মেট্রোরেলের ব্যয় ও সময় বাড়ানো হয়েছে

ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-৬ (এমআরটি) বা মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির কারণে এক দফা ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ, বিদ্যুৎ বিল ও ফুটপাত উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ১১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৯৯ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এখন পর্যন্ত এর মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ মেট্রোরেলের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয় ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য এক দশমিক ৬ কিলোমিটার বৃদ্ধি করা হয়েছে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরে মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশটি উদ্বোধনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। আর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ উদ্বোধন করা হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। তবে মতিঝিল-কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণ ও নির্মাণ-পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণসহ সব মিলিয়ে প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে। বর্তমানে তা ২০২৪ সালের জুনে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে মেট্রোরেলের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (আরডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। যা গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

জানা গেছে, প্রথমে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য মেট্রোরেল-৬ পরিকল্পনা নেয়া হয়। পরে তা কমলাপুর পর্যন্ত এক দশমিক ১৬ কিলোমিটার বৃদ্ধি করা হয়। তাই দিয়াবাড়ী-মতিঝিল-কমলাপুর মেট্রোরেল-৬ দৈর্ঘ্য হবে ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার। বর্তমানে মতিঝিল-কমলাপুর অংশের সমীক্ষা শেষে ডিজাইন শেষে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

প্রকল্প সূত্র জানায়, উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল-৬ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২ সালের জুলাইয়ে অনুমোদন করা হয়। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৭ লাখ টাকা। তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এমআরটি-৬ নির্মাণে প্রাথমিকভাবে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ দেয়ার কথা ছিল ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আর বাংলাদেশ সরকারের দেয়ার কথা পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তবে সংশোধিত হিসাবে জাইকা ঋণ দেবে ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে আট হাজার ৪০৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধির বেশকিছু কারণ ও খাত তুলে ধরা হয়েছে মেট্রোরেলের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনার (আরডিপিপি) মধ্যে সাধারণ পরামর্শক খাতে ৫৭৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ও ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্টের (টিওডি) পরামর্শক খাতে ব্যয় বাড়ছে ১৩৫ কোটি টাকা। এছাড়া সিডি-ভ্যাট খাতে অতিরিক্ত লাগবে ৮৬২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। মূলত সরকারিভাবে করহার ১৩ দশমিক ৪২ থেকে বাড়িয়ে ১৬ শতাংশ করায় এ ব্যয় বাড়ছে। আর প্রাইস কন্টিনজেন্সি খাতে ব্যয় বাড়ছে ১১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এক দশমিক ১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করতে গিয়ে পূর্ত কাজে ৭১৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, বৈদ্যুতিক ও মেকানিক্যাল ব্যবস্থা (ইঅ্যান্ডএম) স্থাপনে ৩২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং রোলিং স্টক (ইঞ্জিন-কোচ) খাতে ৫০ কোটি ১৫ লাখ টাকা লাগবে। প্রকল্পটির রাজস্ব খাতের ব্যয়ের মধ্যে মেট্রোরেলের ট্রায়াল রানে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল খাতে ২০০ কোটি টাকা, বেতন-ভাতা খাতে ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, অফিস ভাড়া খাতে এক কোটি ২৯ লাখ টাকা, সভা-সেমিনার আয়োজনে এক কোটি ১০ লাখ টাকা, বিটিআরসির লাইসেন্স ফি বাবদ এক কোটি টাকা, পরিষেবা সংযোগ লাইন স্থানান্তরে ১০ কোটি টাকা, মেট্রোরেল পরিচালনায় প্রশিক্ষণ খাতে পাঁচ কোটি টাকা ও ডিজিটাল আর্কাইভ খাতে ৫০ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

