পঞ্চগড়ে খরায় চৌচির মাঠ আমন আবাদ ব্যাহত

পঞ্চগড়ে চলছে তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টি। ২২-২৩ দিন ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খাল বিল ও নদীতে পানি শুকিয়ে জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে । পানির অভাবে খাঁ খাঁ করছে মাঠ-ঘাট। আমন ধান রোপণের সময় বিলম্ব হচ্ছে। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে সেচ পা¤প দিয়ে আমন ধান রোপণের প্রস্তুুতি নিচ্ছেন।

আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষা ঋতু। আষাঢ় মাসে মাঠ-ঘাট বৃষ্টির পানিতে টইটম্বুর থাকে। কৃষক আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করেন। সাধারণত আষাঢ় মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে এই অঞ্চলের কৃষকরা আমন রোপান করতে ব্যস্ত সময় পার করেন। কিন্তু এবছর এই এলাকায় তেমন বৃষ্টিপাত নেই। প্রচন্ড তাপদাহ তীব্র খরা আর অনাবৃষ্টিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে, হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র সহ ফসল চাষাবাদ। বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক জমিতে স¤পূরক সেচ দিয়ে চারা বাঁচিয়ে রেখেছেন কৃষক। এতে ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। প্রতি বছর আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির পানিতে আমন ধান রোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষক। কিন্তু এবার মাসব্যাপী অনাবৃষ্টির কারণে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে পানির অভাবে অনেক কৃষক ধান রোপণ করতে পারছেন না।

বোদা উপজেলার বালাভিড় তুরুপ পথা গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল বলেন, জেলায় এ বছর আষাঢ় মাসে চলছে খরা। ১৫ আষাঢ় থেকে আমন ধান রোপন করা শুরু হয়। তিনি ৩ বিঘা জমিতে আমন লাগাবেন। বীজতলা প্রস্তুত কিন্তু বৃষ্টির পানির অভাবে জমিতে ধান রোপণ করতে পারছেন না। আমন রোপনে দেরী হলে ফলন কম হবে। তবে আকাশের বৃষ্টি না হলে বিকল্প সেচ দিয়ে রোপা লাগাতে হবে। তাতে খরচ বেশী হবে। কৃষক শ্যামল রায় ৪ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবেন। বৃষ্টির কারণে জমিতে হাল দিয়ে প্রস্তুত করতে পারছেন না এবং রোপা লাগাতেও পারছেন না। খরার কারণে বীজ তলা রক্ষা করতে চেষ্টা করছেন মাত্র।

আটোয়ারী বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষীদ্বার গ্রামের কৃষক গফুর বলেন, তিনি ৫ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবেন। আষাঢ় মাস শেষ । এখনও বৃষ্টি নেই। তাই তিনি বরেন্দ্র সেচ মেশিন থেকে পানি নিয়ে রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করেছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে আমন ধানের জমি প্রস্তুত এবং রোপন শুরু করবেন। জেলার বেশিরভাগ কৃষক এখন বাধ্য হয়ে বৈদ্যুতিক পা¤প ও শ্যালো মেশিন এবং বরেন্দ্র সেচ নলকুপ দিয়ে সেচের মাধ্যমে ধান রোপণের চিন্তা করছেন। সেচ দিয়ে ধান লাগানোর ফলে আমন উৎপাদনের খরচ বেড়ে যাবে বলেও কৃষকরা বলছেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে বোদা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আল মামুন অর রশিদ বলেন, সাধারণত আষাঢ় মাসের ২০ থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাসের শেষ পর্যন্ত রোপা আমন চাষাবাদ করা হয়। অনাবৃষ্টি ও অতিরিক্ত খরার কারণে কৃষকদের সামান্য অসুবিধা হলেও তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন মোটা ধানের জন্য একটু অসুবিধা হলেও চিকন জাতের ধান একটু দেরিতে রোপণ করলেও তেমন ক্ষতি হবে না।

রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২ , ০২ শ্রাবণ ১৪২৯ ১৮ জিলহজ ১৪৪৩

