সংলাপে যায়নি বিএনপি, ‘অপেক্ষা করবেন’ সিইসি

নির্বাচন কোন খেলা নয়, ইসি রেফারিও নয়। ইসিকে নির্বিঘে্ন ভোটদানের ব্যবস্থা করতে হবে, দায়ও নিতে হবে : ডা. শাহাদাত হোসেন

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আমন্ত্রণে বিএনপি সংলাপে না এলেও দলটির জন্য ‘অপেক্ষা’ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন (সিইসি) কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা ওয়েট করব।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তিনি ‘ইতিবাচক মনোভাব’ দেখেছেন। তার আশা, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা নেবে। পাশাপাশি ইসির চেষ্টাও অব্যাহত থাকবে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলপ করছে ইসি। ইসির সূচি অনুযায়ী গতকাল সংলাপের চতুর্থ দিন বিকেলে বিএনপির অংশ নেয়ার কথা। তবে দলটি মঙ্গলবারই কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে তারা সংলাপে অংশ নেবে না। এর আগে ইভিএম নিয়ে ইসির মতবিনিময় সভাতেও দলটি যোগ দেয়নি।

চার দিনে ১১টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি, আমন্ত্রণ পাওয়া দুটি দল আসেনি। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে এই বৈঠক শেষ করার কথা রয়েছে ইসির। সংলাপ শেষ হলে এই আলোচনার সারসংক্ষেপ সবাইকে ‘অবহিত করা হবে’ বলে জানান সিইসি।

সাংবাদিকদের সিইসি বলেন, ‘আমরাও বলেছি, সত্যিকার অর্থে এটিই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব যে প্রত্যেকটা ভোটার যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এটাই গণন্ত্রের ভিত্তি। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন এবং প্রতিটি দলই বলেছে তারা ঐকমত্যে বিশ্বাস করে। ঐকমত্য তো হতেও পারে, নাও হতে পারে।’

রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে দলগুলোকে প্রচেষ্টা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আমরা বলেছি আমরা আমাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখব। এ বিষয়ে কেউ না করেনি, প্রয়াসটি অব্যাহত থাকবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, ঐক্যটা আমাদের নয়, আমরা রাজনৈতিক দলগেুলোকে বলেছি, আপনারা ঐক্যের চেষ্টা করুন এবং ঐক্য হলে আমরা আনন্দিত হব।’

ইসির প্রতি কিছু রাজনৈতিক দলের যে অনাস্থা, এই সংলাপের মধ্য দিয়ে তা দূর হবে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘ইসির প্রতি অনাস্থা সবসময় আছে বা নাই দুটো জিনিস। আপনারা তো পেপারেই দেখছেন, একটা দলের হয়তো অনাস্থা আছে। আবার আমাদের সঙ্গে যারা বসেছে, তাদের প্রত্যেকের আমাদের প্রতি আস্থা আছে।’

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ১০ জন প্রতিনিধি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংলাপে অংশ নেন। গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন কোন খেলা নয়, ইসি রেফারিও নয়। ইসির দায়িত্ব হচ্ছে অভিভাবকের। কোন দল নির্বাচনে এল কি এলো না, তা কমিশনের দায়িত্বও নয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে ইসিকে। এবার আর কাউকে দায় দেয়া যাবে না, দায় নিতে হবে কমিশনকে।’ নির্বাচনে ধর্মের ‘অপব্যবহার’ নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি সংলাপে উপস্থাপন করে দলটি।

বিএনপির জন্য নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে : ইসি আলমগীর

বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উনারা (বিএনপি) এলে ভালো হতো। আমাদের চলমান সংলাপ ভালো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো সুচিন্তিত মতামত দিয়েছে। এগুলো আমাদের ভালো নির্বাচন করার জন্য সহায়ক হবে। তবে যারা আসেননি, তারা এলে আরও ভালো হতো। এজন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

বিএনপিকে ভোটে আনার বিষয়ে এর মধ্যে আর কোন উদ্যোগ ইসি নেবে কি নাÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ‘ভোটের আগ পর্যন্ত’ ইসির অব্যাহত প্রয়াস থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো বারবারই উদ্যোগ নিয়ে যাচ্ছি। আগেও ইভিএমের বিষয়ে যোগাযোগ করেছি, আসেননি। এখন যে সংলাপ, সে বিষয়েও যোগাযোগ করেছি, আসেননি। সামনে যোগাযোগ আবারো থাকবে।’

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২ , ০৬ শ্রাবণ ১৪২৯ ২২ জিলহজ ১৪৪৩

