গত সাত বছরে এবারের ঈদযাত্রায় সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি সর্বোচ্চ

৩১৯টি দুর্ঘটনায় ৩৯৮ জন নিহত

ঈদযাত্রায় গত ১৫ দিনে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩১৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯৮ জন নিহত ৭৭৪ জন আহত হয়েছে। ঈদের সময় সব মহাসড়কে মোটরাসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। তারপরও এবার ঈদে ১১৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩১ জন নিহত, ৬৮ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ৪২ শতাংশ, নিহতের ৩২ দশমিক ৯১ শতাংশ বলে জানিয়েছেন যাত্রীকল্যাণ সমিতি।

এছাড়া এবার ঈদে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ১০টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও ১৫ জন আহত এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে যৌথভাবে ৩৫৪টি দুর্ঘটনায় ৪৪০ জন নিহত ও ৭৯১ জন আহত হয়েছে। যা বিগত ৭ বছরের ঈদুল আজহায় যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি দুটোই সর্বোচ্চ বলে দাবি করে সংগঠনটি।

গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে তৈরি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিগত ২০২১ সালের ঈদুল আজহায় লকডাউনের কারণে যাতায়াত সীমিত থাকায় এবারের ঈদে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। এবারের ঈদে রাজধানী ঢাকা থেকে এক কোটি ২০ লাখ, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আরও প্রায় ৪ কোটি মানুষের যাতায়াত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করায় গণপরিবহন সংকটের সুযোগ নিয়ে এবারের ঈদে সবচেয়ে বেশি ভাড়া নৈরাজ্য হয়েছে। এছাড়া নানা অব্যবস্থাপনার কারণে বিভিন্ন রুটে ৪ ঘণ্টার যাত্রা ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টাও লেগেছে। পথে পথে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্যের পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন বাসের পাশাপাশি ট্রাক, কার্ভাডভ্যান, পিকআপ, মুরগিবাহী প্রিজন ভ্যানেও যাত্রী যাতায়াত করতে দেখা গেছে।

বরাবরের মতো ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয়, টিকেট কালোবাজারি, টিকেট পেতে বিড়ম্বনাসহ নানা ভোগান্তি রেলযাত্রীদের পিছু লেগেই ছিল। পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রী সংকটে দেশের বিভিন্ন নৌপথে ভাড়া কমানো হলেও ঈদযাত্রায় টিকেট কালোবাজারি, ভাড়া নৈরাজ্য নৌপথের যাত্রীদের আগের মতোই ছিল।

দুর্ঘটনায় বেশি নিহত পরিবহন চালক

প্রতিবেদনে ঈদযাত্রা শুরুর দিন গত ৩ জুলাই থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৭ জুলাই পর্যন্ত গত ১৫ দিনে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে নিহত হয়েছে পরিবহন চালক ও শ্রমিক। এর মধ্যে ১২৪ জন চালক ও ৭ জন পরিবহন শ্রেমিক নিহত হয়েছে। এছাড়া ৮৬ জন পথচারী, ৩৬ জন নারী ও শিশু, ২৯ জন শিক্ষার্র্থী, ৫ জন শিক্ষক, ৩ জন সাংবাদিক, ৪ জন চিকিৎসক ৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য নিহত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ২৯ দশমিক ০৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩ দশমিক ১৮ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ কার-মাইক্রো-জিপ, ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ অটোরিকশা, ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল ও ১৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

বেশি দুর্ঘটনা আঞ্চলিক মহাসড়কে

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৯১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৬ দশমিক ৭০ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়া সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে সংঘটিত হয়। সংগঠিত দুর্ঘটনার ২৩ দশমিক ১৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৫০ দশমিক ৭৮ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেয়ার ঘটনা, ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে ও ০ দশমিক ৩১ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

৫টি কারণে দুর্ঘটনা হচ্ছে

১. বেপরোয়া গতি, জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মাকিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো। ২. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালদের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। ৩. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। ৪. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন। ৫. মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, অটোরিকশার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ‘সড়ক বিভাজক না থাকার কারণে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। এছাড়া পথচারীর জন্য নিরাপদ ফুটপাত না থাকায় পথচারীর মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এই দুটি বিষয়ে মনযোগী হলে উল্লেখযোগ্য হারে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।’

সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘৩৭ লাখ মোটরসাইকেল বন্ধ থাকার পড়েও এবারের ঈদে মাত্র ৯ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কমলেও বিগত ৭ বছরের হিসাবে এবারের ঈদে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি প্রমাণ করে কোন একটি নির্দিষ্ট যানবাহন বন্ধ করে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ।’

