বিভিন্ন সময় টার্গেট করে শিশু চুরি করে অন্য কোথাও বিক্রি করাই তাদের পেশা। বাসা বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আশ্রয়দাতার শিশু সন্তান টার্গেট করে চক্রটি চুরি করে পালিয়ে যেত। বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও চক্রটি শিশুদের চুরি করে থাকে। সম্প্রতি এক দম্পতির শিশু চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে সুমন ও মুন্নি নামের দুই কতিথ স্বামী-স্ত্রীর সন্ধান পায় র্যাব-১০। অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে চুরি করা শিশুকে উদ্ধার করে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয় র্যাব।
র্যাব-১০ এর সহকারী পুলিশ সুপার এনায়েত কবির সোয়েব জানান, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে সাত মাস বয়সী এক শিশু চুরির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে র্যাব-১০। তনন্তে নেমে জানতে পারে ১৩ জুলাই সুমন ও মুন্নি নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে কামাঙ্গিরচর জাউলাহাটি এলাকার রিকশাচালক সাজাহানের কাছে আশ্রয় চায়। সাজাহান তার ভাই সাগরের বাসায় নিয়ে যায় তাদের। পরদিন সাগর তার ভাইকে নিয়ে কাজে বের হলে তাদের সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থী সুমনও বেরিয়ে যায় কাজ খোঁজার বাহানায়। সাগরের বাসায় কতিথ স্ত্রী মুন্নিকে রেখে যায়। এরপর সাগরের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার তাদের ৭ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে রেখে রান্না ঘরে যান। কিছু সময় পর এসে দেখেন তাদের সন্তান নেই, সেই সঙ্গে মুন্নিও উধাও। এরপরই তিনি চিৎকার শুরু করেন। ঘটনায় কামাঙ্গীরচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে র্যাব-১০ একদিনের ব্যবধানে চুরি হওয়া শিশু মোসাইফা ইসলাম জান্নাতকে উদ্ধার করে একটি বাসা থেকে। ওই বাসা থেকে সুমন ও মুন্নিকে আটক করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে সুমন ও মুন্নি শিশু চুরি চক্রের সদস্য। সুমন শিশু চুরির পাশাপাশি ছিনতাইও করে। মূলত মুন্নিতে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সুমন বিভিন্ন এলাকায় টার্গেট করে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি বা বস্তিতে আশ্রয় চায়। এরপর আশ্রয়দাতা বা তাদের বাসার আশপাশে শিশুদের সুযোগ বুঝে চুরি করে নিয়ে যায়। চুরি করা শিশু নিঃসন্তান দম্পতি বা অন্য কোথাও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে।
র্যাব বলছে, তারা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে যেসব বাসাবাড়িতে ছোট শিশু বিশেষ করে এক বছর বা তারও কম বয়সী শিশু রয়েছে, সেসব বাড়ি টার্গেট করে। সেখানে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তাদের কাছে সহায়তা চায়। অনেক ক্ষেত্রে তাদের বাসাবাড়িতে থাকার জন্য বিভিন্ন ফন্দিফিকির আঁটে। যাদের ফন্দিফিকিরে আটকাতে পারে, সময় সুযোগ বুঝে তাদের বাসা থেকে বাচ্চা নিয়ে চম্পট দেয় এরা। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালেও শিশু চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে এই চক্রটি।
র্যাবের ভাষ্য, সুমন ও মুন্নি দীর্ঘদিন ধরে শিশু চুরি করছে। পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও বেশকিছু শিশু চুরির কথা তারা স্বীকার করেছে। তাদের কামারাঙ্গিরচর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে আরও একাধিক লোক জড়িত। তাদের গ্রেপ্তার করার জন্য র্যাব তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২ , ০১ শ্রাবণ ১৪২৯ ১৭ জিলহজ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
বিভিন্ন সময় টার্গেট করে শিশু চুরি করে অন্য কোথাও বিক্রি করাই তাদের পেশা। বাসা বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আশ্রয়দাতার শিশু সন্তান টার্গেট করে চক্রটি চুরি করে পালিয়ে যেত। বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও চক্রটি শিশুদের চুরি করে থাকে। সম্প্রতি এক দম্পতির শিশু চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে সুমন ও মুন্নি নামের দুই কতিথ স্বামী-স্ত্রীর সন্ধান পায় র্যাব-১০। অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে চুরি করা শিশুকে উদ্ধার করে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয় র্যাব।
র্যাব-১০ এর সহকারী পুলিশ সুপার এনায়েত কবির সোয়েব জানান, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে সাত মাস বয়সী এক শিশু চুরির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে র্যাব-১০। তনন্তে নেমে জানতে পারে ১৩ জুলাই সুমন ও মুন্নি নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে কামাঙ্গিরচর জাউলাহাটি এলাকার রিকশাচালক সাজাহানের কাছে আশ্রয় চায়। সাজাহান তার ভাই সাগরের বাসায় নিয়ে যায় তাদের। পরদিন সাগর তার ভাইকে নিয়ে কাজে বের হলে তাদের সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থী সুমনও বেরিয়ে যায় কাজ খোঁজার বাহানায়। সাগরের বাসায় কতিথ স্ত্রী মুন্নিকে রেখে যায়। এরপর সাগরের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার তাদের ৭ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে রেখে রান্না ঘরে যান। কিছু সময় পর এসে দেখেন তাদের সন্তান নেই, সেই সঙ্গে মুন্নিও উধাও। এরপরই তিনি চিৎকার শুরু করেন। ঘটনায় কামাঙ্গীরচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে র্যাব-১০ একদিনের ব্যবধানে চুরি হওয়া শিশু মোসাইফা ইসলাম জান্নাতকে উদ্ধার করে একটি বাসা থেকে। ওই বাসা থেকে সুমন ও মুন্নিকে আটক করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে সুমন ও মুন্নি শিশু চুরি চক্রের সদস্য। সুমন শিশু চুরির পাশাপাশি ছিনতাইও করে। মূলত মুন্নিতে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সুমন বিভিন্ন এলাকায় টার্গেট করে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি বা বস্তিতে আশ্রয় চায়। এরপর আশ্রয়দাতা বা তাদের বাসার আশপাশে শিশুদের সুযোগ বুঝে চুরি করে নিয়ে যায়। চুরি করা শিশু নিঃসন্তান দম্পতি বা অন্য কোথাও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে।
র্যাব বলছে, তারা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে যেসব বাসাবাড়িতে ছোট শিশু বিশেষ করে এক বছর বা তারও কম বয়সী শিশু রয়েছে, সেসব বাড়ি টার্গেট করে। সেখানে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তাদের কাছে সহায়তা চায়। অনেক ক্ষেত্রে তাদের বাসাবাড়িতে থাকার জন্য বিভিন্ন ফন্দিফিকির আঁটে। যাদের ফন্দিফিকিরে আটকাতে পারে, সময় সুযোগ বুঝে তাদের বাসা থেকে বাচ্চা নিয়ে চম্পট দেয় এরা। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালেও শিশু চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে এই চক্রটি।
র্যাবের ভাষ্য, সুমন ও মুন্নি দীর্ঘদিন ধরে শিশু চুরি করছে। পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও বেশকিছু শিশু চুরির কথা তারা স্বীকার করেছে। তাদের কামারাঙ্গিরচর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে আরও একাধিক লোক জড়িত। তাদের গ্রেপ্তার করার জন্য র্যাব তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।