ইউএনওকে হত্যাচেষ্টা ৩ মাসের মধ্যে বিচার

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে হত্যাচেষ্টা মামলার বিচারকার্য আগামী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।

গত রোববার (১৭ জুলাই) দিনাজপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘোড়াঘাট থানার তৎকালীন দুই ওসির সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য শেষে বিচারক এ কে এম মঈনউদ্দিন সিদ্দিকী বাদী ও বিবাদীপক্ষের আইনজীবীদের বিষয়টি জানান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) ইকবাল রায়হান সোহেল। তিনি জানান, আগামী তিন মাসের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা রয়েছে বলে আদালতের বিচারক জানিয়েছেন। এ মামলার আরও দুই সাক্ষী তৎকালীন ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর ও এসআই সাইফুল ইসলামের সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আগামী ২৪ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, গত রোববার দুপুরে মামলার দুই সাক্ষী ঘোড়াঘাট থানার সাবেক ওসি আমিরুল ইসলাম ও আজিম উদ্দিন আদালতে সাক্ষ্য দেন। মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। এখন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির সাবেক ওসি ইমাম জাফর ও এসআই সাইফুল ইসলাম আদালতে সাক্ষ্য দিলেই সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হবে। এরপর যুক্তিতর্ক ও পরে রায় হবে। তাই এই হিসেবে খুব বেশি সময় লাগবে না রায় ঘোষণা করতে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, এই মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছিল ৬১ জন । প্রায় সবারই সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, শুধুমাত্র বাকি দুই পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ হলেই মামলা ৩৪২ ধারায় আসামি পরীক্ষা এবং যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করবেন বিচারক।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে তৎকালীন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে হাতুড়ি দিয়ে তাকে ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় উপজেলা পরিষদের বরখাস্ত মালি রবিউল ইসলাম (৩৫)। সেই সময় তাদেরকে গুরুতর অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজে এবং পরবর্তীতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়।

পরে গুরুতর আহত ইউএনওর ভাই পুলিশ পরিদর্শক শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘটনার পরের দিন ৩ সেপ্টেম্বর ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্ত করে ১১ সেপ্টেম্বর বরখাস্ত মালি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ভীমপুর গ্রামের মৃত খতিব উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় আসামি রবিউল। তার জবানবন্দীর ভিত্তিতে গত ২১ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র পেশ করেন তৎকালীন ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর।

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২ , ০৬ শ্রাবণ ১৪২৯ ২২ জিলহজ ১৪৪৩

ইউএনওকে হত্যাচেষ্টা ৩ মাসের মধ্যে বিচার

প্রতিনিধি, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর)

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে হত্যাচেষ্টা মামলার বিচারকার্য আগামী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।

গত রোববার (১৭ জুলাই) দিনাজপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘোড়াঘাট থানার তৎকালীন দুই ওসির সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য শেষে বিচারক এ কে এম মঈনউদ্দিন সিদ্দিকী বাদী ও বিবাদীপক্ষের আইনজীবীদের বিষয়টি জানান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) ইকবাল রায়হান সোহেল। তিনি জানান, আগামী তিন মাসের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা রয়েছে বলে আদালতের বিচারক জানিয়েছেন। এ মামলার আরও দুই সাক্ষী তৎকালীন ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর ও এসআই সাইফুল ইসলামের সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আগামী ২৪ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, গত রোববার দুপুরে মামলার দুই সাক্ষী ঘোড়াঘাট থানার সাবেক ওসি আমিরুল ইসলাম ও আজিম উদ্দিন আদালতে সাক্ষ্য দেন। মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। এখন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির সাবেক ওসি ইমাম জাফর ও এসআই সাইফুল ইসলাম আদালতে সাক্ষ্য দিলেই সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হবে। এরপর যুক্তিতর্ক ও পরে রায় হবে। তাই এই হিসেবে খুব বেশি সময় লাগবে না রায় ঘোষণা করতে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, এই মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছিল ৬১ জন । প্রায় সবারই সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, শুধুমাত্র বাকি দুই পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ হলেই মামলা ৩৪২ ধারায় আসামি পরীক্ষা এবং যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করবেন বিচারক।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে তৎকালীন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে হাতুড়ি দিয়ে তাকে ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় উপজেলা পরিষদের বরখাস্ত মালি রবিউল ইসলাম (৩৫)। সেই সময় তাদেরকে গুরুতর অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজে এবং পরবর্তীতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়।

পরে গুরুতর আহত ইউএনওর ভাই পুলিশ পরিদর্শক শেখ ফরিদ বাদী হয়ে ঘটনার পরের দিন ৩ সেপ্টেম্বর ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্ত করে ১১ সেপ্টেম্বর বরখাস্ত মালি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ভীমপুর গ্রামের মৃত খতিব উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় আসামি রবিউল। তার জবানবন্দীর ভিত্তিতে গত ২১ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র পেশ করেন তৎকালীন ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর।