খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের সুুযোগে বাংলাদেশ ব্যাংককে সাধুবাদ জানালো বিএবি

খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ওপর ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বিএবির বৈঠকের পর গতকাল সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের ফলে সবার মঙ্গল হবে। নতুন গভর্নর ঋণ পুনঃতফসিলের ভার ব্যাংকের ওপর দিয়েছে। এটা যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ। এটা ব্যাংকের হাতে দিয়ে দেয়ার ফলে আমাদের পরিশ্রম অনেক কমে যাবে। একই সঙ্গে ব্যাংকের কর্ম ও রিকভারি অনেক বেড়ে যাবে। এখন যার যার ব্যাংক সে কন্ট্রোল করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকে আর তাকিয়ে থাকতে হবে না। ব্যাংক নিজেই ঋণ পুনঃতফসিল করবে।’

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনের ক্ষমতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের হাতে দিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘ব্যাংকগুলো তার গ্রাহক সম্পর্কে ভালো জানে। তারা বুঝতে পারবে কোন গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করছে। কাদের আবার ঋণসুবিধা দেয়া হবে। খেলাপি ঋণের ওপর দেশের ব্যাংকিং খাতের অনেক কিছু নির্ভর করে। খেলাপি ঋণ বেশি থাকলে দাতা সংস্থা তা ভালোভাবে নেয় না। করোনা এবং বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলে নতুন নীতিমালা দেয়া হয়েছে।’

বিএবির চেয়ারম্যান মনে করেন এই প্রজ্ঞাপনের ফলে ব্যাংকের জবাবদিহি বাড়বে। তিনি বলেন, ‘যারা অমান্য করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এটাকেও আমরা স্বাগত জানাই।’

ব্যাংকাররা শাস্তির বিষয় মেনে নেবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কেন মেনে নেবে না? আমরা মেনে নিয়েছি, ব্যাংকাররাও মেনে নেবে। কোনো ব্যাংক অন্যায়-অপরাধ করলে শাস্তির আওতায় আসা উচিত। সে ক্ষেত্রে এ প্রজ্ঞাপন একটা ল্যান্ডমার্ক।’

গভর্নরের সঙ্গে এই সাক্ষাতে দাবি-দাওয়া প্রাধান্য ছিল না বলেও জানান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে একজন নতুন গভর্নর এসেছেন। আমরা দীর্ঘদিন থেকে তাকে চিনি। নতুন গভর্নরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য আমরা এসেছি। শুধু শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। কোন দাবি-দাওয়া বা অন্য কোন সংকট সমাধান বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি।’

অবশ্য ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঋণ পুনঃতফসিলের যে ফাইল আগে আসত, সেগুলো এখন আর বাংলাদেশ ব্যাংকে আসবে না। ফাইল এলে সিদ্ধান্ত দিতে অনেক সময় লাগত। ব্যাংক নিজেরা সেটা করতে পারবে- এ সিদ্ধান্তকে বিএবি সাধুবাদ জানিয়েছে।’

সৌজন্য সাক্ষাতেও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকে আমানত ও ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ ও ৯ শতাংশ বেঁধে দিয়ে যে আদেশ দেয়া হয়েছিল, সেটি পর্যালোচনার অনুরোধ ব্যাংকারদের পক্ষ থেকে এসেছে। ব্যাংকাররা বলেছেন, শিল্প, উৎপাদনশীল খাত ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট খাতের ঋণে ৯ শতাংশ সুদ ঠিকই আছে। তবে বিলাসজাত পণ্যে ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদের সীমা বাড়ানো যায় কি না, সেটি বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছে বিএবি।’

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২ , ০৬ শ্রাবণ ১৪২৯ ২২ জিলহজ ১৪৪৩

খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের সুুযোগে বাংলাদেশ ব্যাংককে সাধুবাদ জানালো বিএবি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ওপর ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বিএবির বৈঠকের পর গতকাল সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের ফলে সবার মঙ্গল হবে। নতুন গভর্নর ঋণ পুনঃতফসিলের ভার ব্যাংকের ওপর দিয়েছে। এটা যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ। এটা ব্যাংকের হাতে দিয়ে দেয়ার ফলে আমাদের পরিশ্রম অনেক কমে যাবে। একই সঙ্গে ব্যাংকের কর্ম ও রিকভারি অনেক বেড়ে যাবে। এখন যার যার ব্যাংক সে কন্ট্রোল করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দিকে আর তাকিয়ে থাকতে হবে না। ব্যাংক নিজেই ঋণ পুনঃতফসিল করবে।’

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনের ক্ষমতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের হাতে দিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘ব্যাংকগুলো তার গ্রাহক সম্পর্কে ভালো জানে। তারা বুঝতে পারবে কোন গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করছে। কাদের আবার ঋণসুবিধা দেয়া হবে। খেলাপি ঋণের ওপর দেশের ব্যাংকিং খাতের অনেক কিছু নির্ভর করে। খেলাপি ঋণ বেশি থাকলে দাতা সংস্থা তা ভালোভাবে নেয় না। করোনা এবং বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলে নতুন নীতিমালা দেয়া হয়েছে।’

বিএবির চেয়ারম্যান মনে করেন এই প্রজ্ঞাপনের ফলে ব্যাংকের জবাবদিহি বাড়বে। তিনি বলেন, ‘যারা অমান্য করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এটাকেও আমরা স্বাগত জানাই।’

ব্যাংকাররা শাস্তির বিষয় মেনে নেবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কেন মেনে নেবে না? আমরা মেনে নিয়েছি, ব্যাংকাররাও মেনে নেবে। কোনো ব্যাংক অন্যায়-অপরাধ করলে শাস্তির আওতায় আসা উচিত। সে ক্ষেত্রে এ প্রজ্ঞাপন একটা ল্যান্ডমার্ক।’

গভর্নরের সঙ্গে এই সাক্ষাতে দাবি-দাওয়া প্রাধান্য ছিল না বলেও জানান নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে একজন নতুন গভর্নর এসেছেন। আমরা দীর্ঘদিন থেকে তাকে চিনি। নতুন গভর্নরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য আমরা এসেছি। শুধু শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। কোন দাবি-দাওয়া বা অন্য কোন সংকট সমাধান বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি।’

অবশ্য ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঋণ পুনঃতফসিলের যে ফাইল আগে আসত, সেগুলো এখন আর বাংলাদেশ ব্যাংকে আসবে না। ফাইল এলে সিদ্ধান্ত দিতে অনেক সময় লাগত। ব্যাংক নিজেরা সেটা করতে পারবে- এ সিদ্ধান্তকে বিএবি সাধুবাদ জানিয়েছে।’

সৌজন্য সাক্ষাতেও কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকে আমানত ও ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ ও ৯ শতাংশ বেঁধে দিয়ে যে আদেশ দেয়া হয়েছিল, সেটি পর্যালোচনার অনুরোধ ব্যাংকারদের পক্ষ থেকে এসেছে। ব্যাংকাররা বলেছেন, শিল্প, উৎপাদনশীল খাত ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট খাতের ঋণে ৯ শতাংশ সুদ ঠিকই আছে। তবে বিলাসজাত পণ্যে ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদের সীমা বাড়ানো যায় কি না, সেটি বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছে বিএবি।’