প্রকল্পটির নির্মাণ খাতের মধ্যে স্টেশন প্লাজা নির্মাণে ৯২ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ইঅ্যান্ডএম স্থাপনে (প্যাকেজ-৭) দুই হাজার ২৫৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা, রোলিং স্টক (সিপি-৮) কেনায় ৮৫১ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং টিওডি (উন্নতমানের ফুটপাত, পার্কিং, বাস স্টপেজ, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড ইত্যাদি) খাতে ৮৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা প্রয়োজন। এর বাইরে প্রকল্পের জন্য রাজউকের শূন্য দশমিক ৪৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে ১৩০ কোটি টাকা, স্টেশন প্লাজার জন্য ছয় দশমিক ১২ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে তিন হাজার ৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং মতিঝিল-কমলাপুর অংশের জন্য দুই দশমিক ৪০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে এক হাজার ১৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে। আর সরকার কর্তৃক জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের হার বাড়ানোয় বিভিন্ন মৌজায় ৪৫৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। সব মিলিয়ে জমি অধিগ্রহণ খাতে অতিরিক্ত লাগবে পাঁচ হাজার ৩৬৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

এদিকে উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোর ভূমি উন্নয়নে (সিপি-০১) ৬৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। একইভাবে আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার অংশ (সিপি-০৫) নির্মাণে সাশ্রয় হচ্ছে ৬৯১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এতে দুই প্যাকেজে ৭৬০ কোটি ৬৩ লাখ ব্যয় হ্রাস করা হবে। সব মিলিয়ে এমআরটি-৬ প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ১১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক সংবাদকে বলেন, ‘প্রকল্পে আয়তন বৃদ্ধির কারণে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগেই মেট্রোরেলের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (আরডিপিপি) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এরডিপিপিতে যেভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে সেভাবে গতকাল একনেক সভায় তা অনুমোদন হয়েছে। তবে প্রকল্পের বর্ধিত অংশ কমলাপুর পর্যন্ত ২০২৫ সালের ডিসেম্বর শেষ হবে। এছাড়া চলতি বছর ডিসেম্বরে উত্তরা-আগারগাঁও পর্যন্ত এবং আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ উদ্বোধন করা হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর।’

বুধবার, ২০ জুলাই ২০২২ , ০৫ শ্রাবণ ১৪২৯ ২১ জিলহজ ১৪৪৩

মেট্রোরেলের ব্যয় ও সময় বাড়ানো হয়েছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-৬ (এমআরটি) বা মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির কারণে এক দফা ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ, বিদ্যুৎ বিল ও ফুটপাত উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ১১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৯৯ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এখন পর্যন্ত এর মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। সর্বশেষ মেট্রোরেলের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয় ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য এক দশমিক ৬ কিলোমিটার বৃদ্ধি করা হয়েছে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরে মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশটি উদ্বোধনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। আর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ উদ্বোধন করা হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। তবে মতিঝিল-কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণ ও নির্মাণ-পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণসহ সব মিলিয়ে প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে। বর্তমানে তা ২০২৪ সালের জুনে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে মেট্রোরেলের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (আরডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। যা গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

জানা গেছে, প্রথমে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য মেট্রোরেল-৬ পরিকল্পনা নেয়া হয়। পরে তা কমলাপুর পর্যন্ত এক দশমিক ১৬ কিলোমিটার বৃদ্ধি করা হয়। তাই দিয়াবাড়ী-মতিঝিল-কমলাপুর মেট্রোরেল-৬ দৈর্ঘ্য হবে ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার। বর্তমানে মতিঝিল-কমলাপুর অংশের সমীক্ষা শেষে ডিজাইন শেষে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

