বাঁশখালীতে আধিপত্য বিবাদ : আহত ১৫

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গতকাল রোববার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাগমারা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এতে গুরুতর আহত ৫ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) প্রেরণ করা হয়েছে। অপরাপর আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে লুটপাট করা ৪টি গরুসহ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাথরিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাগমারা এলাকায় দুই সমাজের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার নিয়ে উত্তেজনা চলে আসছিল। এরইমধ্যে গত শনিবার গভীর রাতে বাগমারা গাট্টি ফকির মাজার সংলগ্ন এলাকায় ৪টি দোকানে হানা দেয় দুর্বৃত্তের দল। এ সময় তারা ৪ দোকানের দরজা ভাংচুর করে ভেতরে প্রবেশ করে সমস্ত মালামাল ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। রাত আড়াইটার দিকে দুই সমাজের লোকজনের মধ্যে ইটপাটকেল ছোঁড়াছুড়ি হয় এবং কিরিচ, লোহার রড ও দা নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আবারও হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, কাশেম ডাকাতের নেতৃত্বে প্রায় ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দুস্কৃতিকারীদল অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটায়। এতে গুরুতর আহত হয় দক্ষিণ বাগমারা এলাকার মৃত ফয়েজুর রহমানের পুত্র আনোয়ার হোসেন, মৃত মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র শাহজাহান, মৃত ফয়েজুর রহমানের পুত্র নজরুল ইসলাম ও আবদুর রশিদ, মৃত রজি উল্লাহর পুত্র মো. জহির, মৃত নুরুল আমিনের পুত্র মিশু, মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র দেলোয়ার, মৃত আজিজুর রহমানের পুত্র রহিম ও মৃত আহমদ শফির পুত্র মো. বক্করসহ অন্তত ১৫ জন। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাথায় দায়ের কোপে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান, নজরুল ইসলাম, আবদুর রশিদ ও মো. জহিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) এ প্রেরণ করা হয়েছে।

গুরুতর আহত শাহজাহানের ছোট ভাই মো. নেজাম বলেন, ‘ডাকাত কাশেমের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদল আমার ভাইদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাদের দায়ের কোপের আঘাতে আমার ভাই মো. শাহজাহান ও আনোয়ার হোসেনসহ ৫ জন চট্টগ্রাম মেডিকেলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমি ডাকাত কাশেম তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে গ্রেপ্তার করার জন্য প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাথরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইবনে আমিন বলেন, ‘বাগমারা এলাকায় দুই সমাজের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলে আসছিল। আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে অনেকবার বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা আমার কথাও কর্ণপাত করে না।’

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে অভিযান চালিয়ে হামলাকারীদের কাছ থেকে ৪টি গরু উদ্ধার করা হয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০২২ , ০৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ২০ জিলহজ ১৪৪৩

আশঙ্কাজনক ৫ জন চমেকে

বাঁশখালীতে আধিপত্য বিবাদ : আহত ১৫

প্রতিনিধি, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। গতকাল রোববার (৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাগমারা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এতে গুরুতর আহত ৫ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) প্রেরণ করা হয়েছে। অপরাপর আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে লুটপাট করা ৪টি গরুসহ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাথরিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাগমারা এলাকায় দুই সমাজের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার নিয়ে উত্তেজনা চলে আসছিল। এরইমধ্যে গত শনিবার গভীর রাতে বাগমারা গাট্টি ফকির মাজার সংলগ্ন এলাকায় ৪টি দোকানে হানা দেয় দুর্বৃত্তের দল। এ সময় তারা ৪ দোকানের দরজা ভাংচুর করে ভেতরে প্রবেশ করে সমস্ত মালামাল ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। রাত আড়াইটার দিকে দুই সমাজের লোকজনের মধ্যে ইটপাটকেল ছোঁড়াছুড়ি হয় এবং কিরিচ, লোহার রড ও দা নিয়ে এক পক্ষ অপর পক্ষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আবারও হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, কাশেম ডাকাতের নেতৃত্বে প্রায় ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দুস্কৃতিকারীদল অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটায়। এতে গুরুতর আহত হয় দক্ষিণ বাগমারা এলাকার মৃত ফয়েজুর রহমানের পুত্র আনোয়ার হোসেন, মৃত মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র শাহজাহান, মৃত ফয়েজুর রহমানের পুত্র নজরুল ইসলাম ও আবদুর রশিদ, মৃত রজি উল্লাহর পুত্র মো. জহির, মৃত নুরুল আমিনের পুত্র মিশু, মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র দেলোয়ার, মৃত আজিজুর রহমানের পুত্র রহিম ও মৃত আহমদ শফির পুত্র মো. বক্করসহ অন্তত ১৫ জন। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মাথায় দায়ের কোপে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান, নজরুল ইসলাম, আবদুর রশিদ ও মো. জহিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) এ প্রেরণ করা হয়েছে।

গুরুতর আহত শাহজাহানের ছোট ভাই মো. নেজাম বলেন, ‘ডাকাত কাশেমের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদল আমার ভাইদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাদের দায়ের কোপের আঘাতে আমার ভাই মো. শাহজাহান ও আনোয়ার হোসেনসহ ৫ জন চট্টগ্রাম মেডিকেলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমি ডাকাত কাশেম তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে গ্রেপ্তার করার জন্য প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাথরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইবনে আমিন বলেন, ‘বাগমারা এলাকায় দুই সমাজের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলে আসছিল। আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে অনেকবার বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা আমার কথাও কর্ণপাত করে না।’

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে অভিযান চালিয়ে হামলাকারীদের কাছ থেকে ৪টি গরু উদ্ধার করা হয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’