জেলায় জেলায় জমজমাট পশুর হাট

অনিয়মে অসন্তোষ ক্রেতা-বিক্রেতার

শেরপুরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় : নীরব প্রশাসন

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

বগুড়ার শেরপুরে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে। গত বুধবার উপজেলার বেলঘড়িয়া পশুর হাট থেকে আশি হাজার টাকায় কোরবানির একটি গরু ক্রয় করেন ধড়মোকাম গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ। এ জন্য তার কাছ থেকে হাসিল নেওয়া হয় পাঁচশত টাকা। আর ওই গরু বিক্রেতার নিকট থেকে নেওয়া হয়েছে একশ’ টাকা। তবে রসিদে লেখা হয়নি কোনো টাকার পরিমাণ। শুধু বেলঘড়িয়া হাটে নয়, উপজেলার সব পশুর হাটের একই চিত্র। ঈদুল আজহাকে ঘিরে পশুর হাটগুলোতে প্রকাশ্যেই চলছে এই অনিয়ম। বিষয়টি জানার পরও অজ্ঞাত কারণে নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে প্রশাসন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বারোদুয়ারী, ছোনকা, জামাইল ও বেলঘরিয়া এই চারটি স্থায়ী ও খামারকান্দির আমতলা অস্থায়ী হাটে পশু কেনাকাটা বেশ জমে উঠেছে। বিগত বছরের চেয়ে এবার পশুর দাম কম থাকায় ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরলেও হাটের হাসিল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। কারণ সরকার নির্ধারিত হাসিলের চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করছেন ইজাদারের লোকজন। এমনকি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকেই হাসিল আদায় করা হচ্ছে। প্রতিটি গরুর জন্য হাসিল পাঁচশত টাকা আর খাসির জন্য শতকরা দশ টাকা হারে হাসিল নেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে বিক্রেতার নিকট থেকেও লেখনির নামে একশ’ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। গত বুধবার বেলঘড়িরা হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের চারপাশেই কাঠের বেঞ্চ নিয়ে বসে আছেন ইজাদারারের নিয়োগ করা লোকজন। এরমধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই যুবক বলেন, যে গরু কিনবে তার নিকট থেকে ৫০০ টাকা এবং যে বিক্রি করবে তার কাছ থেকে ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত এসব টাকা ইজারাদার, আদায়কারী, প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করতে ব্যয় করা হয় বলে দাবি করেন তারা। এছাড়া হাটে হাসিল আদায়ে সরকারি রেটের কোনো চার্ট টাঙানো চোখে পড়েনি। এদিকে, প্রকাশ্যে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ে উপজেলা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা।

পীরগাছায় তিনগুন খাজনা আদায়

প্রতিনিধি,পীরগাছা (রংপুর)

রংপুরের পীরগাছায় পশুর হাটগুলিতে ব্যাপক পশুর আমদানি , ক্রেতা কম । বিক্রি হলেও খাজনা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ ক্রেতা বিক্রেতা ও ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নামমাত্র জরিমানা করলেও সমপূর্ণ হাটে চলছে অতিরিক্ত খাজনা নেয়ার ধুম । হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা -বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকে নেয়া হচ্ছে খাজ না । সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গরু প্রতি ৫০০ টাকা ও খাসি প্রতি ১৫০ টাকা শুধুমাত্র ক্রেতার নিকট থেকে খাজনা নেয়ার কথা থাকলেও নেয়া হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের নিকট গরু প্রতি ১০০০টাকা আর খাসি প্রতি ৪৫০/৫০০ টাকা । গত ৫জুলাই উপজেলার সর্ববৃহত পশুর হাট পাওটানা হাটে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে যান সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুসা নাসের চৌধুরি তিি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মাত্র ১০হাজার টাকা জরিমানা করেন । ওই হাটে পশু বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৫শটি। তার মোবাইল কোর্ট চলাকালিনেও খাজনা কম নেয়া হয়নি । কেউ নিয়মের কথা বললে তার উপর চড়াও হয়ে যায় হাট কমিটির লেলিয়ে লোকজন। পাওটানা হাট ইজারাদার শাহেদ বলেন হাট আমি টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য ইজারা নিয়েছি, খাজনা বেশী নিব না কম নিব সেটা আমার ব্যাপার । আমি খাজনা একটু বেশী নিচ্ছি অন্যথায় টাকা উঠবে না । নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী বলেন আমরা আবারো অভিযান চালাব এবং এবারে জরিমানার পরিমান বেশী হবে।

