শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০২২, ৩১ আষাঢ ১৪২৯ ১৬ জিলহজ ১৪৪৩

সাইনবোর্ড সর্বস্ব এতিমখানা বরাদ্দের অর্থ হরিলুট

এতিমখানার সাইনবোর্ড ব্যাবহার করে দীর্ঘদিন সরকারী বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ইসমাইলিয়া দারুল উলুম এতিমখানা ও মাদ্রাসার পরিচালক মাও. ইউছুব আলীর বিরুদ্ধে। জানা যায় ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউপির কারিরহাট গ্রামে মাদ্রাসার কাজে ব্যবহৃত একটি পুরাতন টিনের ঘড়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে রাখা হয়েছে। এখানে কোন এতিম নেই, শুধুমাত্র খাতায় নাম রয়েছে।

এই এতিম খানার নামে কোন স্থাপনা না থাকার পরও বিগত কয়েক বছর যাবত সরকারী বরাদ্দ পেতে কোন সমস্যা হচ্ছে না, তবে কিছু দিন যাবত মাদ্রাসার আবাসিক রুমের সামনে একটা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এই প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ-সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের অর্থ, উপঢৌকন বা এলাকাভিত্তিক মৌসুমী শস্য তোলা হয়ে থাকে, এমন কী হাট-বাজার ও সাধারণ লোকের কাছ থেকেও এতিমদের নামে অর্থ-সামগ্রী তুলে নিয়ে আত্মসাত করছে মাও. ইউছুব। এলাকাবাসীর প্রশ্ন যেহেতু বিধি-বিধান অনুযায়ী কোন এতিম থাকে না, সেহেতু সমস্ত কিছুই আত্মসাত করছে এ

এতিমদের নামে। সরকারী বরাদ্দের পুরো অর্থ মাসে(২০ হাজার) টাকা আত্মসাত করে চলছে দীর্ঘদিন যাবত।

আরো জানা যায় এই এতিমখানায় যে কমিটি দেয়া আছে তার বেশিরভাগ সদস্যই তার পরিবারভুক্ত, আর বাইরে যারা আছেন, তারা এর কিছুই জানে না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান থেকে এতিমদের নামে বরাদ্দ এনে তা নিজেই আত্মসাত করেন বলেই জানা যায়।

এছাড়া বেশিরভাগ সময় মাও. ইউছুব সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করেই চালিয়ে দেন বলেই জানা যায়।

সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তার সঙ্গে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার ছাত্রাবাসের একপাশে এতিমখানার একটা সাইনবোর্ড তার পাশেই মাদ্রাসার আরও একটা সাইনবোর্ড। ৩-৪ জন শিশু বাইর খেকে ভেতরে ঢুকল। জানা গেল তারা কেউ এতিম না। সমাজকল্যাণ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করলে তত্ত্বাবধায়ক বলেন, অনেক এতিম আছে, বাইরে ঘুরতে গেছে।

পরবর্তীতে রান্নার আয়োজন দেখতে চাইলে কর্মকর্তার সামনে যা নিয়ে আসা হয়, তা কেবলই ২-৩ জন বাচ্চার খাবার বলেই অনুমেয় হয়, এবং তরকারি খুবই নিম্নমানের।

এই এতিম খানার পরিচালক মাও. ইউছুব একজন সুচতুর লোক,অনিয়ম, সেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যসহ এমন কোন কর্ম নেই যা তিনি করেন না। জানা যায় কিছু দিন আগেও তার মাদ্রাসার একজন শিক্ষক, ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করায়, ঘটনা জানাজানি হলে উক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করে এবং বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে বরখাস্তের আদেশ উড্ড্রো করে। অথচ কাজের কাজ হলো উক্ত ছাত্রীর মাদ্রাসায় পড়া বন্ধ হলো।

ভুয়া এতিমদের নামে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেই চলছে। অপরদিকে এই উপজেলায় অনুমোদিত প্রায় ১৭টি এতিমখানা রয়েছে। এর ২-১টি ব্যতীত প্রায় সবগুলো এতিমখানার একই চিত্র বলেই ভাবা যায়। অথচ এতিমখানার নাম দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি বরাদ্দসহ বিভিন্ন অনুদান ও অর্থ।

সংশ্লিষ্ট অনেকেরই প্রশ্ন এতিম না থাকায় কীভাবে এতিমদের নামে বরাদ্দ পেয়ে থাকে যা কারো বোধগম্য নয়। এই নিয়ে উপজেলা সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই নিয়ে সচেতনমহলে সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ্যের সুদৃষ্টি কামনা করছে।

শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০২২ , ৩১ আষাঢ ১৪২৯ ১৬ জিলহজ ১৪৪৩

সাইনবোর্ড সর্বস্ব এতিমখানা বরাদ্দের অর্থ হরিলুট

প্রতিনিধি, সদরপুর (ফরিদপুর)

এতিমখানার সাইনবোর্ড ব্যাবহার করে দীর্ঘদিন সরকারী বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ইসমাইলিয়া দারুল উলুম এতিমখানা ও মাদ্রাসার পরিচালক মাও. ইউছুব আলীর বিরুদ্ধে। জানা যায় ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউপির কারিরহাট গ্রামে মাদ্রাসার কাজে ব্যবহৃত একটি পুরাতন টিনের ঘড়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে রাখা হয়েছে। এখানে কোন এতিম নেই, শুধুমাত্র খাতায় নাম রয়েছে।

এই এতিম খানার নামে কোন স্থাপনা না থাকার পরও বিগত কয়েক বছর যাবত সরকারী বরাদ্দ পেতে কোন সমস্যা হচ্ছে না, তবে কিছু দিন যাবত মাদ্রাসার আবাসিক রুমের সামনে একটা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এই প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ-সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের অর্থ, উপঢৌকন বা এলাকাভিত্তিক মৌসুমী শস্য তোলা হয়ে থাকে, এমন কী হাট-বাজার ও সাধারণ লোকের কাছ থেকেও এতিমদের নামে অর্থ-সামগ্রী তুলে নিয়ে আত্মসাত করছে মাও. ইউছুব। এলাকাবাসীর প্রশ্ন যেহেতু বিধি-বিধান অনুযায়ী কোন এতিম থাকে না, সেহেতু সমস্ত কিছুই আত্মসাত করছে এ

এতিমদের নামে। সরকারী বরাদ্দের পুরো অর্থ মাসে(২০ হাজার) টাকা আত্মসাত করে চলছে দীর্ঘদিন যাবত।

আরো জানা যায় এই এতিমখানায় যে কমিটি দেয়া আছে তার বেশিরভাগ সদস্যই তার পরিবারভুক্ত, আর বাইরে যারা আছেন, তারা এর কিছুই জানে না। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান থেকে এতিমদের নামে বরাদ্দ এনে তা নিজেই আত্মসাত করেন বলেই জানা যায়।

এছাড়া বেশিরভাগ সময় মাও. ইউছুব সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করেই চালিয়ে দেন বলেই জানা যায়।

সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তার সঙ্গে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার ছাত্রাবাসের একপাশে এতিমখানার একটা সাইনবোর্ড তার পাশেই মাদ্রাসার আরও একটা সাইনবোর্ড। ৩-৪ জন শিশু বাইর খেকে ভেতরে ঢুকল। জানা গেল তারা কেউ এতিম না। সমাজকল্যাণ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করলে তত্ত্বাবধায়ক বলেন, অনেক এতিম আছে, বাইরে ঘুরতে গেছে।

পরবর্তীতে রান্নার আয়োজন দেখতে চাইলে কর্মকর্তার সামনে যা নিয়ে আসা হয়, তা কেবলই ২-৩ জন বাচ্চার খাবার বলেই অনুমেয় হয়, এবং তরকারি খুবই নিম্নমানের।

এই এতিম খানার পরিচালক মাও. ইউছুব একজন সুচতুর লোক,অনিয়ম, সেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যসহ এমন কোন কর্ম নেই যা তিনি করেন না। জানা যায় কিছু দিন আগেও তার মাদ্রাসার একজন শিক্ষক, ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করায়, ঘটনা জানাজানি হলে উক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করে এবং বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে বরখাস্তের আদেশ উড্ড্রো করে। অথচ কাজের কাজ হলো উক্ত ছাত্রীর মাদ্রাসায় পড়া বন্ধ হলো।

ভুয়া এতিমদের নামে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেই চলছে। অপরদিকে এই উপজেলায় অনুমোদিত প্রায় ১৭টি এতিমখানা রয়েছে। এর ২-১টি ব্যতীত প্রায় সবগুলো এতিমখানার একই চিত্র বলেই ভাবা যায়। অথচ এতিমখানার নাম দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি বরাদ্দসহ বিভিন্ন অনুদান ও অর্থ।

সংশ্লিষ্ট অনেকেরই প্রশ্ন এতিম না থাকায় কীভাবে এতিমদের নামে বরাদ্দ পেয়ে থাকে যা কারো বোধগম্য নয়। এই নিয়ে উপজেলা সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই নিয়ে সচেতনমহলে সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ্যের সুদৃষ্টি কামনা করছে।