একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক মারা গেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। কাজী এবাদুল হকের মেয়ের জামাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহিবুল আজিজ বলেন, ‘২-৩ মাস ধরে তিনি অসুস্থ, গত পরশু শরীর বেশি খারাপ হলে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং রাতেই আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ১২টার দিকে মারা যান।’
তার প্রথম জানাজা গতকাল জুমার নামাজের পর ২টা ৩০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ও দ্বিতীয় জানাজা নিকুঞ্জ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মসজিদের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। তার স্ত্রী অধ্যাপক শরিফা খাতুনও ২০১৭ সালে একুশে পদক অর্জন করেন। তার মেয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি।
কাজী এবাদুল হকের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি, ফেনী জেলায়। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। ফেনী শহরে ভাষা আন্দোলনকে সংগঠিত করতে তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। ১৯৫৪ সালে তিনি ফেনী ভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি নিয়ে ফেনীতে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবাদুল হক। পরে ঢাকায় এসে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে হাই কোর্টে তিনি আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৯০ সালে বিচারক হিসেবে হাই কোর্টে যোগ দেয়া বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বাংলা ভাষায় রায় লিখে নজির সৃষ্টি করেন।
হাইকোর্ট বিভাগে ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর আপিল বিভাগেও তিনি এক বছর বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি সর্বোচ্চ আদালত থেকে অবসরে যান। সাবেক এই বিচারপতি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘গৌরবোজ্জল ও প্রশংসনীয়’ অবদানের জন্য সরকার ২০১৬ সালে এই ভাষাসৈনিককে একুশে পদক দেয়।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের মৃত্যুতে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এক শোক বার্তায় বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২ , ০১ শ্রাবণ ১৪২৯ ১৭ জিলহজ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি কাজী এবাদুল হক মারা গেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। কাজী এবাদুল হকের মেয়ের জামাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহিবুল আজিজ বলেন, ‘২-৩ মাস ধরে তিনি অসুস্থ, গত পরশু শরীর বেশি খারাপ হলে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং রাতেই আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ১২টার দিকে মারা যান।’
তার প্রথম জানাজা গতকাল জুমার নামাজের পর ২টা ৩০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ও দ্বিতীয় জানাজা নিকুঞ্জ মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মসজিদের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ২০১৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। তার স্ত্রী অধ্যাপক শরিফা খাতুনও ২০১৭ সালে একুশে পদক অর্জন করেন। তার মেয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি।
কাজী এবাদুল হকের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি, ফেনী জেলায়। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। ফেনী শহরে ভাষা আন্দোলনকে সংগঠিত করতে তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। ১৯৫৪ সালে তিনি ফেনী ভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি নিয়ে ফেনীতে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবাদুল হক। পরে ঢাকায় এসে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে হাই কোর্টে তিনি আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৯০ সালে বিচারক হিসেবে হাই কোর্টে যোগ দেয়া বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বাংলা ভাষায় রায় লিখে নজির সৃষ্টি করেন।
হাইকোর্ট বিভাগে ১০ বছর দায়িত্ব পালনের পর আপিল বিভাগেও তিনি এক বছর বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি সর্বোচ্চ আদালত থেকে অবসরে যান। সাবেক এই বিচারপতি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘গৌরবোজ্জল ও প্রশংসনীয়’ অবদানের জন্য সরকার ২০১৬ সালে এই ভাষাসৈনিককে একুশে পদক দেয়।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের মৃত্যুতে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এক শোক বার্তায় বিচারপতি কাজী এবাদুল হকের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।