এ কেমন আচরণ!

কয়েক দিন আগে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেনে ভ্রমণ করছিলাম। সিটে বসে আমি আমার ফোন ব্যবহার করছি। চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ ফিল্মি স্টাইলে একজন লোক আমার কাছে এসে মোবাইলটা এক প্রকার কেড়েই নিলেন। বললেন, মোবাইলটা দেখি? আমি তাকে বললাম, কে আপনি? মোবাইল কেন দিব?

তারপর তিনি বললেন, আগে মোবাইল নিই, বাকিটা পরে বলছি। আমি তর্ক না করে তাকে ফোনটা দিয়ে দিলাম। তিনি আমাকে প্রশ্ন করলেন, বাড়ি কোথায়? যাচ্ছি কোথায়? পরিচয় কী? আমি তাকে সব প্রশ্নের উত্তর দিলাম। ইতোমধ্যে তিনি আমার ফোনের ইনবক্স, ফেসবুক মেসেঞ্জার, গ্যালারির যাবতীয় ছবি ও ভিডিওসহ সবকিছু দেখলেন। আমি তাকে আবারও জিজ্ঞাসা করলাম, কে আপনি?

তারপর তিনি চোখ রাঙিয়ে আমার দিকে তাকালেন। সবকিছু চেক করা শেষ হলে তিনি আমাকে ফোন দিয়ে দিলেন। আমি আবারও তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কে আপনি? পরিচয় তো দেবেন। তারপর তিনি পকেট থেকে পরিচয়পত্র বের করে জানালেন তিনি র‌্যাব। আমি তাকে বললাম, আপনি পরিচয় দিলে তো আমি নিজেই আপনাকে সহযোগিতা করতাম।

কারও আচরণ বা গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ বা তল্লাশি করতেই পারে। সিআরপিসির ১০৩ ও ১৬৫ ধারা অনুযায়ী কমপক্ষে দুজন গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে তল্লাশি চালানোর আইনি অধিকার পুলিশের বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে।

নিয়ম মেনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাকে তল্লাশি করতে চাইলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে আইনত বাধ্য। কিন্তু এমন বাজেভাবে কাউকে হেনস্থা করার অধিকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সংবিধান বা আইন প্রদান করেনি। কাউকে সন্দেহভাজন মনে হলে জিজ্ঞাসাবাদ করার পূর্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পরিচয় দিয়ে ন্যূনতম ভদ্রতা প্রদর্শনের নির্দেশনা প্রদানের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি।

আখতার হোসেন আজাদ

শনিবার, ০৯ জুলাই ২০২২ , ২৫ আষাড় ১৪২৮ ২৯ জিলহজ ১৪৪৩

এ কেমন আচরণ!

কয়েক দিন আগে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেনে ভ্রমণ করছিলাম। সিটে বসে আমি আমার ফোন ব্যবহার করছি। চলন্ত ট্রেনে হঠাৎ ফিল্মি স্টাইলে একজন লোক আমার কাছে এসে মোবাইলটা এক প্রকার কেড়েই নিলেন। বললেন, মোবাইলটা দেখি? আমি তাকে বললাম, কে আপনি? মোবাইল কেন দিব?

তারপর তিনি বললেন, আগে মোবাইল নিই, বাকিটা পরে বলছি। আমি তর্ক না করে তাকে ফোনটা দিয়ে দিলাম। তিনি আমাকে প্রশ্ন করলেন, বাড়ি কোথায়? যাচ্ছি কোথায়? পরিচয় কী? আমি তাকে সব প্রশ্নের উত্তর দিলাম। ইতোমধ্যে তিনি আমার ফোনের ইনবক্স, ফেসবুক মেসেঞ্জার, গ্যালারির যাবতীয় ছবি ও ভিডিওসহ সবকিছু দেখলেন। আমি তাকে আবারও জিজ্ঞাসা করলাম, কে আপনি?

তারপর তিনি চোখ রাঙিয়ে আমার দিকে তাকালেন। সবকিছু চেক করা শেষ হলে তিনি আমাকে ফোন দিয়ে দিলেন। আমি আবারও তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কে আপনি? পরিচয় তো দেবেন। তারপর তিনি পকেট থেকে পরিচয়পত্র বের করে জানালেন তিনি র‌্যাব। আমি তাকে বললাম, আপনি পরিচয় দিলে তো আমি নিজেই আপনাকে সহযোগিতা করতাম।

কারও আচরণ বা গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ বা তল্লাশি করতেই পারে। সিআরপিসির ১০৩ ও ১৬৫ ধারা অনুযায়ী কমপক্ষে দুজন গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে তল্লাশি চালানোর আইনি অধিকার পুলিশের বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে।

নিয়ম মেনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাকে তল্লাশি করতে চাইলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে আইনত বাধ্য। কিন্তু এমন বাজেভাবে কাউকে হেনস্থা করার অধিকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সংবিধান বা আইন প্রদান করেনি। কাউকে সন্দেহভাজন মনে হলে জিজ্ঞাসাবাদ করার পূর্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পরিচয় দিয়ে ন্যূনতম ভদ্রতা প্রদর্শনের নির্দেশনা প্রদানের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি।

আখতার হোসেন আজাদ