আশ্রয়কেন্দ্রে নারীদের ভোগান্তি কমাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিন

বন্যায় এক হাজার ৬০৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৫ লাখ লোক আশ্রয় নিয়েছে। যাদের অধিকাংশই গৃহহীন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে নারী ও তরুণীরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাছাড়া বন্যাদুর্গত এলাকায় প্রায় ৬০ হাজার সন্তানসম্ভবা রয়েছে। গত শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতিসংঘ যৌথ মিশনের সদস্য ও বিশেষজ্ঞরা।

বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষ নানান দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাদের মধ্যে নারীদের দুর্ভোগটা সবচেয়ে বেশি। বন্যা বা যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হন নারী ও শিশুরা। এর আগেও বিভিন্ন বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নারীর ভোগান্তির কথা জানা গেছে। দেশের অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আলোর ব্যবস্থা নেই। নারীদের জন্য আলাদা টয়লেট নেই। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানÑ এমন নারীদের জন্য আলাদা কোনো কক্ষ নেই। প্রতিবন্ধী নারীরাও বিপাকে পড়েন, কিশোরীরা মাসিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির শিকার হয়। তাছাড়া পুরুষের সঙ্গে একই ঘরে থাকতে হয় বলে যৌন হয়রানিরও সম্মুখীন হতে হয় নারী ও শিশুদের।

তাই দুর্যোগের সময় নারীর ভোগান্তি বেড়ে যায় বহুগুণ। এবারের বন্যায় সিলেটসহ দেশের বন্যা উপদ্রুত অন্যান্য এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নারীদের একই পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে নারীর ভোগান্তি কমাতে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। বন্যার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো নারীদের ঝুঁকিমুক্তভাবে বসবাসের উপযোগী করে নির্মাণ করতে হবে।

নারী স্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও শিশু শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি খাতে সহায়তা, গৃহনির্মাণ এবং ওয়াশ বা স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের যৌথ মিশনের সদস্য ও বিশেষজ্ঞরা। আমরা আশা করব, দ্রুত এ কাজ শুরু হবে। গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ বা বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তাদের আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই নারী ও শিশুরা যতদিন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করবে ততদিন তাদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে হবে।

বুধবার, ০৬ জুলাই ২০২২ , ২২ আষাড় ১৪২৮ ২৬ জিলহজ ১৪৪৩

আশ্রয়কেন্দ্রে নারীদের ভোগান্তি কমাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিন

বন্যায় এক হাজার ৬০৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৫ লাখ লোক আশ্রয় নিয়েছে। যাদের অধিকাংশই গৃহহীন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে নারী ও তরুণীরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তাছাড়া বন্যাদুর্গত এলাকায় প্রায় ৬০ হাজার সন্তানসম্ভবা রয়েছে। গত শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতিসংঘ যৌথ মিশনের সদস্য ও বিশেষজ্ঞরা।

বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষ নানান দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তাদের মধ্যে নারীদের দুর্ভোগটা সবচেয়ে বেশি। বন্যা বা যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হন নারী ও শিশুরা। এর আগেও বিভিন্ন বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নারীর ভোগান্তির কথা জানা গেছে। দেশের অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আলোর ব্যবস্থা নেই। নারীদের জন্য আলাদা টয়লেট নেই। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানÑ এমন নারীদের জন্য আলাদা কোনো কক্ষ নেই। প্রতিবন্ধী নারীরাও বিপাকে পড়েন, কিশোরীরা মাসিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির শিকার হয়। তাছাড়া পুরুষের সঙ্গে একই ঘরে থাকতে হয় বলে যৌন হয়রানিরও সম্মুখীন হতে হয় নারী ও শিশুদের।

তাই দুর্যোগের সময় নারীর ভোগান্তি বেড়ে যায় বহুগুণ। এবারের বন্যায় সিলেটসহ দেশের বন্যা উপদ্রুত অন্যান্য এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নারীদের একই পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে নারীর ভোগান্তি কমাতে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। বন্যার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো নারীদের ঝুঁকিমুক্তভাবে বসবাসের উপযোগী করে নির্মাণ করতে হবে।

নারী স্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও শিশু শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি খাতে সহায়তা, গৃহনির্মাণ এবং ওয়াশ বা স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের যৌথ মিশনের সদস্য ও বিশেষজ্ঞরা। আমরা আশা করব, দ্রুত এ কাজ শুরু হবে। গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ বা বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তাদের আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই নারী ও শিশুরা যতদিন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করবে ততদিন তাদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাতে হবে।