মানিক-বাহাদুর ৩৫ মণ

মানকিগঞ্জের শিবালয়ের তেওতা গ্রামের মো.সিরাজুল ইসলাম নামের এক খামারী তার খামারে হলিস্টিন ফিজিয়ান জাতের একটি ষাড় গরু লালন-পালন করেছেন গত কয়েক বছর যাবত। সাড়ে তিন বছরের গরুর ওজন হয়েছে প্রায় ৩৫ মণ। সাড়ে পাঁচ ফিট উচ্চতা এবং সাড়ে আট ফুট দৈর্ঘ এই ষাড়টির নাম দিয়েছেন শখ করে দেওয়া নাম মানিক-বাহাদুর। উপজেলার তেওতা জমিদার বাড়ির পাশেই খামারটিতে প্রতিদিন শতশত মানুষ আসছেন মানিক-বাহাদুর-কে একনজর দেখার জন্য। কোন প্রকার মেডিসিন ছাড়া সম্পুর্ন প্রাকৃতিক খাবার খায়ানো হয়েছে গরুটিকে এমন করেই মালিক দাবি করছেন। এটিই জেলার সব থেকে বড় গরু জানা গেছে। ষাড়টিকে মোটাতাজা করার জন্য নিয়ম মেনে প্রতিদিন ছোলা,ভুসি,গম,পায়রাসহ কাঁচা ঘাস খায়ানো হয়েছে। আর কয়েক দিন পরেই কোরবানীর হাটে উঠানো হবে শখের লালন-পালন করা মানিক বাহাদুর কে। ষাড়ের মালিক তার বাহাদুরের দাম হাকাচ্ছে পনের লাখ টাকা। এই খামারীর মত জেলার অন্য উপজেলা গুলোতেও অনেক খামারী কোরবানীকে সামনে রেখে শত শত পশু প্রস্তুত করেছেন বলে জানা গেছে। খামারী সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাড়ে তিন বছর আগে তার ছোট খামারে সিন্দি জাতের গাভী কে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত ফিজিয়ান জাতের সিমেন ব্যবহার করেন। পরে জাত উন্ননের মাধ্যেমে এ ষাঁড় গরুটির জন্ম হয়। বাছুরটির জন্মের পর আট মাস পর্য়ন্ত প্রতিদিন পায় দশ-বার কেজি করে মায়ের দুধ পান করানো হয়েছে। পরবর্তীতে নিয়ম মেনে প্রতিদিন তিন বার দানাদার যুক্ত খাবারসহ কাঁচা ঘাস খাওয়ানো হতো। সেই সাথে দিনে তিনবার গোসলও করানো হয়েছে এবং এখনও নিয়ম মানা হচ্ছে। প্রথম দুই বছর খাবার কিছুটা কম খায়ানো হলেও শেষের এক বছর খাবারের তালিকা বাড়িয়ে দেয়া হয়। প্রতিদিন তিন বেলা সোলা,ভুসি,গম,পায়রা খড়সহ কাঁচা ঘাস খায়ানো হয় গরুটিকে। বর্তমানে ষাঁড়টির ওজন হয়েছে প্রায় ৩৫ মণ। আর কয়েক দিন পরে কোরবানীর হাটে তোলা হবে ষাড়টিকে। তিনি আরো বলেন, যেহেতু আমরা মানিকগঞ্জ জেলায় বাস করি তাই ষাঁড়টির নাম দিয়েছি মানিক আর বড় দেহের জন্য বাহাদুর। অতি যত্নে লালন-পালন করা বাহাদুরের পিছনে যে টাকা খরচ হয়েছে তাতে কম পক্ষ পনে লাখ টাকা বিক্রয় করলে লাভবান হতে পারবো। এতা বড় গরু নিয়ে হাটে যাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার । তাই কোন ক্রেতা বাড়ি থেকে নিলে আমার জন্য ভাল হয়।

মানিক-বাহাদুরকে দেখতে আসা কয়েকজন বলেন, আমরা শুনেছি ৩৫ মনের একটি ষাঁড় গরু এবার কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে লালন-পালন করা হয়েছে। তাই এতো বড় গরুটি নিজ চোখে একবার দেখার জন্য এসেছি। দেখে ভালও লেগেছে তাদের। তারা বলেন,এতো বড় গরু এর আগে কখনও দেখিনি। এই বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহাবুল ইসলাম এই প্রতিনিধিকে বলেন, খামারী সিরাজুলকে উপজেলা প্রানী সম্পদ বিভাগ সব সময় প্রয়োজনীয় পরার্মশ দিয়েছে। একই সাথে ষাড়টির জন্য সরকারী ভাবে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের মানিকগঞ্জ জেলা রাজধানীর কাছে হবার কারনে প্রায় ৩০ ভাগ পশু এই জেলা থেকে যায়। এবারও জেলায় কোরবানীর জন্য অনেক বড় বড় গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। প্রতি বছরের মত এবার এই জেলায় কোরবানীকে সামনে রেখে ১১ হাজার একশত পঞ্চাশ জন খামারী ৫৬ হাজার সাড়ে আট শত গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া দেশীয় পদ্ধিতিতে প্রস্তুত করেছেন। বেশি ওজনের পশু গুলো বিক্রয় করতে সমস্যা হলে জেলার ওয়েব সাইডে অথবা অনলাইনে বিক্রয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

