্রী হামিদা হলেন খামারি
সাঁথিয়া পৌর মেয়রের ব্যক্তিগত অফিস ‘টর্চার সেল’!
বাসায় ফিরেছেন দুই ছাত্রী, মামলায় পলাতক সেই শিক্ষক
ট্রাক ড্রাইভার এক হাতে সিগারেট আর কানে মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাচ্ছিল
পিকের সঙ্গে প্রভাবশালীর যোগ : খুব শীঘ্রই চার্জশিট, বললেন কলকাতার আইনজীবী
স্বর্গ থেকে নির্বাচন কমিশনার আসলেও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না : ফখরুল
যেভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করল সিলেট

বুধবার, ০৬ জুলাই ২০২২ , ২২ আষাড় ১৪২৮ ২৬ জিলহজ ১৪৪৩

করোনা : শনাক্ত বেড়েছে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ‘বিএ.৫’ উপধরনে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বেশি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

একদিনে দেশে কোভিড রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু কমেছে। তবে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার কিছুটা বেড়েছে। এদিন শনাক্তের হার পৌনে ১৭ শতাংশে পৌছেছে; যা আগের দিন সাড়ে ১৬ শতাংশ ছিল। রাজধানীতে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ‘বিএ.৫’ সাব-ভ্যারিয়েন্টে (উপ-ধরন) মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি)।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১১ হাজার ৯৩২টি নমুনা পরীক্ষায় এক হাজার ৯৯৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন দুই হাজার ২৮৫ জনের দেহে কোভিড শনাক্ত হয়েছিল।

সর্বশেষ একদিনে দেশে শনাক্ত কোভিড রোগীর মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন ১২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; যা গত ৫ মার্চের পর সর্বোচ্চ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে কোভিড শনাক্তের হার ছিল ১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং আগের দিন তা ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ ছিল।

নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৯৭২ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ১৮১ জন মারা গেছেন শনাক্ত রোগীর মধ্যে একদিনে ৪৯৪ জন কোভিড রোগীর সেরে ওঠার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১৯ লাখ ৯ হাজার ২৭৩ জন।

নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর মধ্যে এক হাজার ৩৬৩ জনই ঢাকা মহানগর ও জেলার বাসিন্দা। এদিন দেশের ৫৫টি জেলায় কম-বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এদিন মাদারীপুর, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে কোন রোগী শনাক্ত হয়নি।

একদিনে মৃত্যু হওয়া সাতজনের সবাই পুরুষ। এর মধ্যে ছয়জন সরকারি হাসপাতালে এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের পাঁচজন এবং বাকি দুইজন রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের (ধরন) সংক্রমণের কারণে চলতি বছরের শুরুর দিকে ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে রোগী শনাক্ত। এক পর্যায়ে দৈনিক শনাক্ত ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তবে ফেব্রুয়ারিতেই কমতে থাকে সংক্রমণ হার। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দৈনিক শনাক্ত হাজারের নিচে নেমে আসে। গত ৫ মে মাত্র চারজনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হারও এক শতাংশের কম ছিল। এরপর বেশ কিছুদিন করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হয়। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর দশ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।

ঢাকায় সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ওমিক্রনের বিএ.৫ উপ-ধরন :

ঢাকায় করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের নতুন ‘বিএ.৫’ সাব-ভ্যারিয়েন্ট বা উপ-ধরনে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি।

গতকাল প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। আইসিডিডিআরবি বলছে, গত ১৯ মে ঢাকায় প্রথম সন্দেহভাজন ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ.৫ শনাক্ত হয়। এরপর গত প্রায় ছয় সপ্তাহে উপ-ধরনটি সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে রাজধানীতে। এ সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং ব্যবহার করে ৫২টি কোভিড-১৯ পজেটিভের মধ্যে ৫১টি বিএ.৫ সাব-ভ্যারিয়েন্ট এবং একটি বিএ.২ হিসাবে শনাক্ত করা হয়।

ওমিক্রনের বিএ.৪ বা বিএ.৫ সাব-ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং এটি সংক্রমণ বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, এ উপ-ধরনটি ভাইরাসের অতীত সংস্করণগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য প্রস্তুত। বাংলাদেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত হয় ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর।