মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধ : প্রাসঙ্গিক ভাবনা

পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার পরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন মারা গেল। কিন্তু কীভাবে, কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল তার কোন সঠিক তদন্ত না করেই পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হল। অথচ দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল কয়েকজন ব্যক্তির কারণে, যারা কিনা ব্রিজের ঠিক মাঝখানে শুয়ে ছবি তোলায় ব্যাস্ত ছিল। তাদের বাঁচাতে বাইকার হার্ড ব্রেক করেছিল, যা ওই দুর্ঘটনার সময় ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সব দোষ বাইকারদের ওপর চাপানো হলো।

দেশের গণপরিবহন যখন সাধারণ মানুষদের ভোগান্তিবিহীন গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছে, তখন স্বল্প আয়ের মানুষসহ প্রতিনিয়ত ভোগান্তি মাথায় নিয়ে গণপরিবহনে চলাচলকারীদের জন্য মোটরসাইকেল একটি স্বস্তির বাহন হয়ে উঠেছে। দেশে ঈদসহ বড় বড় উৎসবে বিশেষ করে রাজধানী থেকে মানুষের গ্রামের বাড়িতে যাওয়াসহ দূরপাল্লার যাত্রার সময় গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য, যানজট ও পরিবহন ধর্মঘটের মতো চরম দুর্ভোগের সময় মানুষের একমাত্র ভরসার যানবাহন হয়ে উঠেছে এই দুই চাকার যানবাহনটি। গেল ঈদুল ফিতরে আমরা দেখেছি কতটা ভোগান্তিবিহীনভাবে লাখ লাখ মানুষ মোটরসাইকেল যোগে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছেছেন।

তবে উঠতি বয়সের কিংবা ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখা যায়। এদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ভেবে দেখা অনুচিত হবে না। অতীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার অধিকাংশই উঠতি বয়সের তরুণ। কারণ তারা নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে থাকে। আর এতেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। মাথাব্যথা করলে মাথা কেটে ফেলার মতো অবাঞ্ছিত ভাবনা থেকে সরে এসে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের নিয়ম মানাতে হবে। সড়কের বিদ্যমান আইনের যথাযথ ও সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সঙ্গে গণপরিবহন স্বল্পতা, ভাড়া নৈরাজ্য, টিকিট কালোবাজারি সমস্যা সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। এক কথায় গণপরিবহন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করুন। মহাসড়ক কিংবা দূরপাল্লার যাত্রায় মোটরসাইকেল ব্যবহার এমনিতেই কমে আসবে।

পলাশ খান

বুধবার, ০৬ জুলাই ২০২২ , ২২ আষাড় ১৪২৮ ২৬ জিলহজ ১৪৪৩

মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধ : প্রাসঙ্গিক ভাবনা

image

পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার পরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন মারা গেল। কিন্তু কীভাবে, কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল তার কোন সঠিক তদন্ত না করেই পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হল। অথচ দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল কয়েকজন ব্যক্তির কারণে, যারা কিনা ব্রিজের ঠিক মাঝখানে শুয়ে ছবি তোলায় ব্যাস্ত ছিল। তাদের বাঁচাতে বাইকার হার্ড ব্রেক করেছিল, যা ওই দুর্ঘটনার সময় ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সব দোষ বাইকারদের ওপর চাপানো হলো।

দেশের গণপরিবহন যখন সাধারণ মানুষদের ভোগান্তিবিহীন গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছে, তখন স্বল্প আয়ের মানুষসহ প্রতিনিয়ত ভোগান্তি মাথায় নিয়ে গণপরিবহনে চলাচলকারীদের জন্য মোটরসাইকেল একটি স্বস্তির বাহন হয়ে উঠেছে। দেশে ঈদসহ বড় বড় উৎসবে বিশেষ করে রাজধানী থেকে মানুষের গ্রামের বাড়িতে যাওয়াসহ দূরপাল্লার যাত্রার সময় গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য, যানজট ও পরিবহন ধর্মঘটের মতো চরম দুর্ভোগের সময় মানুষের একমাত্র ভরসার যানবাহন হয়ে উঠেছে এই দুই চাকার যানবাহনটি। গেল ঈদুল ফিতরে আমরা দেখেছি কতটা ভোগান্তিবিহীনভাবে লাখ লাখ মানুষ মোটরসাইকেল যোগে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছেছেন।

তবে উঠতি বয়সের কিংবা ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখা যায়। এদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ভেবে দেখা অনুচিত হবে না। অতীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার অধিকাংশই উঠতি বয়সের তরুণ। কারণ তারা নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে থাকে। আর এতেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। মাথাব্যথা করলে মাথা কেটে ফেলার মতো অবাঞ্ছিত ভাবনা থেকে সরে এসে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের নিয়ম মানাতে হবে। সড়কের বিদ্যমান আইনের যথাযথ ও সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সঙ্গে গণপরিবহন স্বল্পতা, ভাড়া নৈরাজ্য, টিকিট কালোবাজারি সমস্যা সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। এক কথায় গণপরিবহন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করুন। মহাসড়ক কিংবা দূরপাল্লার যাত্রায় মোটরসাইকেল ব্যবহার এমনিতেই কমে আসবে।

পলাশ খান