সীতাকুণ্ডে জঙ্গল সলিমপুরের ত্রাস ১৮ মামলার আসামি ইয়াসিন গ্রেপ্তার

সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি কর্মকর্তাদের সামনে সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আরিফকে বেধড়ক মারধরকারী জঙ্গল সলিমপুরের ত্রাস, দুর্ধষ সন্ত্রাসী ও ১৮ মামলার আসামি ইয়াসিন বাহিনীর প্রধান ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল দুপুরে সন্ত্রাসী ইয়াসিন জামিন নিতে গেলে আদালত চত্বরের আইনজীবী ভবনের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বনিক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি সে আইনজীবী ভবনের ৩১৫ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছে। সে মোতাবেক ওঁৎ পেতে থাকে পুলিশ। এ সময় আইনজীবী ভবন হতে বের হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জানা যায়, গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মাসুদ কামাল, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মং মারমা ও স্থানীয় চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ পরিদর্শনে যান।

পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে বহরের একটি গাড়ি থেকে নামিয়ে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আরিফকে বেধড়ক মারধর করে ইয়াসিন বাহিনীর প্রধান ইয়াসিনসহ তার সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় হামলার শিকার ইউপি সদস্য আরিফের ছোট ভাই আবদুল আলিম বাদী হয়ে ইয়াসিনসহ ৬ জনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলার প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরও জানা যায়, ইসাসিন নোয়াখালীর সুবর্ণচরের সিএনজি চালক শামসুল হকের ছেলে। জীবিকার সন্ধানে কয়েক বছর আগে ছোট ভাই ফারুকসহ চট্টগ্রামে আসেন। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসবাস শেষে জঙ্গল সলিমপুরে ভাড়া ঘরে বসবাস শুরু করেন। তারপর ধীরে ধীরে সন্ত্রাসী এনে আশপাশের পাহাড় দখল করে কেটে বিক্রি শুরু করেন। সেখান থেকেই রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যান দুই ভাই। সন্ত্রাসী ইয়াসিন জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরের ভূমিদস্যু ও পাহাড় খেকো হিসেবে পরিচিত। তিনি দীর্ঘদিন যাবত সলিমপুর এলাকায় সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা দখলের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তার পথে কেউ বাঁধা হয়ে আসলে তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিত। তার নামে বিভিন্ন থানায় হত্যা, গুম, সরকারি জায়গা দখলসহ বিভিন্ন অপরাধের ১৮টি মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই শুক্রবার সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগার, ক্রীড়া কমপ্লেক্স, বিশেষায়িত হাসপাতাল, আইকনিক মসজিদ, বেতার ভবন, জাতীয় তথ্যকেন্দ্র, নভোথিয়েটার, ইকোপার্কসহ বিভিন্ন সরকারি সরকারি দপ্তর করার যে উদ্যোগ তা বাস্তবায়নে স্থানটি পরিদর্শন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। তারই ধারাবাহিকতায় ১৫ জুলাই শুক্রবার স্থানীয় সরকার বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ), সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) ও স্থানীয় জঙ্গল সলিমপুর পরিদর্শনে যান। তখনই সন্ত্রাসী ইয়াসিন হামলার ঘটনা ঘটায়।

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০২২ , ০৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ২০ জিলহজ ১৪৪৩

সীতাকুণ্ডে জঙ্গল সলিমপুরের ত্রাস ১৮ মামলার আসামি ইয়াসিন গ্রেপ্তার

প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)

সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি কর্মকর্তাদের সামনে সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আরিফকে বেধড়ক মারধরকারী জঙ্গল সলিমপুরের ত্রাস, দুর্ধষ সন্ত্রাসী ও ১৮ মামলার আসামি ইয়াসিন বাহিনীর প্রধান ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল দুপুরে সন্ত্রাসী ইয়াসিন জামিন নিতে গেলে আদালত চত্বরের আইনজীবী ভবনের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বনিক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি সে আইনজীবী ভবনের ৩১৫ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছে। সে মোতাবেক ওঁৎ পেতে থাকে পুলিশ। এ সময় আইনজীবী ভবন হতে বের হলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জানা যায়, গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মাসুদ কামাল, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মং মারমা ও স্থানীয় চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ পরিদর্শনে যান।

পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে বহরের একটি গাড়ি থেকে নামিয়ে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আরিফকে বেধড়ক মারধর করে ইয়াসিন বাহিনীর প্রধান ইয়াসিনসহ তার সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় হামলার শিকার ইউপি সদস্য আরিফের ছোট ভাই আবদুল আলিম বাদী হয়ে ইয়াসিনসহ ৬ জনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলার প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরও জানা যায়, ইসাসিন নোয়াখালীর সুবর্ণচরের সিএনজি চালক শামসুল হকের ছেলে। জীবিকার সন্ধানে কয়েক বছর আগে ছোট ভাই ফারুকসহ চট্টগ্রামে আসেন। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বসবাস শেষে জঙ্গল সলিমপুরে ভাড়া ঘরে বসবাস শুরু করেন। তারপর ধীরে ধীরে সন্ত্রাসী এনে আশপাশের পাহাড় দখল করে কেটে বিক্রি শুরু করেন। সেখান থেকেই রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যান দুই ভাই। সন্ত্রাসী ইয়াসিন জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরের ভূমিদস্যু ও পাহাড় খেকো হিসেবে পরিচিত। তিনি দীর্ঘদিন যাবত সলিমপুর এলাকায় সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা দখলের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তার পথে কেউ বাঁধা হয়ে আসলে তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিত। তার নামে বিভিন্ন থানায় হত্যা, গুম, সরকারি জায়গা দখলসহ বিভিন্ন অপরাধের ১৮টি মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই শুক্রবার সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগার, ক্রীড়া কমপ্লেক্স, বিশেষায়িত হাসপাতাল, আইকনিক মসজিদ, বেতার ভবন, জাতীয় তথ্যকেন্দ্র, নভোথিয়েটার, ইকোপার্কসহ বিভিন্ন সরকারি সরকারি দপ্তর করার যে উদ্যোগ তা বাস্তবায়নে স্থানটি পরিদর্শন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। তারই ধারাবাহিকতায় ১৫ জুলাই শুক্রবার স্থানীয় সরকার বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপরিচালক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ), সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) ও স্থানীয় জঙ্গল সলিমপুর পরিদর্শনে যান। তখনই সন্ত্রাসী ইয়াসিন হামলার ঘটনা ঘটায়।