গত কয়েকদিনের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। কয়েকদিন আগে যে মরিচের দাম ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। তা গতকাল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এর সঙ্গে বেড়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। পাশাপাশি বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দামও। ব্যবসায়িরা বলছেন, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে খেতে কাঁচামরিচ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরবরাহ কমেছে। এতে দাম বেড়ে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

গতকাল বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা কাঁচামরিচের কেজি বিক্রি করছেন ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। ঈদের আগে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী ইমন হোসেনের দাবি, বৃষ্টিতে খেতে কাঁচামরিচের ক্ষতি হয়েছে। এতে সরবরাহ কমে গেছে। তাই দামও বেড়েছে। এই দাম আবারও স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ডিম। ঈদের আগে ১২০ টাকা বিক্রি হওয়া এক ডজন ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। আর বিভিন্ন মুদি দোকানে এক পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ঈদের আগের মতো এখনও সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর। বাজারের সবচেয়ে দামি এই সবজিটির দাম ঈদের পর আরও বেড়েছে। এক কেজি গাজর কিনতে ক্রেতাদের ১৮০ থেকে ২০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। ঈদের আগে গাজরের কেজি ছিল ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। গাজরের মতো দাম বেড়েছে পাকা টমেটোরও। এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়। ঈদের আগে পাকা টমেটোর কেজি ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

এছাড়া গাজর ও টমেটোর পাশাপাশি দাম বেড়েছে বরবটি, বেগুন, কাঁকরোল, কাঁচা পেঁপের। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ৪০ থেকে ৬০ টাকা। কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

এদিকে ঈদের পর পটোল ও ঢেঁড়শের দাম কিছুটা কমেছে। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঢেঁড়শের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে, যা ঈদের আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজিও ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ঈদের পর এ সবজিগুলোর দামে তেমন পরিবর্তন হয়নি। কাঁচামরিচ, ডিম এবং বিভিন্ন সবজির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আর আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আলুও আগের মতো ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়। এছাড়া প্যাকেট চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এছাড়া এসব বাজারে দেশি মসুরের ডালের কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা ও ভারতীয় মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। প্যাকেট আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ২০৫ টাকায়।

মুরগির বাজারে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, যা ঈদের আগে ছিল ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। কৈ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা মাছ ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ঈদের পর এসব মাছের দামে পরিবর্তন আসেনি।

দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ইলিশেরও। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা। বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা, খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়।