শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০২২, ৩১ আষাঢ ১৪২৯ ১৬ জিলহজ ১৪৪৩

এমপির পাশে বসে অধ্যক্ষ বললেন, তিনি আমাকে পেটাননি

তদন্ত করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষকে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। রাজশাহী নগরীর ‘ওমর থিম প্লাজা’য় সংসদ সদস্য ওমর ফারুকের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্যের ডান পাশে বসেছিলেন অধ্যক্ষ সেলিম রেজা। তার ডান পাশে ছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুল আওয়াল রাজু। তিনি ৮ জন অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষকে সেদিন নিজস্ব কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। ওই কলেজ অধ্যক্ষও এমপির সঙ্গে বলেন, ওমর ফারুক তাকে পেটাননি। এদিকে অধ্যক্ষকে নির্যাতনের অভিযোগ পেয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক তার কার্যালয়ে গত ৭ জুলাই রাতে রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে ‘পিটিয়ে’ আহত করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তিনি রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য। অধ্যক্ষকে নির্যাতনের পর অধ্যক্ষ সেলিম রেজার সহকর্মীদের মাধ্যমে মঙ্গলবার ঘটনাটি প্রকাশ পায়। সেদিন সাংবাদিকরা নগরীর রায়পাড়ার বাসায় গেলে সেলিম রেজা তাদের কাছে পিটুনির অভিযোগ করে বলেছিলেন, ঘটনার পর থেকে তিনি লজ্জায় বের হননি এবং আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন।

গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা উল্টে যান। তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ ফোরামের কমিটি গঠন ও অভ্যন্তরীণ অন্য বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে বাকবিত-া হয়। একপর্যায়ে আমাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় এমপি আমাদের নিবৃত করেন। এছাড়া আর অন্য কোন ঘটনা ঘটেনি সেখানে।’ এই কার্যালয়েই ৭ জুলাই রাতে সেলিম রেজাকে পেটানো হয়েছিল বলে সেখানে উপস্থিত অন্যদের কাছ থেকে জানা গেছে। গোদাগাড়ীর বিভিন্ন কলেজের ৮ জন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে সেদিন ডেকেছিলেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানে উপস্থিত একজন সংবাদ মাধ্যমে বলেছিলেন, বৈঠকে ওমর ফারুক প্রথমেই অধ্যক্ষ সেলিম রেজার কাছে জানতে চান, তার কলেজের কতিপয় শিক্ষক আরেক কলেজের অধ্যক্ষ ও দলীয় নেতার স্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলেছেন। অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? জবাবে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। যদি এমন কোন ঘটনার প্রমাণ থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ কথা শুনে একপর্যায়ে এমপি অধ্যক্ষ সেলিম রেজার বাম চোখের নিচে ঘুসি মারেন। উপর্যুপরি কিল, ঘুসি ও লাথি মারেন। একপর্যায়ে চেম্বারে থাকা হকিস্টিক দিয়েও আঘাত করেন। প্রায় ১৫ মিনিট পরে সেলিম রেজাকে এমপির কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যান আরেক কলেজের একজন অধ্যক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই অধ্যক্ষ সেলিম রেজা লিখিত বক্তব্যে তার ওপর নির্যাতন নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘এমপি সাহেবের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একটি কুচক্রী মহল ১৫ জুলাই তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে গোদাগাড়ী-তানোর নির্বাচনী এলাকায় তার সুনাম, উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছেন।’