চুয়াডাঙ্গায় দামে খুশি খামারিরা

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গার পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। জেলার পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার ডুগডুগি, শিয়ালমারি,মুন্সীগঞ্জ এবং আলমডাঙ্গা পশুহাট দীর্ঘদিনের পুরাতন। এ সমস্ত হাটে বেশিরভাগ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারিদের সমাগম হয়। এ বছর খামারিরা পশুর আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি। পশুর দাম চড়া হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে চলছে দর কষাকষি। মৃগমারি গ্রামের গরু ব্যবসায়ী বেল্টু বলেন, শিয়ালমারি পশুহাটে ৫টি গরু এনেছিলাম সবকটি বিক্রি হয়েছে। দামও ভাল পেয়েছেন। দাম এরকম থাকলে গরু পালনকারিরা লাভবান হবেন। গত বছর করোনার কারণে গরু পালনকারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে তিনি জানান। চুয়াডাঙ্গা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা; গোলাম মোস্তফা জানান, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১১ হাজার১৬০ টি খামার রয়েছে। এ সমস্ত খামারে কোরবানি উপলক্ষে ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৭২টি পশু প্রস্তত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৩১হাজার৮৭১টি, মহিষ১৩৮টি, ছাগল ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৬টি ও ভেড়া ১ হাজার ৫২৭টি।এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮৭ হাজার ৭৯৬টি।

‘আল্লায় বন্যায় কষ্ট না দিয়া একবারে মাইরা লাইত’

প্রতিনিধি, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)

গরুর হাটে বিক্রেতা আছে নেই ক্রেতা। এমনই দৃশ্য দেখা যায় সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ গরু ছাগলের হাট বাদাঘাট বাজারে। গত ১৬ জুন ভয়াবহ বন্যায় চরম বিপর্যয়ে মানুষ। এ অঞ্চলের মানুষের ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে সারা বছরের খাবারের একমাত্র সম্বল বৈশাখ মাসে সংগ্রহ করা বোরো ধান-চালসহ তাদের গৃহপালিত পশু গরু ছাগলের খাদ্য(খড়) পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। পশু খাদ্য সংকটসহ নিজেরাও রয়েছেন চরম খাদ্য সংকটে। তাই কেউ কেউ পরিবারের খাবার জোগাতে আবার কেউ কেউ গোখাদ্য না থাকায় বাধ্য হয়েই বিক্রি করতে হাটে নিয়ে আসছেন গরু ছাগল। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি এবং গতকাল বৃহস্পতিবা শেষ হাট থাকায় বিভিন্ন এলাকার পাইকার ও খামারিরা ইতিমধ্যে হাটে কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন। তবে কোরবানিদাতা কিংবা ক্রেতাদের উপস্থিতি তেমন একটা নেই বললেই চলে । এ কারণে এখনো কোরবানির হাট জমে ওঠেনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজার পশুর হাটে গিয়ে বিক্রেতাদের ভীড় থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। সময় গরু বিক্রি করে হাটে আসা উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের ৭০ বছরের বয়সী কৃষক ছিদ্দিক মিয়ার সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, ক্রেতা না থাকায় হাটে তাই দামও হচ্ছেনা গরুর। গরু না বিক্রি করতে পারলে সারাবছর নিজেই খাবে কি? গরু কে-ই খাওয়াবে কি? মাটিতেই বসে চিন্তামগ্ন হয়ে ভাবছেন সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবে। বাবারে বন্যার পানিতে সব শেষ। ঘরবাড়ি তো গেলই। এর সাথে ঘরে থাকা ধান চালও শেষ করে দিছে পানি। মাইনসে ( মানুষে) কত দিব আর খাইমু। এর লাইজ্ঞা গরুটা নিয়া আইছি বেচতে। কিনোরা( ক্রেতা) নাই। হের লাইজ্ঞা কেউ অন্নেও দাম কইছে না। আল্লায় এইরকম পানি দিয়া আমরারে কষ্ট না দিয়া একবারে মাইরা লাইত

হাটের সবচেয়ে বড় ষাড় লাল বাবুর মালিক মুখলেস মিয়া সংবাদকে বলেন, এবার ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। আমার গরুর সাড়ে ১৪ থেকে ১৫ মন হইব। দাম হেকেছেন ৬ লাখ টাকা। আজ জন আইয়া ৪ লাখ কইছে আর কেই দাম কয়নাই।

