‘অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে তথ্য গোপন করেছিল রাজাপাকসা সরকার’

শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন যে তার পূর্ববর্তী সরকার দেশের আর্থিক সংকটের বিষয়ে তথ্য গোপন করেছিল। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

রনিল বলেন, সাবেক গোতাবায়া রাজাপাকসা প্রশাসন সত্য বলেনি। শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল এবং এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহযোগিতা চাওয়া প্রয়োজন ছিল। আমি বলতে চাই যে আমি জানি দেশের জনগণ কতটা কষ্টে আছেন, যোগ করেন তিনি।

দেশের প্রশাসনিক রাজধানী শ্রী জয়াবর্ধনেপুরা কোট্টের পার্লামেন্ট থেকে সিএনএনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারে জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি জানি তারা কতটা কষ্ট পাচ্ছেন। আমরা পিছিয়ে গেছি। নিজেদের যা আছে তা দিয়েই আমরা আবার নিজেদের টেনে তুলতে চাই।

দেশকে অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থায় ফেরানোর প্রত্যয় জানিয়ে এই রাজনীতিবিদ বলেন, আমাদের পাঁচ বছর বা ১০ বছরের প্রয়োজন নেই। চলুন, আগামী বছরের শেষ নাগাদ আবার স্থিতিশীলতায় ফিরতে শুরু করি, আর ২০২৪ সালের মধ্যে একটি কার্যকর অর্থনীতি গড়ে তুলি, যা বাড়তে শুরু করবে।

সিএনএনকে তিনি বলেন, তার যে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল, সেখানকার বেশিরভাগ জিনিসই রক্ষা করা যায়নি। চার হাজারের বেশি বই সেখানে নষ্ট হয়েছে, যার মধ্যে শত বছরের পুরনো বইও ছিল। ১২৫ বছরের পুরনো একটি পিয়ানোও পুড়ে গেছে।

এরপরও দেশের সর্বোচ্চ পদে লড়াইয়ের ইচ্ছা ব্যক্ত করে বিক্রমাসিংহে সিএনএনকে বলেন, তিনি আর বিগত সরকার ‘এক নন’। জনগণও সেটা জানে। আমি দেশের অর্থনীতির হাল ধরতে এসেছি।

কেন বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট হতে চাইছেন এবং ফের জনরোষের নিশানায় আসার ঝুঁকি নিচ্ছেন? এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমার দেশে যা হচ্ছে, আমি চাই না এটা চলতে থাকুক। আমার ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, আমি চাই না অন্য কেউ ভুক্তভোগী হোকৃ অন্য কারও ক্ষেত্রে এমনটি হোক নিশ্চয় আমি তা চাই না।

নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোট হবে শ্রীলঙ্কায়, তাতে প্রার্থী হচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহেও। ছয়বারের এই প্রধানমন্ত্রী কোনোবারই তার ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ পার করতে পারেননি।

সর্বশেষ মে মাসে বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কায় ক্ষমতাসীন পোদুজানা পেরামুনা পার্টির হাত ধরেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হয়ে আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে প্রতিযোগিতা করছেন।

তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন কমপক্ষে আরও দুই প্রার্থী। কিন্তু বিক্রমাসিংহের উচ্চাভিলাস সোয়া দুই কোটি মানুষের এই দেশে ইতোমধ্যে নতুন অস্থিরতার হুমকি তৈরি করেছে।

বুধবার, ২০ জুলাই ২০২২ , ০৫ শ্রাবণ ১৪২৯ ২১ জিলহজ ১৪৪৩

‘অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে তথ্য গোপন করেছিল রাজাপাকসা সরকার’

image

শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন যে তার পূর্ববর্তী সরকার দেশের আর্থিক সংকটের বিষয়ে তথ্য গোপন করেছিল। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

রনিল বলেন, সাবেক গোতাবায়া রাজাপাকসা প্রশাসন সত্য বলেনি। শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল এবং এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহযোগিতা চাওয়া প্রয়োজন ছিল। আমি বলতে চাই যে আমি জানি দেশের জনগণ কতটা কষ্টে আছেন, যোগ করেন তিনি।

দেশের প্রশাসনিক রাজধানী শ্রী জয়াবর্ধনেপুরা কোট্টের পার্লামেন্ট থেকে সিএনএনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারে জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি জানি তারা কতটা কষ্ট পাচ্ছেন। আমরা পিছিয়ে গেছি। নিজেদের যা আছে তা দিয়েই আমরা আবার নিজেদের টেনে তুলতে চাই।

দেশকে অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থায় ফেরানোর প্রত্যয় জানিয়ে এই রাজনীতিবিদ বলেন, আমাদের পাঁচ বছর বা ১০ বছরের প্রয়োজন নেই। চলুন, আগামী বছরের শেষ নাগাদ আবার স্থিতিশীলতায় ফিরতে শুরু করি, আর ২০২৪ সালের মধ্যে একটি কার্যকর অর্থনীতি গড়ে তুলি, যা বাড়তে শুরু করবে।

সিএনএনকে তিনি বলেন, তার যে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল, সেখানকার বেশিরভাগ জিনিসই রক্ষা করা যায়নি। চার হাজারের বেশি বই সেখানে নষ্ট হয়েছে, যার মধ্যে শত বছরের পুরনো বইও ছিল। ১২৫ বছরের পুরনো একটি পিয়ানোও পুড়ে গেছে।

এরপরও দেশের সর্বোচ্চ পদে লড়াইয়ের ইচ্ছা ব্যক্ত করে বিক্রমাসিংহে সিএনএনকে বলেন, তিনি আর বিগত সরকার ‘এক নন’। জনগণও সেটা জানে। আমি দেশের অর্থনীতির হাল ধরতে এসেছি।

কেন বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট হতে চাইছেন এবং ফের জনরোষের নিশানায় আসার ঝুঁকি নিচ্ছেন? এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমার দেশে যা হচ্ছে, আমি চাই না এটা চলতে থাকুক। আমার ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, আমি চাই না অন্য কেউ ভুক্তভোগী হোকৃ অন্য কারও ক্ষেত্রে এমনটি হোক নিশ্চয় আমি তা চাই না।

নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোট হবে শ্রীলঙ্কায়, তাতে প্রার্থী হচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহেও। ছয়বারের এই প্রধানমন্ত্রী কোনোবারই তার ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ পার করতে পারেননি।

সর্বশেষ মে মাসে বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কায় ক্ষমতাসীন পোদুজানা পেরামুনা পার্টির হাত ধরেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সেখান থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হয়ে আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে প্রতিযোগিতা করছেন।

তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন কমপক্ষে আরও দুই প্রার্থী। কিন্তু বিক্রমাসিংহের উচ্চাভিলাস সোয়া দুই কোটি মানুষের এই দেশে ইতোমধ্যে নতুন অস্থিরতার হুমকি তৈরি করেছে।