বাংলাদেশে শাখা খুলবে সিঙ্গাপুরের ব্যাংক ডিবিএস

সিঙ্গাপুরের জনপ্রিয় বহুজাতিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব সিঙ্গাপুর (ডিবিএস) বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই ব্যাংকটি বাংলাদেশে তাদের প্রথম শাখা খুলবে।

সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, এক বছর ধরে আলোচনা অবশেষে সফল হয়েছে। ১ জুলাই বাংলাদেশের হাইকমিশনার তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে ডিবিএস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিযুষ গুপ্তার একান্ত বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন পিযুষ গুপ্তা। গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, ‘ডেভলপমেন্ট ব্যাংক অব সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের বৎসর মেয়াদি আলোচনা অবশেষে সাফল্য লাভ করেছে।’

প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি ইউএস ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করবে ডিবিএস লিমিটেড। এই বিনিয়োগের বিষয়ে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘গত ১ জুলাই সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে ডিবিএস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিযুষ গুপ্তার একান্ত বৈঠককালে গুপ্তা বাংলাদেশে তার প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন। বৈঠকে গুপ্তা জানান, ডিবিএস ব্যাংকের বাংলাদেশ শাখা প্রাথমিকভাবে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে যাত্রা শুরু করবে। এই বিনিয়োগের বিষয়ে ইতোমধ্যেই তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ব্যাংকটির প্রথম শাখা যাত্রা শুরু করতে পারবে বলে ডিবিএস এর এই শীর্ষ কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেন।’

আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর’স (এসঅ্যান্ডপি) এবং মুডি’স-এর সর্বোচ্চ পর্যায়ের রেটিংপ্রাপ্ত ডিবিএস লিমিটেড পর পর ছয় বছর ‘এশিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ ব্যাংক’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়া ইউরোমানি ২০১৬ সালে ডিবিএসকে বিশ্বের সেরা ডিজিটাল ব্যাংকের সম্মাননা দেয়। বিগত বছরগুলোতে ডিবিএস বিশ্বের একাধিক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে সেরা ব্যাংকের স্বীকৃতি লাভ করে।

সিঙ্গাপুর ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, চীন, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনামসহ আরও কয়েকটি দেশে ব্যাংকটির ৩০০ এর অধিক শাখা এবং বিশ্বের প্রায় ৫০টি প্রধান শহরে তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘গত এক দশকে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) হিসাবে সিঙ্গাপুর বর্তমানে তৃতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ‘আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্র’ হিসেবে বিবেচিত সিঙ্গাপুর থেকে এতদিন কোন বৃহৎ ব্যাংক বা অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্যোগী হয়নি। এবারই প্রথম সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি বৃহৎ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের আর্থিক খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে, যার সর্বমোট সম্পদের পরিমাণ ৫০০ বিলিয়ন আমেরিকান ডলারের বেশি। কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট টালমাটাল পরিস্থিতিতে ডিবিএস লিমিটেডের বিনিয়োগ প্রস্তাব বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক লক্ষণ বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।’

‘বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশেষ করে অবকাঠামো খাতের প্রকল্পগুলোর অর্থায়নের ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠান জোরালো অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। ডিবিএস এর মতো বিশ্বখ্যাত ডিজিটাল ও কর্পোরেট ব্যাংকগুলো বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করলে তা দেশের ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার, ০৭ জুলাই ২০২২ , ২৩ আষাড় ১৪২৮ ২৭ জিলহজ ১৪৪৩

বাংলাদেশে শাখা খুলবে সিঙ্গাপুরের ব্যাংক ডিবিএস

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

সিঙ্গাপুরের জনপ্রিয় বহুজাতিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব সিঙ্গাপুর (ডিবিএস) বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় এই ব্যাংকটি বাংলাদেশে তাদের প্রথম শাখা খুলবে।

সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, এক বছর ধরে আলোচনা অবশেষে সফল হয়েছে। ১ জুলাই বাংলাদেশের হাইকমিশনার তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে ডিবিএস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিযুষ গুপ্তার একান্ত বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন পিযুষ গুপ্তা। গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, ‘ডেভলপমেন্ট ব্যাংক অব সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের বৎসর মেয়াদি আলোচনা অবশেষে সাফল্য লাভ করেছে।’

প্রাথমিকভাবে ১০ কোটি ইউএস ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করবে ডিবিএস লিমিটেড। এই বিনিয়োগের বিষয়ে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘গত ১ জুলাই সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে ডিবিএস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিযুষ গুপ্তার একান্ত বৈঠককালে গুপ্তা বাংলাদেশে তার প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন। বৈঠকে গুপ্তা জানান, ডিবিএস ব্যাংকের বাংলাদেশ শাখা প্রাথমিকভাবে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে যাত্রা শুরু করবে। এই বিনিয়োগের বিষয়ে ইতোমধ্যেই তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ব্যাংকটির প্রথম শাখা যাত্রা শুরু করতে পারবে বলে ডিবিএস এর এই শীর্ষ কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেন।’

আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর’স (এসঅ্যান্ডপি) এবং মুডি’স-এর সর্বোচ্চ পর্যায়ের রেটিংপ্রাপ্ত ডিবিএস লিমিটেড পর পর ছয় বছর ‘এশিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ ব্যাংক’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়া ইউরোমানি ২০১৬ সালে ডিবিএসকে বিশ্বের সেরা ডিজিটাল ব্যাংকের সম্মাননা দেয়। বিগত বছরগুলোতে ডিবিএস বিশ্বের একাধিক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে সেরা ব্যাংকের স্বীকৃতি লাভ করে।

সিঙ্গাপুর ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, চীন, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনামসহ আরও কয়েকটি দেশে ব্যাংকটির ৩০০ এর অধিক শাখা এবং বিশ্বের প্রায় ৫০টি প্রধান শহরে তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘গত এক দশকে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) হিসাবে সিঙ্গাপুর বর্তমানে তৃতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ‘আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কেন্দ্র’ হিসেবে বিবেচিত সিঙ্গাপুর থেকে এতদিন কোন বৃহৎ ব্যাংক বা অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্যোগী হয়নি। এবারই প্রথম সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি বৃহৎ ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের আর্থিক খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে, যার সর্বমোট সম্পদের পরিমাণ ৫০০ বিলিয়ন আমেরিকান ডলারের বেশি। কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট টালমাটাল পরিস্থিতিতে ডিবিএস লিমিটেডের বিনিয়োগ প্রস্তাব বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক লক্ষণ বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।’

‘বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশেষ করে অবকাঠামো খাতের প্রকল্পগুলোর অর্থায়নের ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠান জোরালো অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। ডিবিএস এর মতো বিশ্বখ্যাত ডিজিটাল ও কর্পোরেট ব্যাংকগুলো বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করলে তা দেশের ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’