পূর্বধলায় দাম কম বড় গরুর

প্রতিনিধি, পূর্বধলা (নেত্রকোনা)

নেত্রকোনার পূর্বধলায় আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। পূর্বধলা সদর হোগলা জারিয়া বাজারসহ দূর-দূরান্ত থেকে নিয়ে আসছে বিক্রেতারা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু ছাগল। এবার উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তাব এর প্রেক্ষিতে পূর্বধলায় ২৯ টি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট এর অনুমোদন দিয়েছে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন । ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ২৯ টি বাজারে বৈধভাবে পশু ক্রয় বিক্রয় করা যাবে। বড় গরুর দাম তুলনামূলকভাবে কম, ছাগল ও খাসির দাম গত বছরের তুলনায় বেশি বেশি লক্ষ্য করা যায় এতে খামারি ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

পশুর হাটগুলো হলো চান্দের বাজার, ভিকুনীয়া বাজার, পূর্ব ভিকুনীয়া মঠখোলা বাজার,কালিহর হাটখোলা বাজার,বাড়হা চৌরাস্তা বাজার,মৌদাম ঈদগা মাঠ ও স্কুল সংলগ্ন,বাড়হা বোর্ড বাজার,দেওটুকোন বাজার, বাড়িয়ল বাজার, জামধলা বাজার, নারায়নড়হর বাজার, সিজ কান্দি নূরানীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা বাজার, নৈগাঁও বাজার, সরিস্তলা বাজার, খলিশাউর খান পাড়া জামে মসজিদ বাজার, ফাজিলপুর বাজার, পাবই বালুচরা বাজার, লক্ষ্মীপুর বাজার, ইচুলিয়া বাজার, ভুগী কদমতলী ভাইলের বাজার, দাপুনিয়া বাজার, পাইকুড়া করোনা বাজার, শাহবাজপুর বাজার, বাইনজা বাজার, মাতাং বাজার, মাহিমা বাজার, কাটুয়ারি আদর্শ বাজার, আগিয়া বাজার, ঘাগড়া বাজার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান উপজেলা পরিষদ থেকে আগ্রহীরা নিয়ম মেনে অস্থায়ী পশুর হাট সরাসরি ডাকেম মাধ্যমে ইজারা নিয়েছেন কোন প্রকার প্রকার অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ইজারা বাতিল করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন পশুর চামড়া সরকারি বিধি মেনে ক্রয় বিক্রয় করার কথা বলেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এম এ আউয়াল বলেন মেডিকেল টিম বাজারে বাজারে উপস্থিত মনিটরিং ও প্রাণীর স্বাস্থ্যসেবা ক্ষতিকর রাসায়নিক হরমোন ব্যবহার করে মোটাতাজাকরণ গরু চিহ্নিতকরণ এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও হাটে গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসাসেবা করা হচ্ছে । ক্রেতা বিক্রেতার অনুরোধে গর্ব জাতীয় প্রাণী সম্পদ বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ সেবা টিমের মাধ্যমে প্রদান করে যাচ্ছি। বিগত বছরের তুলনায় গরুর দাম সহনীয় মাত্রায় রয়েছে এ কারণে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই খুশি। এবছর ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি । বড় গরুর দাম তুলনামূলকভাবে কম, ছাগল ও খাসির দাম গত বছরের তুলনায় বেশি বেশি লক্ষ্য করা যায় এতে খামারি ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। বিদেশি জাতের গরুর চাহিদা বাজারে কম । চাহিদামত গরু ক্রেতারা কিনতে পাড়ায় সবাই খুশি ।বাজারে ঘুরে দেখা যায় ৮০ থেকে ১ লক্ষ টাকা মূল্যেও হরু ক্রয়-বিক্রয় বেশি হচ্ছে বিক্রেতা সমর,হেলাল জানান এবার গরু বিক্রয় করে প্রয়োজনীয় দাম পেয়েছি। আবার কয়েক জন খামারী জানান খাদ্য সামগ্রীর দাম বেশী সে তুলনায় গরুর দাম কম।

শুক্রবার, ০৮ জুলাই ২০২২ , ২৪ আষাড় ১৪২৮ ২৮ জিলহজ ১৪৪৩

জেলায় জেলায় জমজমাট পশুর হাট

অনিয়মে অসন্তোষ ক্রেতা-বিক্রেতার

image

পূর্বধলা (নেত্রকোনা) : হাটে পর্যাপ্ত গরু । ভালো দামে খুশি খামারিরা -সংবাদ

শেরপুরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় : নীরব প্রশাসন

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

বগুড়ার শেরপুরে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে। গত বুধবার উপজেলার বেলঘড়িয়া পশুর হাট থেকে আশি হাজার টাকায় কোরবানির একটি গরু ক্রয় করেন ধড়মোকাম গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ। এ জন্য তার কাছ থেকে হাসিল নেওয়া হয় পাঁচশত টাকা। আর ওই গরু বিক্রেতার নিকট থেকে নেওয়া হয়েছে একশ’ টাকা। তবে রসিদে লেখা হয়নি কোনো টাকার পরিমাণ। শুধু বেলঘড়িয়া হাটে নয়, উপজেলার সব পশুর হাটের একই চিত্র। ঈদুল আজহাকে ঘিরে পশুর হাটগুলোতে প্রকাশ্যেই চলছে এই অনিয়ম। বিষয়টি জানার পরও অজ্ঞাত কারণে নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে প্রশাসন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বারোদুয়ারী, ছোনকা, জামাইল ও বেলঘরিয়া এই চারটি স্থায়ী ও খামারকান্দির আমতলা অস্থায়ী হাটে পশু কেনাকাটা বেশ জমে উঠেছে। বিগত বছরের চেয়ে এবার পশুর দাম কম থাকায় ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরলেও হাটের হাসিল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। কারণ সরকার নির্ধারিত হাসিলের চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করছেন ইজাদারের লোকজন। এমনকি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকেই হাসিল আদায় করা হচ্ছে। প্রতিটি গরুর জন্য হাসিল পাঁচশত টাকা আর খাসির জন্য শতকরা দশ টাকা হারে হাসিল নেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে বিক্রেতার নিকট থেকেও লেখনির নামে একশ’ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। গত বুধবার বেলঘড়িরা হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটের চারপাশেই কাঠের বেঞ্চ নিয়ে বসে আছেন ইজাদারারের নিয়োগ করা লোকজন। এরমধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই যুবক বলেন, যে গরু কিনবে তার নিকট থেকে ৫০০ টাকা এবং যে বিক্রি করবে তার কাছ থেকে ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত এসব টাকা ইজারাদার, আদায়কারী, প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করতে ব্যয় করা হয় বলে দাবি করেন তারা। এছাড়া হাটে হাসিল আদায়ে সরকারি রেটের কোনো চার্ট টাঙানো চোখে পড়েনি। এদিকে, প্রকাশ্যে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ে উপজেলা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা।

পীরগাছায় তিনগুন খাজনা আদায়

প্রতিনিধি,পীরগাছা (রংপুর)

রংপুরের পীরগাছায় পশুর হাটগুলিতে ব্যাপক পশুর আমদানি , ক্রেতা কম । বিক্রি হলেও খাজনা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ ক্রেতা বিক্রেতা ও ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নামমাত্র জরিমানা করলেও সমপূর্ণ হাটে চলছে অতিরিক্ত খাজনা নেয়ার ধুম । হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা -বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকে নেয়া হচ্ছে খাজ না । সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গরু প্রতি ৫০০ টাকা ও খাসি প্রতি ১৫০ টাকা শুধুমাত্র ক্রেতার নিকট থেকে খাজনা নেয়ার কথা থাকলেও নেয়া হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের নিকট গরু প্রতি ১০০০টাকা আর খাসি প্রতি ৪৫০/৫০০ টাকা । গত ৫জুলাই উপজেলার সর্ববৃহত পশুর হাট পাওটানা হাটে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে যান সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুসা নাসের চৌধুরি তিি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মাত্র ১০হাজার টাকা জরিমানা করেন । ওই হাটে পশু বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৫শটি। তার মোবাইল কোর্ট চলাকালিনেও খাজনা কম নেয়া হয়নি । কেউ নিয়মের কথা বললে তার উপর চড়াও হয়ে যায় হাট কমিটির লেলিয়ে লোকজন। পাওটানা হাট ইজারাদার শাহেদ বলেন হাট আমি টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য ইজারা নিয়েছি, খাজনা বেশী নিব না কম নিব সেটা আমার ব্যাপার । আমি খাজনা একটু বেশী নিচ্ছি অন্যথায় টাকা উঠবে না । নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরী বলেন আমরা আবারো অভিযান চালাব এবং এবারে জরিমানার পরিমান বেশী হবে।

