বিএনপি না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না : সিইসি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন স্থানীয় সরকার, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় এই পাঁচটি মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে নিয়ে আসার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। তবে, সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ইসির অধীনস্থ করার প্রক্রিয়াকে জটিল বলে মনে করেন। সিইসি বলেন, ‘এর সঙ্গে জটিল সাংবিধানিক বিষয় জড়িত রয়েছে। এটি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে সংলাপ করতে পারে। একই সঙ্গে বিএনপি অংশ না নিলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না বলে মন্তব্য করেন।’

গতকাল সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব এমএ মতিন লিখিত ওই পাঁচ প্রস্তাবসহ আরও চারটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। দলটির চেয়ারম্যান আল্লামা মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্য কমিশনার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

অন্যদিকে গতকাল বিকেলে নির্বাচন ভবনে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সংলাপ করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। বিএনপি সংলাপে না আসায় নির্বাচন নিয়ে চলমান সংকটের কথা তুলে ধরেন তিনি। শুরুতেই সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বর্তমানে সংশয় দেখা দিয়েছে যে একটি বড় অংশ নির্বাচনে আসতে চাচ্ছে না বা আসবে না বলে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেছি। আপনারাও দাবি করেছিলেন সব দলের অংশগ্রহণে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বড় কথা হচ্ছে দেশের প্রধানতম রাজনৈতিক দলগুলো বড় আকারে অংশগ্রহণ করবে।’

বিএনপি না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরাও মনে করি, বিএনপি যদি এই নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে আমাদের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের উদ্দেশ সফল হবে না। নির্বাচন হয়তো আমরা করবো।’

সিইসি জানান, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ বা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য অনেক ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। অনেক সমঝোতার প্রয়োজন পড়ে। আমাদের পক্ষ থেকে আইন ও বিধির আলোকে প্রস্তুতিগুলো নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। তাদের নিজস্ব কিছু কর্মসূচি আছে নির্বাচনকালীন সরকার থাকতে হবে। এ রকম কিছু পরিবর্তন না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না। এটাও কিন্তু একটি অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। একটি সংশয় ?সৃষ্টি করেছে।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরাও মনে করি, বিএনপি যদি এই নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে আমাদের যে উদ্দেশ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা সেটা হয়ত সফল হবে না। নির্বাচন হয়ত আমরা করবো। আবার বিএনপি যেভাবে নির্বাচন করতে চাচ্ছে, সেটা যদি অন্য দল বিশেষ করে শাসক দলের সঙ্গে বসে সুরাহা করতে পারে, একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, তাহলে সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন করতে কোন বাধা নেই। সেই প্রতিশ্রুতিটি আমরা এখনও পাচ্ছি না। ওই অবস্থাটি এখনও আসেনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে যেটা করছি, আহ্বান করছি। আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি তারা যেন নির্বাচনে আসে। যেকোন উপায়ে আমাদের এই নির্বাচনে আসে। তাদের রাজনৈতিক কৌশল যদি ভিন্ন হয় সেক্ষেত্রে আমাদের কোন মন্তব্য নেই। তার পক্ষে-বিপক্ষে আমাদের কোন অবস্থান নেই। রাজনৈতিক দলের নিজস্ব স্বাধীনতা আছে। তারা তাদের প্রজ্ঞা অনুযায়ী যেকোন কৌশল বা কর্মসূচি হাতে নিতে পারে।’

আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। ইতোমধ্যে চারটি দলের সঙ্গে বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল সংলাপে অংশ নেয়নি।

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০২২ , ০৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ২০ জিলহজ ১৪৪৩

বিএনপি না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না : সিইসি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন স্থানীয় সরকার, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয় এই পাঁচটি মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে নিয়ে আসার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। তবে, সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ইসির অধীনস্থ করার প্রক্রিয়াকে জটিল বলে মনে করেন। সিইসি বলেন, ‘এর সঙ্গে জটিল সাংবিধানিক বিষয় জড়িত রয়েছে। এটি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে সংলাপ করতে পারে। একই সঙ্গে বিএনপি অংশ না নিলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না বলে মন্তব্য করেন।’

গতকাল সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব এমএ মতিন লিখিত ওই পাঁচ প্রস্তাবসহ আরও চারটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। দলটির চেয়ারম্যান আল্লামা মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্য কমিশনার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

অন্যদিকে গতকাল বিকেলে নির্বাচন ভবনে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সংলাপ করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। বিএনপি সংলাপে না আসায় নির্বাচন নিয়ে চলমান সংকটের কথা তুলে ধরেন তিনি। শুরুতেই সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বর্তমানে সংশয় দেখা দিয়েছে যে একটি বড় অংশ নির্বাচনে আসতে চাচ্ছে না বা আসবে না বলে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেছি। আপনারাও দাবি করেছিলেন সব দলের অংশগ্রহণে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বড় কথা হচ্ছে দেশের প্রধানতম রাজনৈতিক দলগুলো বড় আকারে অংশগ্রহণ করবে।’

বিএনপি না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরাও মনে করি, বিএনপি যদি এই নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে আমাদের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের উদ্দেশ সফল হবে না। নির্বাচন হয়তো আমরা করবো।’

সিইসি জানান, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ বা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম দিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য অনেক ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। অনেক সমঝোতার প্রয়োজন পড়ে। আমাদের পক্ষ থেকে আইন ও বিধির আলোকে প্রস্তুতিগুলো নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। তাদের নিজস্ব কিছু কর্মসূচি আছে নির্বাচনকালীন সরকার থাকতে হবে। এ রকম কিছু পরিবর্তন না হলে তারা নির্বাচনে আসবে না। এটাও কিন্তু একটি অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। একটি সংশয় ?সৃষ্টি করেছে।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরাও মনে করি, বিএনপি যদি এই নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে আমাদের যে উদ্দেশ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা সেটা হয়ত সফল হবে না। নির্বাচন হয়ত আমরা করবো। আবার বিএনপি যেভাবে নির্বাচন করতে চাচ্ছে, সেটা যদি অন্য দল বিশেষ করে শাসক দলের সঙ্গে বসে সুরাহা করতে পারে, একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, তাহলে সেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন করতে কোন বাধা নেই। সেই প্রতিশ্রুতিটি আমরা এখনও পাচ্ছি না। ওই অবস্থাটি এখনও আসেনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে যেটা করছি, আহ্বান করছি। আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি তারা যেন নির্বাচনে আসে। যেকোন উপায়ে আমাদের এই নির্বাচনে আসে। তাদের রাজনৈতিক কৌশল যদি ভিন্ন হয় সেক্ষেত্রে আমাদের কোন মন্তব্য নেই। তার পক্ষে-বিপক্ষে আমাদের কোন অবস্থান নেই। রাজনৈতিক দলের নিজস্ব স্বাধীনতা আছে। তারা তাদের প্রজ্ঞা অনুযায়ী যেকোন কৌশল বা কর্মসূচি হাতে নিতে পারে।’

আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। ইতোমধ্যে চারটি দলের সঙ্গে বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল সংলাপে অংশ নেয়নি।