ফুঁসে ওঠা সাগর শান্ত এখনও বিপদসীমার উপরে ৮ নদীর পানি

আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার ভরা কটাল কেটে যাওয়ায় ফুঁসে ওঠা সাগর কিছুটা শান্ত হবার সাথে সাথে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করলেও এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গত ৪৮ ঘণ্টায় মেঘনা, তেতুলিয়া, বুড়িশ^র, বলেশ^র, কঁচা, কীর্তনখোলা, বিষখালী ও পায়রাসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের আমন বীজতলাসহ বিপুল ফসলি জমি প্লাবনের আশঙ্কা মুক্ত হতে পেরেছে। তবে এবার ভরা আষাঢ়ের মত শ্রাবণেও দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতে সব ধরনের ফসল ঝুঁকির মুখে রয়েছে। আমন বীজতলা তৈরিসহ রোপণ পরবর্তি পরিচর্যাও ব্যাহত হওয়ায় আবাদ ও উৎপাদন নিয়ে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা কাজ করছে কৃষকদের মাঝে।

আষাঢ়ের পূর্ণিমার ভরা কটালে গত দুসপ্তাহ জুড়েই দক্ষিণাঞ্চলের মাঝারি থেকে বড় নদ-নদীগুলোর বেশিরভাগ এলাকায়ই বিপদসীমা অতিক্রম করে দুকুল ছাপিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে গত শুক্রবার রাতেই সাগর শান্ত হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে উপকূল ভাগসহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সবগুলো নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বরিশালের কীর্তনখোলা নদী আগের দিনের চেয়ে দশমিক ২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ভোলা খেয়াঘাটের তেতুলিয়া নদী আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১০ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিদদসীমার সমান উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। ভোলার দৌলতখানে মেঘনা ও সুরমা নদী আগেরদিনের চেয়ে দশমিক ১০ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। তজুমদ্দিনেও সুরমা-মেঘনা নদী আগের দিনের চেয়ে দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ঝালকাঠিতে বিষখালী নদী আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে । পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বুড়িশ^র ও পায়রা নদীর পানি দশমিক ২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও বিপদসীমার দশমিক ২২ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনার বিষখালী নদীও আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পাথরঘাটার বিষখালী নদী আগের দিনের সমান উচ্চতায় প্রবাহিত হলেও তা বিপদসীমার দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার ওপরেই প্রবাহিত হচ্ছে। পিরোজপুরের বলেশ^র নদীর পানি আগের দিনের চেয়ে দশমিক ২ সেন্টিমার হ্রাস পেলেও বিপদসীমার ছুঁই ছুঁই উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

অপরদিকে উমেদপুরে কঁচা নদীর পানিও আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৬ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও এখনো বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরেই প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে পূর্ণিমার ভরা কোটাল চলে যাওয়ায় ফুঁসে ওঠা সাগর কিছুটা শান্ত হবার সাথে সাথে উজানের পানি গ্রহণ করতে শুরু করেছে। ফলে সোমবার থেকে বুধবারের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবন মুক্ত হবে বলে আশা করছে ওয়াকিবাহাল মহল।

বুধবার, ২০ জুলাই ২০২২ , ০৫ শ্রাবণ ১৪২৯ ২১ জিলহজ ১৪৪৩

ফুঁসে ওঠা সাগর শান্ত এখনও বিপদসীমার উপরে ৮ নদীর পানি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার ভরা কটাল কেটে যাওয়ায় ফুঁসে ওঠা সাগর কিছুটা শান্ত হবার সাথে সাথে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করলেও এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গত ৪৮ ঘণ্টায় মেঘনা, তেতুলিয়া, বুড়িশ^র, বলেশ^র, কঁচা, কীর্তনখোলা, বিষখালী ও পায়রাসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের আমন বীজতলাসহ বিপুল ফসলি জমি প্লাবনের আশঙ্কা মুক্ত হতে পেরেছে। তবে এবার ভরা আষাঢ়ের মত শ্রাবণেও দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতে সব ধরনের ফসল ঝুঁকির মুখে রয়েছে। আমন বীজতলা তৈরিসহ রোপণ পরবর্তি পরিচর্যাও ব্যাহত হওয়ায় আবাদ ও উৎপাদন নিয়ে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা কাজ করছে কৃষকদের মাঝে।

আষাঢ়ের পূর্ণিমার ভরা কটালে গত দুসপ্তাহ জুড়েই দক্ষিণাঞ্চলের মাঝারি থেকে বড় নদ-নদীগুলোর বেশিরভাগ এলাকায়ই বিপদসীমা অতিক্রম করে দুকুল ছাপিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে গত শুক্রবার রাতেই সাগর শান্ত হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে উপকূল ভাগসহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সবগুলো নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বরিশালের কীর্তনখোলা নদী আগের দিনের চেয়ে দশমিক ২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ভোলা খেয়াঘাটের তেতুলিয়া নদী আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১০ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিদদসীমার সমান উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। ভোলার দৌলতখানে মেঘনা ও সুরমা নদী আগেরদিনের চেয়ে দশমিক ১০ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। তজুমদ্দিনেও সুরমা-মেঘনা নদী আগের দিনের চেয়ে দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ঝালকাঠিতে বিষখালী নদী আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার দশমিক ১৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে । পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বুড়িশ^র ও পায়রা নদীর পানি দশমিক ২ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও বিপদসীমার দশমিক ২২ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনার বিষখালী নদীও আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পাথরঘাটার বিষখালী নদী আগের দিনের সমান উচ্চতায় প্রবাহিত হলেও তা বিপদসীমার দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার ওপরেই প্রবাহিত হচ্ছে। পিরোজপুরের বলেশ^র নদীর পানি আগের দিনের চেয়ে দশমিক ২ সেন্টিমার হ্রাস পেলেও বিপদসীমার ছুঁই ছুঁই উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

অপরদিকে উমেদপুরে কঁচা নদীর পানিও আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৬ সেন্টিমিটার হ্রাস পেলেও এখনো বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপরেই প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে পূর্ণিমার ভরা কোটাল চলে যাওয়ায় ফুঁসে ওঠা সাগর কিছুটা শান্ত হবার সাথে সাথে উজানের পানি গ্রহণ করতে শুরু করেছে। ফলে সোমবার থেকে বুধবারের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবন মুক্ত হবে বলে আশা করছে ওয়াকিবাহাল মহল।