চুয়াডাঙ্গায় দামে খুশি খামারিরা

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গার পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। জেলার পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার ডুগডুগি, শিয়ালমারি,মুন্সীগঞ্জ এবং আলমডাঙ্গা পশুহাট দীর্ঘদিনের পুরাতন। এ সমস্ত হাটে বেশিরভাগ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারিদের সমাগম হয়। এ বছর খামারিরা পশুর আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি। পশুর দাম চড়া হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে চলছে দর কষাকষি। মৃগমারি গ্রামের গরু ব্যবসায়ী বেল্টু বলেন, শিয়ালমারি পশুহাটে ৫টি গরু এনেছিলাম সবকটি বিক্রি হয়েছে। দামও ভাল পেয়েছেন। দাম এরকম থাকলে গরু পালনকারিরা লাভবান হবেন। গত বছর করোনার কারণে গরু পালনকারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে তিনি জানান। চুয়াডাঙ্গা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা; গোলাম মোস্তফা জানান, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১১ হাজার১৬০ টি খামার রয়েছে। এ সমস্ত খামারে কোরবানি উপলক্ষে ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৭২টি পশু প্রস্তত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ৩১হাজার৮৭১টি, মহিষ১৩৮টি, ছাগল ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৬টি ও ভেড়া ১ হাজার ৫২৭টি।এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮৭ হাজার ৭৯৬টি।

‘আল্লায় বন্যায় কষ্ট না দিয়া একবারে মাইরা লাইত’

প্রতিনিধি, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)

গরুর হাটে বিক্রেতা আছে নেই ক্রেতা। এমনই দৃশ্য দেখা যায় সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ গরু ছাগলের হাট বাদাঘাট বাজারে। গত ১৬ জুন ভয়াবহ বন্যায় চরম বিপর্যয়ে মানুষ। এ অঞ্চলের মানুষের ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে সারা বছরের খাবারের একমাত্র সম্বল বৈশাখ মাসে সংগ্রহ করা বোরো ধান-চালসহ তাদের গৃহপালিত পশু গরু ছাগলের খাদ্য(খড়) পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। পশু খাদ্য সংকটসহ নিজেরাও রয়েছেন চরম খাদ্য সংকটে। তাই কেউ কেউ পরিবারের খাবার জোগাতে আবার কেউ কেউ গোখাদ্য না থাকায় বাধ্য হয়েই বিক্রি করতে হাটে নিয়ে আসছেন গরু ছাগল। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি এবং গতকাল বৃহস্পতিবা শেষ হাট থাকায় বিভিন্ন এলাকার পাইকার ও খামারিরা ইতিমধ্যে হাটে কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন। তবে কোরবানিদাতা কিংবা ক্রেতাদের উপস্থিতি তেমন একটা নেই বললেই চলে । এ কারণে এখনো কোরবানির হাট জমে ওঠেনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজার পশুর হাটে গিয়ে বিক্রেতাদের ভীড় থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। সময় গরু বিক্রি করে হাটে আসা উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের ৭০ বছরের বয়সী কৃষক ছিদ্দিক মিয়ার সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, ক্রেতা না থাকায় হাটে তাই দামও হচ্ছেনা গরুর। গরু না বিক্রি করতে পারলে সারাবছর নিজেই খাবে কি? গরু কে-ই খাওয়াবে কি? মাটিতেই বসে চিন্তামগ্ন হয়ে ভাবছেন সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবে। বাবারে বন্যার পানিতে সব শেষ। ঘরবাড়ি তো গেলই। এর সাথে ঘরে থাকা ধান চালও শেষ করে দিছে পানি। মাইনসে ( মানুষে) কত দিব আর খাইমু। এর লাইজ্ঞা গরুটা নিয়া আইছি বেচতে। কিনোরা( ক্রেতা) নাই। হের লাইজ্ঞা কেউ অন্নেও দাম কইছে না। আল্লায় এইরকম পানি দিয়া আমরারে কষ্ট না দিয়া একবারে মাইরা লাইত

