রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৬৭ বিলিয়ন ডলার

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬৭ বিলিয়ন (৬ হাজার ৭০০ কোটি) ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে সরকার। সারা বছর পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে এ পরিমাণ আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গতকাল রপ্তানি আয়ের এ লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সার্বিক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ। পণ্য রপ্তানি খাতে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি ধরে নতুন আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৫৮ বিলিয়ন ডলার, যেখানে শুধু তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকেই ৪৬ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে। আর সেবা খাতে ৯ বিলিয়ন ডলারের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ খাতে প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।’

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণার আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, রপ্তানির নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকার বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় এনেছে। সেগুলো হলো সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতি ও গত ২০২১-২২ অর্থবছরের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির অর্জনের গতিধারা, পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণে সরকার প্রদত্ত আর্থিক সুবিধা, বিশ্ব বাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, দেশে করোনার প্রভাব, রপ্তানি সম্ভাবনাময় পণ্য ও সেবা খাতের বিকাশ, রপ্তানি সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের পরামর্শ এবং চলতি অর্থবছরের বাজেটে করোনা মোকাবিলায় সরকারের নেয়া নানামুখী উদ্যোগ।

এসব বিবেচনায় রেখে সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য দেশে সর্বোচ্চ রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি বাণিজ্যমন্ত্রীর। ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে সার্বিক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এর বিপরীতে বছর শেষে ১৭.৮০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে রপ্তানি আয় অর্জন হয় ৬০ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে বছর শেষে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে পণ্য রপ্তানি খাতে ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার অর্জন হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯.৭৩ শতাংশ বেশি। সেবা খাতে ৭.৫ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮ বিলিয়ন ডলার আয় হয়, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।

এর আগে গত জুলাই মাসে সদ্য সমাপ্ত ২০২১-২০২২ অর্থবছরের পণ্য রপ্তানির প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। সেই তথ্যে দেখা যায়, সেবা ছাড়া শুধু পণ্য রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয় হয়। এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে এতো আয় আসেনি।

তথ্যে দেখা যায়, গত অর্থবছরের ১২ মাসে বাংলাদেশে থেকে পাঁচ হাজার ২০৮ কোটি ২৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ এগিয়ে এবং আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। এর আগে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তিন হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানির ওপর ভিত্তি করে পরের অর্থবছরের জন্য চার হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম।

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২ , ০৬ শ্রাবণ ১৪২৯ ২২ জিলহজ ১৪৪৩

রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৬৭ বিলিয়ন ডলার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬৭ বিলিয়ন (৬ হাজার ৭০০ কোটি) ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে সরকার। সারা বছর পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে এ পরিমাণ আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গতকাল রপ্তানি আয়ের এ লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সার্বিক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ। পণ্য রপ্তানি খাতে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি ধরে নতুন আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৫৮ বিলিয়ন ডলার, যেখানে শুধু তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকেই ৪৬ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে। আর সেবা খাতে ৯ বিলিয়ন ডলারের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ খাতে প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।’

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণার আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, রপ্তানির নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকার বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় এনেছে। সেগুলো হলো সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতি ও গত ২০২১-২২ অর্থবছরের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির অর্জনের গতিধারা, পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণে সরকার প্রদত্ত আর্থিক সুবিধা, বিশ্ব বাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, দেশে করোনার প্রভাব, রপ্তানি সম্ভাবনাময় পণ্য ও সেবা খাতের বিকাশ, রপ্তানি সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের পরামর্শ এবং চলতি অর্থবছরের বাজেটে করোনা মোকাবিলায় সরকারের নেয়া নানামুখী উদ্যোগ।

এসব বিবেচনায় রেখে সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য দেশে সর্বোচ্চ রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি বাণিজ্যমন্ত্রীর। ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে সার্বিক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এর বিপরীতে বছর শেষে ১৭.৮০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে রপ্তানি আয় অর্জন হয় ৬০ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে বছর শেষে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে পণ্য রপ্তানি খাতে ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার অর্জন হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯.৭৩ শতাংশ বেশি। সেবা খাতে ৭.৫ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮ বিলিয়ন ডলার আয় হয়, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।

এর আগে গত জুলাই মাসে সদ্য সমাপ্ত ২০২১-২০২২ অর্থবছরের পণ্য রপ্তানির প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। সেই তথ্যে দেখা যায়, সেবা ছাড়া শুধু পণ্য রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয় হয়। এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে এতো আয় আসেনি।

তথ্যে দেখা যায়, গত অর্থবছরের ১২ মাসে বাংলাদেশে থেকে পাঁচ হাজার ২০৮ কোটি ২৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ এগিয়ে এবং আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। এর আগে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তিন হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানির ওপর ভিত্তি করে পরের অর্থবছরের জন্য চার হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম।