শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০২২, ৩১ আষাঢ ১৪২৯ ১৬ জিলহজ ১৪৪৩

পদ-পদবি আড়াল করে ই-অরেঞ্জ গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেন ওসি সোহেল

ই-অরেঞ্জ অনলাইন প্ল্যাটফর্মের প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের ১১শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় বনানী থানার সাবেক ওসি সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক মো. মোনায়েম হোসেন বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলা করেছেন। সোহেল রানার বিরুদ্ধে ২৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সম্প্রতি সোহেল রানার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেয় দুদকের উপপরিচালক অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. মোনায়েম হোসেন। ওই প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে ই-অরেঞ্জ নামে বিভিন্ন গ্রাহকদের সাড়ে ২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়। কমিশন প্রতিবেদন আমলে নিয়ে মামলার অনুমোদন দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতির মধ্যে ই-কমার্স গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ, বিদেশে পাচার ও দেশত্যাগের অভিযোগে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা এ বিষয়ে প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেন। ওই প্রতিবেদন অনুসারে দেখা গেছে, শেখ সোহেল রানা নিজের পদ-পদবি আড়াল করে দুর্নীতি সম্পৃক্ত অপরাধে ই-অরেঞ্জ নামে ই-কমার্স কোম্পানি খোলেন। এরপর প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তার নিজ নামে ও তার সংশ্লিষ্টদের নামে পরিচালিত ৬টি ব্যাংকের ৩১ হিসাবে মোট ২৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫০ টাকা জমা করেন। যার মধ্যে ২৮ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৯১৩ টাকা উত্তোলন করেছেন।

‘শেখ সোহেল রানা নিজে বাংলাদেশ পুলিশের পরিদর্শক হওয়া সত্ত্বেও নিজের পদ ও পদবি আড়াল করে নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ব্যাংক হিসাব খোলেন। সরকারি কর্মচারী হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার নামে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেন। যে কারণে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

গত ১৬ মার্চ ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে ভারতের কারাগারে আটক আছে সোহেল রানা। দেশটিতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এর আগে ই-অরেঞ্জের নামে প্রতারণার মামলা হলে সেখানে আসামি হন সোহেল রানা। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি ভারতে পালিয়ে গেলেও স্থানীয়রা তাকে আটক করে দেশটির পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলে পুলিশ সদর দপ্তর।

শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০২২ , ৩১ আষাঢ ১৪২৯ ১৬ জিলহজ ১৪৪৩

পদ-পদবি আড়াল করে ই-অরেঞ্জ গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেন ওসি সোহেল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ই-অরেঞ্জ অনলাইন প্ল্যাটফর্মের প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের ১১শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় বনানী থানার সাবেক ওসি সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক মো. মোনায়েম হোসেন বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলা করেছেন। সোহেল রানার বিরুদ্ধে ২৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সম্প্রতি সোহেল রানার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেয় দুদকের উপপরিচালক অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. মোনায়েম হোসেন। ওই প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে ই-অরেঞ্জ নামে বিভিন্ন গ্রাহকদের সাড়ে ২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়। কমিশন প্রতিবেদন আমলে নিয়ে মামলার অনুমোদন দেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম এবং দুর্নীতির মধ্যে ই-কমার্স গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ, বিদেশে পাচার ও দেশত্যাগের অভিযোগে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা এ বিষয়ে প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেন। ওই প্রতিবেদন অনুসারে দেখা গেছে, শেখ সোহেল রানা নিজের পদ-পদবি আড়াল করে দুর্নীতি সম্পৃক্ত অপরাধে ই-অরেঞ্জ নামে ই-কমার্স কোম্পানি খোলেন। এরপর প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তার নিজ নামে ও তার সংশ্লিষ্টদের নামে পরিচালিত ৬টি ব্যাংকের ৩১ হিসাবে মোট ২৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫০ টাকা জমা করেন। যার মধ্যে ২৮ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৯১৩ টাকা উত্তোলন করেছেন।

‘শেখ সোহেল রানা নিজে বাংলাদেশ পুলিশের পরিদর্শক হওয়া সত্ত্বেও নিজের পদ ও পদবি আড়াল করে নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ব্যাংক হিসাব খোলেন। সরকারি কর্মচারী হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার নামে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেন। যে কারণে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

গত ১৬ মার্চ ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে ভারতের কারাগারে আটক আছে সোহেল রানা। দেশটিতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এর আগে ই-অরেঞ্জের নামে প্রতারণার মামলা হলে সেখানে আসামি হন সোহেল রানা। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি ভারতে পালিয়ে গেলেও স্থানীয়রা তাকে আটক করে দেশটির পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলে পুলিশ সদর দপ্তর।