প্রকল্প সূত্র জানায়, উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেল-৬ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২ সালের জুলাইয়ে অনুমোদন করা হয়। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৭ লাখ টাকা। তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এমআরটি-৬ নির্মাণে প্রাথমিকভাবে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ দেয়ার কথা ছিল ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আর বাংলাদেশ সরকারের দেয়ার কথা পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তবে সংশোধিত হিসাবে জাইকা ঋণ দেবে ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে আট হাজার ৪০৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধির বেশকিছু কারণ ও খাত তুলে ধরা হয়েছে মেট্রোরেলের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনার (আরডিপিপি) মধ্যে সাধারণ পরামর্শক খাতে ৫৭৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ও ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্টের (টিওডি) পরামর্শক খাতে ব্যয় বাড়ছে ১৩৫ কোটি টাকা। এছাড়া সিডি-ভ্যাট খাতে অতিরিক্ত লাগবে ৮৬২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। মূলত সরকারিভাবে করহার ১৩ দশমিক ৪২ থেকে বাড়িয়ে ১৬ শতাংশ করায় এ ব্যয় বাড়ছে। আর প্রাইস কন্টিনজেন্সি খাতে ব্যয় বাড়ছে ১১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এক দশমিক ১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করতে গিয়ে পূর্ত কাজে ৭১৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, বৈদ্যুতিক ও মেকানিক্যাল ব্যবস্থা (ইঅ্যান্ডএম) স্থাপনে ৩২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং রোলিং স্টক (ইঞ্জিন-কোচ) খাতে ৫০ কোটি ১৫ লাখ টাকা লাগবে। প্রকল্পটির রাজস্ব খাতের ব্যয়ের মধ্যে মেট্রোরেলের ট্রায়াল রানে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল খাতে ২০০ কোটি টাকা, বেতন-ভাতা খাতে ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, অফিস ভাড়া খাতে এক কোটি ২৯ লাখ টাকা, সভা-সেমিনার আয়োজনে এক কোটি ১০ লাখ টাকা, বিটিআরসির লাইসেন্স ফি বাবদ এক কোটি টাকা, পরিষেবা সংযোগ লাইন স্থানান্তরে ১০ কোটি টাকা, মেট্রোরেল পরিচালনায় প্রশিক্ষণ খাতে পাঁচ কোটি টাকা ও ডিজিটাল আর্কাইভ খাতে ৫০ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

প্রকল্পটির নির্মাণ খাতের মধ্যে স্টেশন প্লাজা নির্মাণে ৯২ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ইঅ্যান্ডএম স্থাপনে (প্যাকেজ-৭) দুই হাজার ২৫৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা, রোলিং স্টক (সিপি-৮) কেনায় ৮৫১ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং টিওডি (উন্নতমানের ফুটপাত, পার্কিং, বাস স্টপেজ, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড ইত্যাদি) খাতে ৮৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা প্রয়োজন। এর বাইরে প্রকল্পের জন্য রাজউকের শূন্য দশমিক ৪৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে ১৩০ কোটি টাকা, স্টেশন প্লাজার জন্য ছয় দশমিক ১২ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে তিন হাজার ৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং মতিঝিল-কমলাপুর অংশের জন্য দুই দশমিক ৪০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণে এক হাজার ১৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে। আর সরকার কর্তৃক জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের হার বাড়ানোয় বিভিন্ন মৌজায় ৪৫৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। সব মিলিয়ে জমি অধিগ্রহণ খাতে অতিরিক্ত লাগবে পাঁচ হাজার ৩৬৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

এদিকে উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোর ভূমি উন্নয়নে (সিপি-০১) ৬৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। একইভাবে আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার অংশ (সিপি-০৫) নির্মাণে সাশ্রয় হচ্ছে ৬৯১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এতে দুই প্যাকেজে ৭৬০ কোটি ৬৩ লাখ ব্যয় হ্রাস করা হবে। সব মিলিয়ে এমআরটি-৬ প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ১১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক সংবাদকে বলেন, ‘প্রকল্পে আয়তন বৃদ্ধির কারণে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগেই মেট্রোরেলের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (আরডিপিপি) সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এরডিপিপিতে যেভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে সেভাবে গতকাল একনেক সভায় তা অনুমোদন হয়েছে। তবে প্রকল্পের বর্ধিত অংশ কমলাপুর পর্যন্ত ২০২৫ সালের ডিসেম্বর শেষ হবে। এছাড়া চলতি বছর ডিসেম্বরে উত্তরা-আগারগাঁও পর্যন্ত এবং আগারগাঁও-মতিঝিল অংশ উদ্বোধন করা হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর।’