পঞ্চগড়ে খরায় চৌচির মাঠ আমন আবাদ ব্যাহত

জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ে চলছে তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টি। ২২-২৩ দিন ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খাল বিল ও নদীতে পানি শুকিয়ে জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে । পানির অভাবে খাঁ খাঁ করছে মাঠ-ঘাট। আমন ধান রোপণের সময় বিলম্ব হচ্ছে। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে সেচ পা¤প দিয়ে আমন ধান রোপণের প্রস্তুুতি নিচ্ছেন।

আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষা ঋতু। আষাঢ় মাসে মাঠ-ঘাট বৃষ্টির পানিতে টইটম্বুর থাকে। কৃষক আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করেন। সাধারণত আষাঢ় মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে এই অঞ্চলের কৃষকরা আমন রোপান করতে ব্যস্ত সময় পার করেন। কিন্তু এবছর এই এলাকায় তেমন বৃষ্টিপাত নেই। প্রচন্ড তাপদাহ তীব্র খরা আর অনাবৃষ্টিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে, হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র সহ ফসল চাষাবাদ। বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক জমিতে স¤পূরক সেচ দিয়ে চারা বাঁচিয়ে রেখেছেন কৃষক। এতে ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। প্রতি বছর আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির পানিতে আমন ধান রোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন কৃষক। কিন্তু এবার মাসব্যাপী অনাবৃষ্টির কারণে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে পানির অভাবে অনেক কৃষক ধান রোপণ করতে পারছেন না।

বোদা উপজেলার বালাভিড় তুরুপ পথা গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল বলেন, জেলায় এ বছর আষাঢ় মাসে চলছে খরা। ১৫ আষাঢ় থেকে আমন ধান রোপন করা শুরু হয়। তিনি ৩ বিঘা জমিতে আমন লাগাবেন। বীজতলা প্রস্তুত কিন্তু বৃষ্টির পানির অভাবে জমিতে ধান রোপণ করতে পারছেন না। আমন রোপনে দেরী হলে ফলন কম হবে। তবে আকাশের বৃষ্টি না হলে বিকল্প সেচ দিয়ে রোপা লাগাতে হবে। তাতে খরচ বেশী হবে। কৃষক শ্যামল রায় ৪ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবেন। বৃষ্টির কারণে জমিতে হাল দিয়ে প্রস্তুত করতে পারছেন না এবং রোপা লাগাতেও পারছেন না। খরার কারণে বীজ তলা রক্ষা করতে চেষ্টা করছেন মাত্র।

আটোয়ারী বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষীদ্বার গ্রামের কৃষক গফুর বলেন, তিনি ৫ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবেন। আষাঢ় মাস শেষ । এখনও বৃষ্টি নেই। তাই তিনি বরেন্দ্র সেচ মেশিন থেকে পানি নিয়ে রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করেছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে আমন ধানের জমি প্রস্তুত এবং রোপন শুরু করবেন। জেলার বেশিরভাগ কৃষক এখন বাধ্য হয়ে বৈদ্যুতিক পা¤প ও শ্যালো মেশিন এবং বরেন্দ্র সেচ নলকুপ দিয়ে সেচের মাধ্যমে ধান রোপণের চিন্তা করছেন। সেচ দিয়ে ধান লাগানোর ফলে আমন উৎপাদনের খরচ বেড়ে যাবে বলেও কৃষকরা বলছেন। বিষয়টি নিয়ে কথা বললে বোদা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আল মামুন অর রশিদ বলেন, সাধারণত আষাঢ় মাসের ২০ থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাসের শেষ পর্যন্ত রোপা আমন চাষাবাদ করা হয়। অনাবৃষ্টি ও অতিরিক্ত খরার কারণে কৃষকদের সামান্য অসুবিধা হলেও তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন মোটা ধানের জন্য একটু অসুবিধা হলেও চিকন জাতের ধান একটু দেরিতে রোপণ করলেও তেমন ক্ষতি হবে না।