সংলাপে যায়নি বিএনপি, ‘অপেক্ষা করবেন’ সিইসি

নির্বাচন কোন খেলা নয়, ইসি রেফারিও নয়। ইসিকে নির্বিঘে্ন ভোটদানের ব্যবস্থা করতে হবে, দায়ও নিতে হবে : ডা. শাহাদাত হোসেন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আমন্ত্রণে বিএনপি সংলাপে না এলেও দলটির জন্য ‘অপেক্ষা’ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন (সিইসি) কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা ওয়েট করব।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তিনি ‘ইতিবাচক মনোভাব’ দেখেছেন। তার আশা, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা নেবে। পাশাপাশি ইসির চেষ্টাও অব্যাহত থাকবে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলপ করছে ইসি। ইসির সূচি অনুযায়ী গতকাল সংলাপের চতুর্থ দিন বিকেলে বিএনপির অংশ নেয়ার কথা। তবে দলটি মঙ্গলবারই কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে তারা সংলাপে অংশ নেবে না। এর আগে ইভিএম নিয়ে ইসির মতবিনিময় সভাতেও দলটি যোগ দেয়নি।

চার দিনে ১১টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি, আমন্ত্রণ পাওয়া দুটি দল আসেনি। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে এই বৈঠক শেষ করার কথা রয়েছে ইসির। সংলাপ শেষ হলে এই আলোচনার সারসংক্ষেপ সবাইকে ‘অবহিত করা হবে’ বলে জানান সিইসি।

সাংবাদিকদের সিইসি বলেন, ‘আমরাও বলেছি, সত্যিকার অর্থে এটিই আমাদের একমাত্র দায়িত্ব যে প্রত্যেকটা ভোটার যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। এটাই গণন্ত্রের ভিত্তি। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন এবং প্রতিটি দলই বলেছে তারা ঐকমত্যে বিশ্বাস করে। ঐকমত্য তো হতেও পারে, নাও হতে পারে।’

রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছাতে দলগুলোকে প্রচেষ্টা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আমরা বলেছি আমরা আমাদের প্রয়াস অব্যাহত রাখব। এ বিষয়ে কেউ না করেনি, প্রয়াসটি অব্যাহত থাকবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, ঐক্যটা আমাদের নয়, আমরা রাজনৈতিক দলগেুলোকে বলেছি, আপনারা ঐক্যের চেষ্টা করুন এবং ঐক্য হলে আমরা আনন্দিত হব।’

ইসির প্রতি কিছু রাজনৈতিক দলের যে অনাস্থা, এই সংলাপের মধ্য দিয়ে তা দূর হবে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘ইসির প্রতি অনাস্থা সবসময় আছে বা নাই দুটো জিনিস। আপনারা তো পেপারেই দেখছেন, একটা দলের হয়তো অনাস্থা আছে। আবার আমাদের সঙ্গে যারা বসেছে, তাদের প্রত্যেকের আমাদের প্রতি আস্থা আছে।’

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ১০ জন প্রতিনিধি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংলাপে অংশ নেন। গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন কোন খেলা নয়, ইসি রেফারিও নয়। ইসির দায়িত্ব হচ্ছে অভিভাবকের। কোন দল নির্বাচনে এল কি এলো না, তা কমিশনের দায়িত্বও নয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে ইসিকে। এবার আর কাউকে দায় দেয়া যাবে না, দায় নিতে হবে কমিশনকে।’ নির্বাচনে ধর্মের ‘অপব্যবহার’ নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি সংলাপে উপস্থাপন করে দলটি।

বিএনপির জন্য নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে : ইসি আলমগীর

বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উনারা (বিএনপি) এলে ভালো হতো। আমাদের চলমান সংলাপ ভালো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো সুচিন্তিত মতামত দিয়েছে। এগুলো আমাদের ভালো নির্বাচন করার জন্য সহায়ক হবে। তবে যারা আসেননি, তারা এলে আরও ভালো হতো। এজন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

বিএনপিকে ভোটে আনার বিষয়ে এর মধ্যে আর কোন উদ্যোগ ইসি নেবে কি নাÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ‘ভোটের আগ পর্যন্ত’ ইসির অব্যাহত প্রয়াস থাকবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো বারবারই উদ্যোগ নিয়ে যাচ্ছি। আগেও ইভিএমের বিষয়ে যোগাযোগ করেছি, আসেননি। এখন যে সংলাপ, সে বিষয়েও যোগাযোগ করেছি, আসেননি। সামনে যোগাযোগ আবারো থাকবে।’