প্রথম ইস্যু ছিল হত্যাকাণ্ড

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মধ্যেপ্রাচ্যে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিজের মেয়াদে এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেলেন তিনি। বুধবার রাজধানী ওয়াশিংটন থেকে প্রথমে ইসরায়েলে যান তিনি, সেখান থেকে ফিলিস্তিন হয়ে শুক্রবার সৌদি আরবে পৌঁছান। সৌদিতে পৌঁছানোর পর ওই দিনই দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও ডি ফ্যাক্টো নেতা মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

সৌদির রাজধানী রিয়াদে যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘(বৈঠকের) শুরুতেই আমি এই ইস্যুটি (জামাল খাশুগজি) তুলেছি এবং একদম সরাসরি ও স্পষ্টভাবে তাকে (যুবরাজ) এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরেছি।’ ‘আমি বলেছি, মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সোচ্চার। আমি সেই দেশের প্রেসিডেন্ট এবং আমি সবসমই আমাদের মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়াব।’ ‘পাশাপাশি তাকে এই ইঙ্গিতও দিয়েছি যে, আমি মনে করি এই হত্যায় তার (যুবরাজ) সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশুগজি মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত কলাম লিখতেন। সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।

২০১৮ সালের ২ অক্টোবর বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে নিখোঁজ হন খাশুগজি। পরে জানা যায়, তাকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলে সৌদি যুবরাজের ভাবমূর্তিও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পক্ষ থেকেও বলা হয়, ওই খুনের আদেশ স্বয়ং যুবরাজ মোহাম্মদ দিয়েছেন বলে তাদের বিশ্বাস। সিআইএর এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তুরস্কের আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, এটি সত্য যে খাশুগজিকে এজেন্টরাই হত্যা করেছে।

কিন্তু এই হত্যার নির্দেশ এসেছিল সৌদি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে।

সৌদি কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ ঘটনায় যুবরাজের জড়িত থাকার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। পাশাপাশি দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অন্য কোনো দেশের এজেন্টরা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী। বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকেও সৌদি কর্তৃপক্ষের অবস্থানই পুনর্ব্যক্ত করেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ বিষয়ে বাইডেন বলেন, ‘তিনি (মোহাম্মদ বিন সালমান) আমাকে বলেছেন তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই হত্যায় যুক্ত নন। পাশাপাশি আরও বলেছেন, যারা (এ হত্যায়) সংশ্লিষ্ট, তাদের বিরুদ্ধে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছেন।’ সৌদি যুবরাজের পাশাপাশি দেশটির বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের সঙ্গেও বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

রবিবার, ১৭ জুলাই ২০২২ , ০২ শ্রাবণ ১৪২৯ ১৮ জিলহজ ১৪৪৩

বাইডেন-সৌদি যুবরাজের বৈঠক

প্রথম ইস্যু ছিল হত্যাকাণ্ড

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে মধ্যেপ্রাচ্যে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিজের মেয়াদে এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেলেন তিনি। বুধবার রাজধানী ওয়াশিংটন থেকে প্রথমে ইসরায়েলে যান তিনি, সেখান থেকে ফিলিস্তিন হয়ে শুক্রবার সৌদি আরবে পৌঁছান। সৌদিতে পৌঁছানোর পর ওই দিনই দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও ডি ফ্যাক্টো নেতা মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

সৌদির রাজধানী রিয়াদে যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘(বৈঠকের) শুরুতেই আমি এই ইস্যুটি (জামাল খাশুগজি) তুলেছি এবং একদম সরাসরি ও স্পষ্টভাবে তাকে (যুবরাজ) এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরেছি।’ ‘আমি বলেছি, মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সোচ্চার। আমি সেই দেশের প্রেসিডেন্ট এবং আমি সবসমই আমাদের মূল্যবোধের পক্ষে দাঁড়াব।’ ‘পাশাপাশি তাকে এই ইঙ্গিতও দিয়েছি যে, আমি মনে করি এই হত্যায় তার (যুবরাজ) সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশুগজি মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত কলাম লিখতেন। সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।

২০১৮ সালের ২ অক্টোবর বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে নিখোঁজ হন খাশুগজি। পরে জানা যায়, তাকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

খাশুগজি হত্যাকাণ্ডে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলে সৌদি যুবরাজের ভাবমূর্তিও দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পক্ষ থেকেও বলা হয়, ওই খুনের আদেশ স্বয়ং যুবরাজ মোহাম্মদ দিয়েছেন বলে তাদের বিশ্বাস। সিআইএর এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তুরস্কের আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, এটি সত্য যে খাশুগজিকে এজেন্টরাই হত্যা করেছে।

কিন্তু এই হত্যার নির্দেশ এসেছিল সৌদি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে।

সৌদি কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ ঘটনায় যুবরাজের জড়িত থাকার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। পাশাপাশি দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অন্য কোনো দেশের এজেন্টরা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী। বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকেও সৌদি কর্তৃপক্ষের অবস্থানই পুনর্ব্যক্ত করেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ বিষয়ে বাইডেন বলেন, ‘তিনি (মোহাম্মদ বিন সালমান) আমাকে বলেছেন তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই হত্যায় যুক্ত নন। পাশাপাশি আরও বলেছেন, যারা (এ হত্যায়) সংশ্লিষ্ট, তাদের বিরুদ্ধে তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছেন।’ সৌদি যুবরাজের পাশাপাশি দেশটির বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের সঙ্গেও বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।