‘সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয়ে তারা আমার বাসায় প্রবেশ করেন। আমাকে অভিযোগ করার জন্য উসকানি দেন। আমার ছবি তোলার চেষ্টা করেন। আমি ছবি তুলতে দিইনি। কোন অভিযোগ বা মন্তব্য প্রকাশ করিনি।’ সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী অধ্যক্ষকে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অধ্যক্ষ ফোরামের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে গত ৭ জুলাই আমার কার্যালয়ে যা ঘটেছে, তা বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। একটি চক্র ইস্যু তৈরি করার জন্য মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে আমার সম্মানহানি করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মূলত ঈদের আগে শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের ডাকা হয়েছিল। সেখানে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে পড়েন তারা। বিশেষ করে অধ্যক্ষ আবদুল আওয়াল রাজু ও অধ্যক্ষ সেলিম রেজার মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে আমি গিয়ে তাদের থামাই। আমি কাউকে সেখানে পেটাইনি।’ ৭ জুলাই রাতে ‘পিটুনির শিকার’ অধ্যক্ষ সেলিমকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাঈদ আহমেদের চেম্বারে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্বজন ও সহকর্মীদের সহায়তায় নগরীর বাসায় ফেরেন সেলিম রেজা।

এক সপ্তাহ পর সংবাদ সম্মেলনে যখন অধ্যক্ষ সেলিম কথা বলছিলেন, তখনও তার মুখের বাম পাশে আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল। তখন সাংবাদিকরা এই ‘কালচে দাগ’ কীভাবে হলো- জানতে চাইলে অধ্যক্ষ নীবর থাকেন।

কিন্তু তার পাশে বসা মাটিকাটা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আওয়াল রাজু তড়িঘড়ি করে বলতে থাকেন, ‘সেদিন রাতে আমার সঙ্গেই সেলিম রেজার তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে আমি তাকে ধাক্কা দিই।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘সেদিনকার এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায়... আমাদের প্রিন্সিপালদের মধ্যে এত বেশি আন্তরিকতা, বুঝতে পারবেন না আপনি... ওই একটিই ছোট ঘটনাকে এতদূরে নিয়ে যাওয়ায় আমরা ভীষণভাবে লজ্জিত, বিশেষ করে আমি এই সাংবাদিক সম্মেলনে জাতির কাছে লজ্জা প্রকাশ করছি, দুঃখ প্রকাশ করছি।’ দেশের কলেজগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঘটনাটি জেনে গত বুধবার তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০২২ , ৩১ আষাঢ ১৪২৯ ১৬ জিলহজ ১৪৪৩

এমপির পাশে বসে অধ্যক্ষ বললেন, তিনি আমাকে পেটাননি

তদন্ত করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষকে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। রাজশাহী নগরীর ‘ওমর থিম প্লাজা’য় সংসদ সদস্য ওমর ফারুকের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্যের ডান পাশে বসেছিলেন অধ্যক্ষ সেলিম রেজা। তার ডান পাশে ছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুল আওয়াল রাজু। তিনি ৮ জন অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষকে সেদিন নিজস্ব কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। ওই কলেজ অধ্যক্ষও এমপির সঙ্গে বলেন, ওমর ফারুক তাকে পেটাননি। এদিকে অধ্যক্ষকে নির্যাতনের অভিযোগ পেয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক তার কার্যালয়ে গত ৭ জুলাই রাতে রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে ‘পিটিয়ে’ আহত করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তিনি রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের সংসদ সদস্য। অধ্যক্ষকে নির্যাতনের পর অধ্যক্ষ সেলিম রেজার সহকর্মীদের মাধ্যমে মঙ্গলবার ঘটনাটি প্রকাশ পায়। সেদিন সাংবাদিকরা নগরীর রায়পাড়ার বাসায় গেলে সেলিম রেজা তাদের কাছে পিটুনির অভিযোগ করে বলেছিলেন, ঘটনার পর থেকে তিনি লজ্জায় বের হননি এবং আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন।

গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা উল্টে যান। তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ ফোরামের কমিটি গঠন ও অভ্যন্তরীণ অন্য বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে বাকবিত-া হয়। একপর্যায়ে আমাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এ সময় এমপি আমাদের নিবৃত করেন। এছাড়া আর অন্য কোন ঘটনা ঘটেনি সেখানে।’ এই কার্যালয়েই ৭ জুলাই রাতে সেলিম রেজাকে পেটানো হয়েছিল বলে সেখানে উপস্থিত অন্যদের কাছ থেকে জানা গেছে। গোদাগাড়ীর বিভিন্ন কলেজের ৮ জন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে সেদিন ডেকেছিলেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানে উপস্থিত একজন সংবাদ মাধ্যমে বলেছিলেন, বৈঠকে ওমর ফারুক প্রথমেই অধ্যক্ষ সেলিম রেজার কাছে জানতে চান, তার কলেজের কতিপয় শিক্ষক আরেক কলেজের অধ্যক্ষ ও দলীয় নেতার স্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলেছেন। অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? জবাবে অধ্যক্ষ সেলিম রেজা বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। যদি এমন কোন ঘটনার প্রমাণ থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ কথা শুনে একপর্যায়ে এমপি অধ্যক্ষ সেলিম রেজার বাম চোখের নিচে ঘুসি মারেন। উপর্যুপরি কিল, ঘুসি ও লাথি মারেন। একপর্যায়ে চেম্বারে থাকা হকিস্টিক দিয়েও আঘাত করেন। প্রায় ১৫ মিনিট পরে সেলিম রেজাকে এমপির কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যান আরেক কলেজের একজন অধ্যক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই অধ্যক্ষ সেলিম রেজা লিখিত বক্তব্যে তার ওপর নির্যাতন নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘এমপি সাহেবের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একটি কুচক্রী মহল ১৫ জুলাই তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে গোদাগাড়ী-তানোর নির্বাচনী এলাকায় তার সুনাম, উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছেন।’

‘সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয়ে তারা আমার বাসায় প্রবেশ করেন। আমাকে অভিযোগ করার জন্য উসকানি দেন। আমার ছবি তোলার চেষ্টা করেন। আমি ছবি তুলতে দিইনি। কোন অভিযোগ বা মন্তব্য প্রকাশ করিনি।’ সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী অধ্যক্ষকে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অধ্যক্ষ ফোরামের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে গত ৭ জুলাই আমার কার্যালয়ে যা ঘটেছে, তা বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। একটি চক্র ইস্যু তৈরি করার জন্য মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে আমার সম্মানহানি করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মূলত ঈদের আগে শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের ডাকা হয়েছিল। সেখানে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে পড়েন তারা। বিশেষ করে অধ্যক্ষ আবদুল আওয়াল রাজু ও অধ্যক্ষ সেলিম রেজার মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে আমি গিয়ে তাদের থামাই। আমি কাউকে সেখানে পেটাইনি।’ ৭ জুলাই রাতে ‘পিটুনির শিকার’ অধ্যক্ষ সেলিমকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাঈদ আহমেদের চেম্বারে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্বজন ও সহকর্মীদের সহায়তায় নগরীর বাসায় ফেরেন সেলিম রেজা।

এক সপ্তাহ পর সংবাদ সম্মেলনে যখন অধ্যক্ষ সেলিম কথা বলছিলেন, তখনও তার মুখের বাম পাশে আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল। তখন সাংবাদিকরা এই ‘কালচে দাগ’ কীভাবে হলো- জানতে চাইলে অধ্যক্ষ নীবর থাকেন।

কিন্তু তার পাশে বসা মাটিকাটা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আওয়াল রাজু তড়িঘড়ি করে বলতে থাকেন, ‘সেদিন রাতে আমার সঙ্গেই সেলিম রেজার তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে আমি তাকে ধাক্কা দিই।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘সেদিনকার এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায়... আমাদের প্রিন্সিপালদের মধ্যে এত বেশি আন্তরিকতা, বুঝতে পারবেন না আপনি... ওই একটিই ছোট ঘটনাকে এতদূরে নিয়ে যাওয়ায় আমরা ভীষণভাবে লজ্জিত, বিশেষ করে আমি এই সাংবাদিক সম্মেলনে জাতির কাছে লজ্জা প্রকাশ করছি, দুঃখ প্রকাশ করছি।’ দেশের কলেজগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঘটনাটি জেনে গত বুধবার তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।