হাটের সবচেয়ে বড় ষাড় লাল বাবুর মালিক মুখলেস মিয়া সংবাদকে বলেন, এবার ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। আমার গরুর সাড়ে ১৪ থেকে ১৫ মন হইব। দাম হেকেছেন ৬ লাখ টাকা। আজ জন আইয়া ৪ লাখ কইছে আর কেই দাম কয়নাই।

পূর্বধলায় দাম কম বড় গরুর

প্রতিনিধি, পূর্বধলা (নেত্রকোনা)

নেত্রকোনার পূর্বধলায় আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। পূর্বধলা সদর হোগলা জারিয়া বাজারসহ দূর-দূরান্ত থেকে নিয়ে আসছে বিক্রেতারা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু ছাগল। এবার উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তাব এর প্রেক্ষিতে পূর্বধলায় ২৯ টি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট এর অনুমোদন দিয়েছে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন । ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ২৯ টি বাজারে বৈধভাবে পশু ক্রয় বিক্রয় করা যাবে। বড় গরুর দাম তুলনামূলকভাবে কম, ছাগল ও খাসির দাম গত বছরের তুলনায় বেশি বেশি লক্ষ্য করা যায় এতে খামারি ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

পশুর হাটগুলো হলো চান্দের বাজার, ভিকুনীয়া বাজার, পূর্ব ভিকুনীয়া মঠখোলা বাজার,কালিহর হাটখোলা বাজার,বাড়হা চৌরাস্তা বাজার,মৌদাম ঈদগা মাঠ ও স্কুল সংলগ্ন,বাড়হা বোর্ড বাজার,দেওটুকোন বাজার, বাড়িয়ল বাজার, জামধলা বাজার, নারায়নড়হর বাজার, সিজ কান্দি নূরানীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা বাজার, নৈগাঁও বাজার, সরিস্তলা বাজার, খলিশাউর খান পাড়া জামে মসজিদ বাজার, ফাজিলপুর বাজার, পাবই বালুচরা বাজার, লক্ষ্মীপুর বাজার, ইচুলিয়া বাজার, ভুগী কদমতলী ভাইলের বাজার, দাপুনিয়া বাজার, পাইকুড়া করোনা বাজার, শাহবাজপুর বাজার, বাইনজা বাজার, মাতাং বাজার, মাহিমা বাজার, কাটুয়ারি আদর্শ বাজার, আগিয়া বাজার, ঘাগড়া বাজার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান উপজেলা পরিষদ থেকে আগ্রহীরা নিয়ম মেনে অস্থায়ী পশুর হাট সরাসরি ডাকেম মাধ্যমে ইজারা নিয়েছেন কোন প্রকার প্রকার অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ইজারা বাতিল করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন পশুর চামড়া সরকারি বিধি মেনে ক্রয় বিক্রয় করার কথা বলেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এম এ আউয়াল বলেন মেডিকেল টিম বাজারে বাজারে উপস্থিত মনিটরিং ও প্রাণীর স্বাস্থ্যসেবা ক্ষতিকর রাসায়নিক হরমোন ব্যবহার করে মোটাতাজাকরণ গরু চিহ্নিতকরণ এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও হাটে গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসাসেবা করা হচ্ছে । ক্রেতা বিক্রেতার অনুরোধে গর্ব জাতীয় প্রাণী সম্পদ বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ সেবা টিমের মাধ্যমে প্রদান করে যাচ্ছি। বিগত বছরের তুলনায় গরুর দাম সহনীয় মাত্রায় রয়েছে এ কারণে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই খুশি। এবছর ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি । বড় গরুর দাম তুলনামূলকভাবে কম, ছাগল ও খাসির দাম গত বছরের তুলনায় বেশি বেশি লক্ষ্য করা যায় এতে খামারি ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। বিদেশি জাতের গরুর চাহিদা বাজারে কম । চাহিদামত গরু ক্রেতারা কিনতে পাড়ায় সবাই খুশি ।বাজারে ঘুরে দেখা যায় ৮০ থেকে ১ লক্ষ টাকা মূল্যেও হরু ক্রয়-বিক্রয় বেশি হচ্ছে বিক্রেতা সমর,হেলাল জানান এবার গরু বিক্রয় করে প্রয়োজনীয় দাম পেয়েছি। আবার কয়েক জন খামারী জানান খাদ্য সামগ্রীর দাম বেশী সে তুলনায় গরুর দাম কম।