শুক্রবার, ০৮ জুলাই ২০২২ , ২৪ আষাড় ১৪২৮ ২৮ জিলহজ ১৪৪৩

মানিক-বাহাদুর ৩৫ মণ

প্রতিনিধি, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)

image

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) : ৩৫ মণের ষাড় মানিক বাহাদুরের সঙ্গে খামারি -সংবাদ

মানকিগঞ্জের শিবালয়ের তেওতা গ্রামের মো.সিরাজুল ইসলাম নামের এক খামারী তার খামারে হলিস্টিন ফিজিয়ান জাতের একটি ষাড় গরু লালন-পালন করেছেন গত কয়েক বছর যাবত। সাড়ে তিন বছরের গরুর ওজন হয়েছে প্রায় ৩৫ মণ। সাড়ে পাঁচ ফিট উচ্চতা এবং সাড়ে আট ফুট দৈর্ঘ এই ষাড়টির নাম দিয়েছেন শখ করে দেওয়া নাম মানিক-বাহাদুর। উপজেলার তেওতা জমিদার বাড়ির পাশেই খামারটিতে প্রতিদিন শতশত মানুষ আসছেন মানিক-বাহাদুর-কে একনজর দেখার জন্য। কোন প্রকার মেডিসিন ছাড়া সম্পুর্ন প্রাকৃতিক খাবার খায়ানো হয়েছে গরুটিকে এমন করেই মালিক দাবি করছেন। এটিই জেলার সব থেকে বড় গরু জানা গেছে। ষাড়টিকে মোটাতাজা করার জন্য নিয়ম মেনে প্রতিদিন ছোলা,ভুসি,গম,পায়রাসহ কাঁচা ঘাস খায়ানো হয়েছে। আর কয়েক দিন পরেই কোরবানীর হাটে উঠানো হবে শখের লালন-পালন করা মানিক বাহাদুর কে। ষাড়ের মালিক তার বাহাদুরের দাম হাকাচ্ছে পনের লাখ টাকা। এই খামারীর মত জেলার অন্য উপজেলা গুলোতেও অনেক খামারী কোরবানীকে সামনে রেখে শত শত পশু প্রস্তুত করেছেন বলে জানা গেছে। খামারী সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাড়ে তিন বছর আগে তার ছোট খামারে সিন্দি জাতের গাভী কে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত ফিজিয়ান জাতের সিমেন ব্যবহার করেন। পরে জাত উন্ননের মাধ্যেমে এ ষাঁড় গরুটির জন্ম হয়। বাছুরটির জন্মের পর আট মাস পর্য়ন্ত প্রতিদিন পায় দশ-বার কেজি করে মায়ের দুধ পান করানো হয়েছে। পরবর্তীতে নিয়ম মেনে প্রতিদিন তিন বার দানাদার যুক্ত খাবারসহ কাঁচা ঘাস খাওয়ানো হতো। সেই সাথে দিনে তিনবার গোসলও করানো হয়েছে এবং এখনও নিয়ম মানা হচ্ছে। প্রথম দুই বছর খাবার কিছুটা কম খায়ানো হলেও শেষের এক বছর খাবারের তালিকা বাড়িয়ে দেয়া হয়। প্রতিদিন তিন বেলা সোলা,ভুসি,গম,পায়রা খড়সহ কাঁচা ঘাস খায়ানো হয় গরুটিকে। বর্তমানে ষাঁড়টির ওজন হয়েছে প্রায় ৩৫ মণ। আর কয়েক দিন পরে কোরবানীর হাটে তোলা হবে ষাড়টিকে। তিনি আরো বলেন, যেহেতু আমরা মানিকগঞ্জ জেলায় বাস করি তাই ষাঁড়টির নাম দিয়েছি মানিক আর বড় দেহের জন্য বাহাদুর। অতি যত্নে লালন-পালন করা বাহাদুরের পিছনে যে টাকা খরচ হয়েছে তাতে কম পক্ষ পনে লাখ টাকা বিক্রয় করলে লাভবান হতে পারবো। এতা বড় গরু নিয়ে হাটে যাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার । তাই কোন ক্রেতা বাড়ি থেকে নিলে আমার জন্য ভাল হয়।

মানিক-বাহাদুরকে দেখতে আসা কয়েকজন বলেন, আমরা শুনেছি ৩৫ মনের একটি ষাঁড় গরু এবার কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে লালন-পালন করা হয়েছে। তাই এতো বড় গরুটি নিজ চোখে একবার দেখার জন্য এসেছি। দেখে ভালও লেগেছে তাদের। তারা বলেন,এতো বড় গরু এর আগে কখনও দেখিনি। এই বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহাবুল ইসলাম এই প্রতিনিধিকে বলেন, খামারী সিরাজুলকে উপজেলা প্রানী সম্পদ বিভাগ সব সময় প্রয়োজনীয় পরার্মশ দিয়েছে। একই সাথে ষাড়টির জন্য সরকারী ভাবে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের মানিকগঞ্জ জেলা রাজধানীর কাছে হবার কারনে প্রায় ৩০ ভাগ পশু এই জেলা থেকে যায়। এবারও জেলায় কোরবানীর জন্য অনেক বড় বড় গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। প্রতি বছরের মত এবার এই জেলায় কোরবানীকে সামনে রেখে ১১ হাজার একশত পঞ্চাশ জন খামারী ৫৬ হাজার সাড়ে আট শত গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া দেশীয় পদ্ধিতিতে প্রস্তুত করেছেন। বেশি ওজনের পশু গুলো বিক্রয় করতে সমস্যা হলে জেলার ওয়েব সাইডে অথবা অনলাইনে বিক্রয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।