বুধবার, ২০ জুলাই ২০২২ , ০৫ শ্রাবণ ১৪২৯ ২১ জিলহজ ১৪৪৩

গত সাত বছরে এবারের ঈদযাত্রায় সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি সর্বোচ্চ

৩১৯টি দুর্ঘটনায় ৩৯৮ জন নিহত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

ঈদযাত্রায় গত ১৫ দিনে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩১৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯৮ জন নিহত ৭৭৪ জন আহত হয়েছে। ঈদের সময় সব মহাসড়কে মোটরাসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ছিল। তারপরও এবার ঈদে ১১৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩১ জন নিহত, ৬৮ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ৪২ শতাংশ, নিহতের ৩২ দশমিক ৯১ শতাংশ বলে জানিয়েছেন যাত্রীকল্যাণ সমিতি।

এছাড়া এবার ঈদে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ১০টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও ১৫ জন আহত এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে যৌথভাবে ৩৫৪টি দুর্ঘটনায় ৪৪০ জন নিহত ও ৭৯১ জন আহত হয়েছে। যা বিগত ৭ বছরের ঈদুল আজহায় যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি দুটোই সর্বোচ্চ বলে দাবি করে সংগঠনটি।

গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে তৈরি করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিগত ২০২১ সালের ঈদুল আজহায় লকডাউনের কারণে যাতায়াত সীমিত থাকায় এবারের ঈদে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। এবারের ঈদে রাজধানী ঢাকা থেকে এক কোটি ২০ লাখ, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আরও প্রায় ৪ কোটি মানুষের যাতায়াত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করায় গণপরিবহন সংকটের সুযোগ নিয়ে এবারের ঈদে সবচেয়ে বেশি ভাড়া নৈরাজ্য হয়েছে। এছাড়া নানা অব্যবস্থাপনার কারণে বিভিন্ন রুটে ৪ ঘণ্টার যাত্রা ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টাও লেগেছে। পথে পথে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্যের পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন বাসের পাশাপাশি ট্রাক, কার্ভাডভ্যান, পিকআপ, মুরগিবাহী প্রিজন ভ্যানেও যাত্রী যাতায়াত করতে দেখা গেছে।

বরাবরের মতো ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয়, টিকেট কালোবাজারি, টিকেট পেতে বিড়ম্বনাসহ নানা ভোগান্তি রেলযাত্রীদের পিছু লেগেই ছিল। পদ্মা সেতু চালুর পর যাত্রী সংকটে দেশের বিভিন্ন নৌপথে ভাড়া কমানো হলেও ঈদযাত্রায় টিকেট কালোবাজারি, ভাড়া নৈরাজ্য নৌপথের যাত্রীদের আগের মতোই ছিল।

দুর্ঘটনায় বেশি নিহত পরিবহন চালক

প্রতিবেদনে ঈদযাত্রা শুরুর দিন গত ৩ জুলাই থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৭ জুলাই পর্যন্ত গত ১৫ দিনে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে নিহত হয়েছে পরিবহন চালক ও শ্রমিক। এর মধ্যে ১২৪ জন চালক ও ৭ জন পরিবহন শ্রেমিক নিহত হয়েছে। এছাড়া ৮৬ জন পথচারী, ৩৬ জন নারী ও শিশু, ২৯ জন শিক্ষার্র্থী, ৫ জন শিক্ষক, ৩ জন সাংবাদিক, ৪ জন চিকিৎসক ৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও ৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য নিহত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ২৯ দশমিক ০৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩ দশমিক ১৮ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ কার-মাইক্রো-জিপ, ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ অটোরিকশা, ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল ও ১৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

বেশি দুর্ঘটনা আঞ্চলিক মহাসড়কে

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৯১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৬ দশমিক ৭০ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়া সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে সংঘটিত হয়। সংগঠিত দুর্ঘটনার ২৩ দশমিক ১৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৫০ দশমিক ৭৮ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেয়ার ঘটনা, ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে ও ০ দশমিক ৩১ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

৫টি কারণে দুর্ঘটনা হচ্ছে

১. বেপরোয়া গতি, জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মাকিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো। ২. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালদের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। ৩. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। ৪. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন। ৫. মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, অটোরিকশার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ‘সড়ক বিভাজক না থাকার কারণে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। এছাড়া পথচারীর জন্য নিরাপদ ফুটপাত না থাকায় পথচারীর মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এই দুটি বিষয়ে মনযোগী হলে উল্লেখযোগ্য হারে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব।’

সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘৩৭ লাখ মোটরসাইকেল বন্ধ থাকার পড়েও এবারের ঈদে মাত্র ৯ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কমলেও বিগত ৭ বছরের হিসাবে এবারের ঈদে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি প্রমাণ করে কোন একটি নির্দিষ্ট যানবাহন বন্ধ করে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ।’