চিঠি : মনের পশুকে কোরবানি দেয়া জরুরি

মনের পশুকে কোরবানি দেয়া জরুরি

অহংকার, জাত ভেদাভেদ, সম্পদের প্রাচুর্যের পিছনে ফেলে মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের সুযোগ নিয়ে আসে কোরবানি। আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য কোরবানির আয়োজন করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। কোরবানির এই বিশেষ দিন ঈদুল আজহা নামেও বহুল প্রচলিত। নির্দিষ্ট জন্তুকে একমাত্র আল্লাহ পাকের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত নিয়মে মহান আল্লাহ পাকের নামে জবেহ করাই হলো কোরবানি।

কিন্তু কোরবানির ক্ষেত্রেও দেখা যায় ব্যক্তিক্রমী দৃশ্য। এক শ্রেণীর মানুষ কোরবানির নামে প্রতিযোগিতা ও প্রতিহিংসায় মেতে ওঠে। কার চেয়ে কে কত বড় এবং বেশি টাকায় গরু-মহিষ কিনতে পারে তা নিয়ে হয় স্নায়ুযুদ্ধ। এলাকার ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তির লক্ষ্য থাকে তার চেয়ে ওপরে কেউ যেন কোরবানির পশু ক্রয় করতে না পারে। তাহলে তার আত্মসম্মানে আঘাত হানবে। এই ব্যাপারটা একদম কোরবানির প্রকৃত লক্ষ্যের বিপরীত এবং সাংঘর্ষিক। কোরবানি হতে হবে একমাত্র মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। তাই কোরবানির দেওয়ার আগে মনের পশুকে কোরবানি দেওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরি।

জুবায়েদ মোস্তফা

চামড়া শিল্পে সুদৃষ্টি প্রয়োজন

মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে অসংখ্য পশু কোরবানি হয়ে থাকে। চামড়া শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় অর্ধেক জোগান এ সময় আসে। চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য দেশের রপ্তানি পণ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে আছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত এটি।

১৯৪০ সালে নারায়ণগঞ্জে প্রথম ট্যনারি স্থাপন করেন রণদাপ্রসাদ সাহা। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০০টিরও বেশি ট্যনারি ইউনিট রয়েছে। দিন দিন ট্যানারি ইউনিট বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ট্যনারি ইউনিটগুলোর উপর অসংখ্য মানুষের জীবিকা নির্বাহমান। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কোরবানির পর চামড়া বিক্রির যথাযথ ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় পশুর চামড়া মাটির নিচে পুঁতে ফেলারও ঘটনা ঘটেছে। চামড়া সংরক্ষণের অভাবে অনেক চামড়া পচে নষ্ট হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে।

চামড়া বিক্রির যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এখন চামড়া ক্রয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিয়ে প্রতিবছরই প্রশ্ন উঠছে। প্রতিবছরের ন্যায় সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও এ দামে বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। এ বছরও যেন পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে চামড়া শিল্পের উন্নতিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে, চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এবং চামড়ার যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

মাহমুদুল হক হাসান

আরও খবর

শুক্রবার, ০৮ জুলাই ২০২২ , ২৪ আষাড় ১৪২৮ ২৮ জিলহজ ১৪৪৩

চিঠি : মনের পশুকে কোরবানি দেয়া জরুরি

মনের পশুকে কোরবানি দেয়া জরুরি

অহংকার, জাত ভেদাভেদ, সম্পদের প্রাচুর্যের পিছনে ফেলে মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের সুযোগ নিয়ে আসে কোরবানি। আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য কোরবানির আয়োজন করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। কোরবানির এই বিশেষ দিন ঈদুল আজহা নামেও বহুল প্রচলিত। নির্দিষ্ট জন্তুকে একমাত্র আল্লাহ পাকের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত নিয়মে মহান আল্লাহ পাকের নামে জবেহ করাই হলো কোরবানি।

কিন্তু কোরবানির ক্ষেত্রেও দেখা যায় ব্যক্তিক্রমী দৃশ্য। এক শ্রেণীর মানুষ কোরবানির নামে প্রতিযোগিতা ও প্রতিহিংসায় মেতে ওঠে। কার চেয়ে কে কত বড় এবং বেশি টাকায় গরু-মহিষ কিনতে পারে তা নিয়ে হয় স্নায়ুযুদ্ধ। এলাকার ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তির লক্ষ্য থাকে তার চেয়ে ওপরে কেউ যেন কোরবানির পশু ক্রয় করতে না পারে। তাহলে তার আত্মসম্মানে আঘাত হানবে। এই ব্যাপারটা একদম কোরবানির প্রকৃত লক্ষ্যের বিপরীত এবং সাংঘর্ষিক। কোরবানি হতে হবে একমাত্র মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। তাই কোরবানির দেওয়ার আগে মনের পশুকে কোরবানি দেওয়া সবচেয়ে বেশি জরুরি।

জুবায়েদ মোস্তফা

চামড়া শিল্পে সুদৃষ্টি প্রয়োজন

মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে অসংখ্য পশু কোরবানি হয়ে থাকে। চামড়া শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় অর্ধেক জোগান এ সময় আসে। চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য দেশের রপ্তানি পণ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে আছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত এটি।

১৯৪০ সালে নারায়ণগঞ্জে প্রথম ট্যনারি স্থাপন করেন রণদাপ্রসাদ সাহা। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০০টিরও বেশি ট্যনারি ইউনিট রয়েছে। দিন দিন ট্যানারি ইউনিট বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ট্যনারি ইউনিটগুলোর উপর অসংখ্য মানুষের জীবিকা নির্বাহমান। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কোরবানির পর চামড়া বিক্রির যথাযথ ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় পশুর চামড়া মাটির নিচে পুঁতে ফেলারও ঘটনা ঘটেছে। চামড়া সংরক্ষণের অভাবে অনেক চামড়া পচে নষ্ট হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে।

চামড়া বিক্রির যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এখন চামড়া ক্রয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিয়ে প্রতিবছরই প্রশ্ন উঠছে। প্রতিবছরের ন্যায় সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও এ দামে বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। এ বছরও যেন পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে চামড়া শিল্পের উন্নতিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে, চামড়া ও চামড়াজাত দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এবং চামড়ার যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

মাহমুদুল হক হাসান