৪৫ মণের ষাঁড় ঈদবাজারে বিক্রির জন্য তৈরি
চাকরি নয়, গরুর বড় খামারি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন টাঙ্গাইল সরকারি সা’দত বিশ^বিদ্যালয় কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স পাস করা ছাত্রী হামিদা আক্তার। গরুর বড় খামারি হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে লেখাপড়ার পাশাপাশি গত পাঁচ বছর যাবৎ ধারাবাহিকভাবে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গাভীসহ ষাঁড় গরু লালন-পালন করেছেন সে। বড় খামারির স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনা গত বছরই হাতের নাগালে আসলেও, বিশ^ মহামারীর ভয়াবহ থাবায় তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।
এরপরও হাল না ছাড়া হামিদা খামার তৈরির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমানে তার খামারে আছে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি গরু। দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করে এরই মধ্যে বড় করে তুলেছেন পাঁচ বছর বয়সী বিশালাকৃতির একটি ষাঁড়। ষাঁড়টি নাম দিয়েছেন মানিক। আসন্ন ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত ৪৫ মন বা ১৮০০ কেজি ওজনের এই ষাঁড়। যার দাম হাঁকাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা। জেলার সবচেয়ে বড় এই ষাঁড়টি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন মানুষ আসছেন হামিদার বাড়িতে। ন্যায্য দামে ষাঁড়টি বিক্রি হলেই তার খামার করার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হবে, এমনটাই মনে করছেন হামিদা।
বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রী হামিদা আক্তার টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার সীমান্তবর্তী লাউহাটি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের কৃষক আবদুল হামিদ ও রিনা বেগমের মেয়ে। হামিদ-রিনা দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে হামিদা। উপার্জনের টাকায় নিজের ও দুই বোনের লেখাপড়ার ব্যয় বহনসহ কৃষক বাবার সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। ইতোমধ্যেই ছোট দুই বোনকে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাশও করিয়েছেন।
এক বোনের বিয়ে দেয়াসহ আরেক বোনকে নার্সিংয়ে পড়ালেখা করাচ্ছেন। ভিটে-বাড়িসহ বাবার জমির পরিমাণ মাত্র ৫০ শতাংশ। বাবার পক্ষে সংসারের এত খরচ বহন অসম্ভব হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি শুরু করেন তিনি দর্জির কাজ। এরপর গত ৫ বছর যাবৎ করেছেন গরু, রাজহাঁস ও কবুতর লালন পালনসহ বিকাশ এজেন্টের ব্যবসা। তার ব্যবসার ঠিকানা হিসেবে এক বছর হলো বাড়ির সামনে বসিয়েছেন একটি মুদি দোকান। সেই দোকানেই নানা ধরনের খাদ্যসামগ্রী বিক্রির পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন বিকাশ এজেন্ট, ফ্লেক্সিলোড আর দর্জির কাজ। যার আয় থেকেই চলছে তাদের লেখাপড়াসহ সংসারের সব ভরণপোষণ।
গরু লালন-পালন নিয়ে হামিদা বলেন, পরিবারের সদস্যের মতোই বড় হচ্ছে তার অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরুগুলো। তাদের থাকার ঘরে রয়েছে দুটি সিলিং ফ্যান আর মশারি। নিয়মিত খাবারের তালিকায় রয়েছে খড়, ভুষি, কাঁচা ঘাস, মাল্টা, পেয়ারা, কলা, মিষ্টি কুমড়া ও মিষ্টি আলু। রোগ-জীবাণুর হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিন তাদের সাবান আর শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করানো হয়। হামিদা আরও বলেন, ৫ বছর আগে তার নিজের খামারের ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাড়ি থেকেই জন্ম নেয় মানিক ও রতন নামের দুটি ষাঁড় বাছুর। গত কোরবানির হাটে ওই ষাঁড় দুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। গত বছরই মানিকের ওজন ছিল ৩৫ মন আর রতনের ওজন ছিল ৩৪ মন। দাম চেয়েছিলেন মানিকের ১৪ আর রতনের ১৩ লাখ। গত কোরবানির আগে বাড়িতে গরু ব্যবসায়িরা এসে মানিকের দাম বলেছিলেন ৯ লাখ টাকা। কিন্তু বাকিতে নেয়ার কথা বলায় মানিককে আর বিক্রি করা হয়নি। পরে ঢাকার গাবতলী হাটে নেয়া হয় মানিক ও রতনকে। তবে করোনার কারণে হাটে নিয়েও সুবিধা হয়নি। মাত্র ৪ লাখ টাকায় রতনকে বিক্রি করা হলেও মানিককে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। মানিকের পেছনে দৈনিক খাবার লাগছে ১৭ কেজি গমের ভুষি, ৪ কেজি ছোলা, ২ কেজি খুদের ভাত, আধা কেজি সরিষার খৈল। এছাড়া দৈনিক তাকে খাওয়ানো হচ্ছে নানা জাতের পাকা কলা। গত এক বছর লালন-পালন করে বর্তমানে মানিকের ওজন ৪৫ মন বা ১৮০০ কেজি বলে দাবি করেছেন হামিদা।
হামিদা আরও বলেন, আমরা বাড়ি থেকেই ষাঁড় বিক্রি করার চেষ্টা করছি। বাড়িতে এসে যদি কোন ক্রেতা ন্যায্য দাম বলেন, সেক্ষেত্রে আমরা নিজ খরচে মানিককে ক্রেতাদের বাড়িতে পৌঁছে দেব। আসা করছি এ বছর ভালো দামে মানিককে বিক্রি করতে পারবো। লেখাপড়া করেও গরু লালন-পালন করছেন এমন প্রশ্নে হামিদা বলেন, আমি পড়ালেখা করছি, চাকরি করার জন্য নয়। আমার স্বপ্ন আমি একজন বড় গরুর খামারি হব। এ বছর যদি ভালো দামে আমি মানিককে বিক্রি করতে পারি, তবে সেই টাকায় আমি আমার স্বপ্নের খামারটি নির্মাণ করবো। ওই খামারে লালন-পালন করবো ভালো জাতের সব গরু।
হামিদার মা রিনা বেগম বলেন, আমার মেয়েদের জন্মের আগে থেকেই ওর বাবা গরু লালন-পালন করতেন। যা দেখে হামিদাও গরু লালন-পালনে আগ্রহী হয়েছে।
দেলদুয়ার উপজেলা কেদারপুর থেকে ষাঁড়টি দেখতে আসা সোহেল রানা বলেন, এত বড় ষাঁড়ের কথা শুনেই এখানে এসেছি। আমার ধারণা, জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড় এটিই। নাগরপুর থেকে আসা রুবেল মিয়া বলেন, দুটি উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম ভেঙ্গুলিয়া। এ কারণে মাঝে মাঝেই আমার এ গ্রামে আসা হয়। তবে এবার এত বড় ষাঁড়ের কথা শুনেই এখানে এসেছি।
লাউহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বুদ্দু বলেন, হামিদা একজন কৃষক বাবার মেয়ে ও বিশ^বিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী। সে বেশ কিছুদিন যাবৎ গরুও লালন করছে। তার ছোট খামারে এবার ৪৫ মনের একটি ষাঁড় গরু হয়েছে। আমি চাই দরিদ্র পরিবারের ওই মেয়ের ষাঁড়টি ভালো দামে বিক্রি হোক। তার ষাঁড়টি বিক্রিতে সহযোগিতা করার আশ^াসও দিয়েছেন তিনি।
লাউহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন মোহাম্মদ খান বলেন, বিশ^বিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী হামিদার গরু লালন-পালনের বিষয়টি আমি জানি। তবে উনি কখনও সাহায্য সহযোগিতার জন্য আসেননি। যদি তিনি কখনো বড় ধরনের খামার করতে আমাদের সাহায্য সহযোগিতা চায়, তবে অবশ্যই করবো।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বাহাউদ্দিন সারোয়ার রিজভী জানান, এ উপজেলায় হামিদার ষাঁড়টিই সবচেয়ে বড়। আমাদের অনলাইন হাটে তার ষাঁড়টির ছবি, ওজন ও দাম উল্লেখ করে বিক্রির জন্য প্রচারণা চালানো হবে। এছাড়া আমাদের কাছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বড় ষাঁড় কেনার জন্য গ্রাহক যোগাযোগ করেন। আমরা সেই সব ক্রেতাকেও হামিদার ষাঁড়টির বিষয়ে অবগত করবো।
বুধবার, ০৬ জুলাই ২০২২ , ২২ আষাড় ১৪২৮ ২৬ জিলহজ ১৪৪৩
৪৫ মণের ষাঁড় ঈদবাজারে বিক্রির জন্য তৈরি
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল
চাকরি নয়, গরুর বড় খামারি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন টাঙ্গাইল সরকারি সা’দত বিশ^বিদ্যালয় কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স পাস করা ছাত্রী হামিদা আক্তার। গরুর বড় খামারি হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে লেখাপড়ার পাশাপাশি গত পাঁচ বছর যাবৎ ধারাবাহিকভাবে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গাভীসহ ষাঁড় গরু লালন-পালন করেছেন সে। বড় খামারির স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনা গত বছরই হাতের নাগালে আসলেও, বিশ^ মহামারীর ভয়াবহ থাবায় তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।
এরপরও হাল না ছাড়া হামিদা খামার তৈরির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমানে তার খামারে আছে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি গরু। দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করে এরই মধ্যে বড় করে তুলেছেন পাঁচ বছর বয়সী বিশালাকৃতির একটি ষাঁড়। ষাঁড়টি নাম দিয়েছেন মানিক। আসন্ন ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত ৪৫ মন বা ১৮০০ কেজি ওজনের এই ষাঁড়। যার দাম হাঁকাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা। জেলার সবচেয়ে বড় এই ষাঁড়টি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন মানুষ আসছেন হামিদার বাড়িতে। ন্যায্য দামে ষাঁড়টি বিক্রি হলেই তার খামার করার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হবে, এমনটাই মনে করছেন হামিদা।
বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রী হামিদা আক্তার টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার সীমান্তবর্তী লাউহাটি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের কৃষক আবদুল হামিদ ও রিনা বেগমের মেয়ে। হামিদ-রিনা দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে হামিদা। উপার্জনের টাকায় নিজের ও দুই বোনের লেখাপড়ার ব্যয় বহনসহ কৃষক বাবার সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। ইতোমধ্যেই ছোট দুই বোনকে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাশও করিয়েছেন।
এক বোনের বিয়ে দেয়াসহ আরেক বোনকে নার্সিংয়ে পড়ালেখা করাচ্ছেন। ভিটে-বাড়িসহ বাবার জমির পরিমাণ মাত্র ৫০ শতাংশ। বাবার পক্ষে সংসারের এত খরচ বহন অসম্ভব হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি শুরু করেন তিনি দর্জির কাজ। এরপর গত ৫ বছর যাবৎ করেছেন গরু, রাজহাঁস ও কবুতর লালন পালনসহ বিকাশ এজেন্টের ব্যবসা। তার ব্যবসার ঠিকানা হিসেবে এক বছর হলো বাড়ির সামনে বসিয়েছেন একটি মুদি দোকান। সেই দোকানেই নানা ধরনের খাদ্যসামগ্রী বিক্রির পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন বিকাশ এজেন্ট, ফ্লেক্সিলোড আর দর্জির কাজ। যার আয় থেকেই চলছে তাদের লেখাপড়াসহ সংসারের সব ভরণপোষণ।
গরু লালন-পালন নিয়ে হামিদা বলেন, পরিবারের সদস্যের মতোই বড় হচ্ছে তার অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরুগুলো। তাদের থাকার ঘরে রয়েছে দুটি সিলিং ফ্যান আর মশারি। নিয়মিত খাবারের তালিকায় রয়েছে খড়, ভুষি, কাঁচা ঘাস, মাল্টা, পেয়ারা, কলা, মিষ্টি কুমড়া ও মিষ্টি আলু। রোগ-জীবাণুর হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিন তাদের সাবান আর শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করানো হয়। হামিদা আরও বলেন, ৫ বছর আগে তার নিজের খামারের ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাড়ি থেকেই জন্ম নেয় মানিক ও রতন নামের দুটি ষাঁড় বাছুর। গত কোরবানির হাটে ওই ষাঁড় দুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। গত বছরই মানিকের ওজন ছিল ৩৫ মন আর রতনের ওজন ছিল ৩৪ মন। দাম চেয়েছিলেন মানিকের ১৪ আর রতনের ১৩ লাখ। গত কোরবানির আগে বাড়িতে গরু ব্যবসায়িরা এসে মানিকের দাম বলেছিলেন ৯ লাখ টাকা। কিন্তু বাকিতে নেয়ার কথা বলায় মানিককে আর বিক্রি করা হয়নি। পরে ঢাকার গাবতলী হাটে নেয়া হয় মানিক ও রতনকে। তবে করোনার কারণে হাটে নিয়েও সুবিধা হয়নি। মাত্র ৪ লাখ টাকায় রতনকে বিক্রি করা হলেও মানিককে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। মানিকের পেছনে দৈনিক খাবার লাগছে ১৭ কেজি গমের ভুষি, ৪ কেজি ছোলা, ২ কেজি খুদের ভাত, আধা কেজি সরিষার খৈল। এছাড়া দৈনিক তাকে খাওয়ানো হচ্ছে নানা জাতের পাকা কলা। গত এক বছর লালন-পালন করে বর্তমানে মানিকের ওজন ৪৫ মন বা ১৮০০ কেজি বলে দাবি করেছেন হামিদা।
হামিদা আরও বলেন, আমরা বাড়ি থেকেই ষাঁড় বিক্রি করার চেষ্টা করছি। বাড়িতে এসে যদি কোন ক্রেতা ন্যায্য দাম বলেন, সেক্ষেত্রে আমরা নিজ খরচে মানিককে ক্রেতাদের বাড়িতে পৌঁছে দেব। আসা করছি এ বছর ভালো দামে মানিককে বিক্রি করতে পারবো। লেখাপড়া করেও গরু লালন-পালন করছেন এমন প্রশ্নে হামিদা বলেন, আমি পড়ালেখা করছি, চাকরি করার জন্য নয়। আমার স্বপ্ন আমি একজন বড় গরুর খামারি হব। এ বছর যদি ভালো দামে আমি মানিককে বিক্রি করতে পারি, তবে সেই টাকায় আমি আমার স্বপ্নের খামারটি নির্মাণ করবো। ওই খামারে লালন-পালন করবো ভালো জাতের সব গরু।
হামিদার মা রিনা বেগম বলেন, আমার মেয়েদের জন্মের আগে থেকেই ওর বাবা গরু লালন-পালন করতেন। যা দেখে হামিদাও গরু লালন-পালনে আগ্রহী হয়েছে।
দেলদুয়ার উপজেলা কেদারপুর থেকে ষাঁড়টি দেখতে আসা সোহেল রানা বলেন, এত বড় ষাঁড়ের কথা শুনেই এখানে এসেছি। আমার ধারণা, জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড় এটিই। নাগরপুর থেকে আসা রুবেল মিয়া বলেন, দুটি উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম ভেঙ্গুলিয়া। এ কারণে মাঝে মাঝেই আমার এ গ্রামে আসা হয়। তবে এবার এত বড় ষাঁড়ের কথা শুনেই এখানে এসেছি।
লাউহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বুদ্দু বলেন, হামিদা একজন কৃষক বাবার মেয়ে ও বিশ^বিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী। সে বেশ কিছুদিন যাবৎ গরুও লালন করছে। তার ছোট খামারে এবার ৪৫ মনের একটি ষাঁড় গরু হয়েছে। আমি চাই দরিদ্র পরিবারের ওই মেয়ের ষাঁড়টি ভালো দামে বিক্রি হোক। তার ষাঁড়টি বিক্রিতে সহযোগিতা করার আশ^াসও দিয়েছেন তিনি।
লাউহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন মোহাম্মদ খান বলেন, বিশ^বিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী হামিদার গরু লালন-পালনের বিষয়টি আমি জানি। তবে উনি কখনও সাহায্য সহযোগিতার জন্য আসেননি। যদি তিনি কখনো বড় ধরনের খামার করতে আমাদের সাহায্য সহযোগিতা চায়, তবে অবশ্যই করবো।
এ বিষয়ে দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বাহাউদ্দিন সারোয়ার রিজভী জানান, এ উপজেলায় হামিদার ষাঁড়টিই সবচেয়ে বড়। আমাদের অনলাইন হাটে তার ষাঁড়টির ছবি, ওজন ও দাম উল্লেখ করে বিক্রির জন্য প্রচারণা চালানো হবে। এছাড়া আমাদের কাছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বড় ষাঁড় কেনার জন্য গ্রাহক যোগাযোগ করেন। আমরা সেই সব ক্রেতাকেও হামিদার ষাঁড়টির বিষয়ে অবগত করবো।