সুরের জাদুকর আলম খান

যার সুরে গান গেয়ে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন বহুশিল্পী

বাংলা গানের কিংবদন্তি সুরকার, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক আলম খান আর নেই। অসংখ্য কালজয়ী গানের সুরকার বরেণ্য এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গতকাল বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে রাজধানী শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে সংগীত শিল্পী আরমান খান।

পপসম্রাট খ্যাত আজম খানের আপন বড় ভাই আলম খান দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। ২০১১ সালে আলম খানের ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে। দীর্ঘদিন দেশ বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার।

আলম খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এবং দ্বিতীয় জানাজা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) সম্পন্ন হয়। এরপর আলম খানের মরদেহ নেয়া হয় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত মসজিদুল আউলিয়া হজরত খাজা শাহ মোজাম্মেল হক (র.) প্রাঙ্গণে। সেখানে জান্নাতুল ফেরদৌস কমপ্লেক্সে স্ত্রীর কবরের পাশেই আজ দাফন করা হবে তাকে।

সংগীতজ্ঞ আলম খানের পুরো নাম খুরশিদ আলম খান। অসংখ্যা জনপ্রিয় গানের এই সুরকার ১৯৪৪ সালে সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার ও মা জোবেদা খানম ছিলেন গৃহিণী।

১৯৬৩ সালে রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক ও সুরকার বিভাগে সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।

বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে আলম খানকে বলা হয় সুরের জাদুকর। তার সুরে গান গেয়ে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন অনেক শিল্পী। আলম খানের সুর ও সংগীতে শ্রোতাপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে, ‘জীবনের গল্প বাকি আছে অল্প’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘সাথীরে যেও না কখনো দূরে’, ‘কাল তো ছিলাম ভালো’, ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’ ‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘চাঁদের সাথে দেব না’ ইত্যাদি।

টেলিভিশনের নাটকেও দারুণ সফল ছিলেন আলম খান। আবদুল্লাহ আল মামুনের মঞ্চনাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘ইডিয়ট’সহ বেশ কিছু নাটকের সংগীত পরিচালনা করেন তিনি। তিনি সর্বশেষ এ টি এম শামসুজ্জামান পরিচালিত ‘এবাদত’ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

image
আরও খবর
বাঁচানো গেল না জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে
নিষেধাজ্ঞা থাকায় রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস আমদানি করবে না সরকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শিনজো আবে’র মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক
‘নাট্যজগৎ প্রিয় আম্মাকে হারালেন’
ঘিওরে অর্ধকোটি টাকার সরকারি জমি উদ্ধার, আশ্রয় প্রকল্পের ঘর নির্মাণ হবে
রসিক দুর্নীতি তদন্তে দুদক অভিযানে নেমেছে
গতকাল ভোরে ঠাসা যাত্রী নিয়ে ১৪টি বিশালাকৃতির লঞ্চ বরিশাল এসেছে
জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার অভিনব কৌশলে গাড়ি ছিনতাই
খুলনায় ফেরিঘাট ইজারা নিয়ে মুখোমুখি আ.লীগ নেতারা
সাংবাদিক রুবেল হত্যার প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

শনিবার, ০৯ জুলাই ২০২২ , ২৫ আষাড় ১৪২৮ ২৯ জিলহজ ১৪৪৩

সুরের জাদুকর আলম খান

যার সুরে গান গেয়ে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন বহুশিল্পী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

বাংলা গানের কিংবদন্তি সুরকার, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক আলম খান আর নেই। অসংখ্য কালজয়ী গানের সুরকার বরেণ্য এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গতকাল বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে রাজধানী শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে সংগীত শিল্পী আরমান খান।

পপসম্রাট খ্যাত আজম খানের আপন বড় ভাই আলম খান দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। ২০১১ সালে আলম খানের ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে। দীর্ঘদিন দেশ বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার।

আলম খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এবং দ্বিতীয় জানাজা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) সম্পন্ন হয়। এরপর আলম খানের মরদেহ নেয়া হয় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত মসজিদুল আউলিয়া হজরত খাজা শাহ মোজাম্মেল হক (র.) প্রাঙ্গণে। সেখানে জান্নাতুল ফেরদৌস কমপ্লেক্সে স্ত্রীর কবরের পাশেই আজ দাফন করা হবে তাকে।

সংগীতজ্ঞ আলম খানের পুরো নাম খুরশিদ আলম খান। অসংখ্যা জনপ্রিয় গানের এই সুরকার ১৯৪৪ সালে সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার ও মা জোবেদা খানম ছিলেন গৃহিণী।

১৯৬৩ সালে রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক ও সুরকার বিভাগে সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।

বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে আলম খানকে বলা হয় সুরের জাদুকর। তার সুরে গান গেয়ে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন অনেক শিল্পী। আলম খানের সুর ও সংগীতে শ্রোতাপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে, ‘জীবনের গল্প বাকি আছে অল্প’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘ভালোবেসে গেলাম শুধু’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘সাথীরে যেও না কখনো দূরে’, ‘কাল তো ছিলাম ভালো’, ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’ ‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘চাঁদের সাথে দেব না’ ইত্যাদি।

টেলিভিশনের নাটকেও দারুণ সফল ছিলেন আলম খান। আবদুল্লাহ আল মামুনের মঞ্চনাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘ইডিয়ট’সহ বেশ কিছু নাটকের সংগীত পরিচালনা করেন তিনি। তিনি সর্বশেষ এ টি এম শামসুজ্জামান পরিচালিত ‘এবাদত’ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।