বর্ষার শুরু থেকেই শিবালয়ে যমুনার পাড়সহ চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে নদীভাঙন তীব্র হয়েছে। ইতোমধ্যে আলোকদিয়া, মধ্যনগর, ত্রিশু-ি ও চর বৈষ্টমীর কয়েকশ’ পরিবার নদীভাঙনে ভিটে-মাটি হারিয়েছেন। চরম হুমকির মুখে রয়েছেন আরিচাঘাট সংলগ্ন দক্ষিণ শিবালয় ও আনুলিয়ার ২০০ পরিবার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত নদীর পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের সময় ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। তবে চলতি বর্ষায় যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে, তা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি বলে দাবি এলাকাবাসীর। সরেজমিন ভাঙনকবলিত এলাকায় দেখা গেছে, জেলার শিবালয় উপজেলার দক্ষিণ শিবালয় গ্রামের নদীর পাড়ে বিশাল খাড়া ঢালের সৃষ্টি হয়েছে। এবার বর্ষা শুরু হতেই নদীভাঙন শুরু হয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে নদীভাঙনের তীব্রতা ততই বাড়ছে। ভুক্তভোগীরা নিজ উদ্যোগে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। কিন্তু এতে তেমন সফলতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে তারা জানিয়েছেন। গ্রামবাসী এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
ভাঙনকবলিত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে নদীর কূলে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা এবং ভাঙনকবলিত এলাকার পশ্চিমে ও উত্তরে নদীতে চর পড়েছে। যমুনার পানির স্রোত এ গ্রামের নিকটবর্তী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে বহুগুণ। ইতোমধ্যে আরিচা ঘাট থেকে নদীর পাড় দিয়ে দক্ষিণ শিবালয়ের রাস্তাটির অর্ধেক অংশ, পাকা কবরসহ অনেক স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গেছে। যমুনার পাড়ে অবস্থিত দক্ষিণ শিবালয় জামে মসজিদ, আরিচার পিসিপোল কারখানা, কাশাদহ সেচ প্রকল্পের পানির পাম্প হাউস হুমকির মুখে রয়েছে।
অতিদ্রুত ভাঙন রোধ করা না হলে এসব স্থাপনা যেকোন সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। যার মধ্যে সরকারের কয়েকশ’ কোটি টাকার পোল কারখানাও রয়েছে। নদীর পার এলাকা দীর্ঘদিন যাবত প্রতি বছরই বর্ষায় সীমিত আকারে ভাঙনের শিকার হয়। কিন্তু চলতি বছর এ এলাকায় নদী ভাঙন সর্বকালের ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। চলতি বর্ষায় যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে, তা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি বলে দাবি করলেন নদীভাঙনের শিকার সন্তোষ মোল্লা।
এসব ভাঙনকবলিত এলাকায় নদীশাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে হয়তো ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। অন্যথায় পূর্ব পুরুষের ভিটাবাড়ি, জায়গা জমি সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করলেন আমির চান মোল্লা।
আরিচা ঘাট সংলগ্ন নিহালপুর এলাকা হতে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নদী শাসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসীরা।
তারা জানান, নদীভাঙন রোধে ভাঙনকবলিত এলাকাবাসী এবং শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং পানি বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, শিবালয়ের নদীভাঙনের বিষয়ে আমরা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২ , ০৬ শ্রাবণ ১৪২৯ ২২ জিলহজ ১৪৪৩
রফিকুল ইসলাম, শিবালয় (মানিকগঞ্জ)
বর্ষার শুরু থেকেই শিবালয়ে যমুনার পাড়সহ চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে নদীভাঙন তীব্র হয়েছে। ইতোমধ্যে আলোকদিয়া, মধ্যনগর, ত্রিশু-ি ও চর বৈষ্টমীর কয়েকশ’ পরিবার নদীভাঙনে ভিটে-মাটি হারিয়েছেন। চরম হুমকির মুখে রয়েছেন আরিচাঘাট সংলগ্ন দক্ষিণ শিবালয় ও আনুলিয়ার ২০০ পরিবার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত নদীর পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের সময় ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। তবে চলতি বর্ষায় যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে, তা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি বলে দাবি এলাকাবাসীর। সরেজমিন ভাঙনকবলিত এলাকায় দেখা গেছে, জেলার শিবালয় উপজেলার দক্ষিণ শিবালয় গ্রামের নদীর পাড়ে বিশাল খাড়া ঢালের সৃষ্টি হয়েছে। এবার বর্ষা শুরু হতেই নদীভাঙন শুরু হয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে নদীভাঙনের তীব্রতা ততই বাড়ছে। ভুক্তভোগীরা নিজ উদ্যোগে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছেন। কিন্তু এতে তেমন সফলতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে তারা জানিয়েছেন। গ্রামবাসী এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
ভাঙনকবলিত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে নদীর কূলে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা এবং ভাঙনকবলিত এলাকার পশ্চিমে ও উত্তরে নদীতে চর পড়েছে। যমুনার পানির স্রোত এ গ্রামের নিকটবর্তী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে বহুগুণ। ইতোমধ্যে আরিচা ঘাট থেকে নদীর পাড় দিয়ে দক্ষিণ শিবালয়ের রাস্তাটির অর্ধেক অংশ, পাকা কবরসহ অনেক স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গেছে। যমুনার পাড়ে অবস্থিত দক্ষিণ শিবালয় জামে মসজিদ, আরিচার পিসিপোল কারখানা, কাশাদহ সেচ প্রকল্পের পানির পাম্প হাউস হুমকির মুখে রয়েছে।
অতিদ্রুত ভাঙন রোধ করা না হলে এসব স্থাপনা যেকোন সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। যার মধ্যে সরকারের কয়েকশ’ কোটি টাকার পোল কারখানাও রয়েছে। নদীর পার এলাকা দীর্ঘদিন যাবত প্রতি বছরই বর্ষায় সীমিত আকারে ভাঙনের শিকার হয়। কিন্তু চলতি বছর এ এলাকায় নদী ভাঙন সর্বকালের ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। চলতি বর্ষায় যেভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে, তা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি বলে দাবি করলেন নদীভাঙনের শিকার সন্তোষ মোল্লা।
এসব ভাঙনকবলিত এলাকায় নদীশাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে হয়তো ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। অন্যথায় পূর্ব পুরুষের ভিটাবাড়ি, জায়গা জমি সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করলেন আমির চান মোল্লা।
আরিচা ঘাট সংলগ্ন নিহালপুর এলাকা হতে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও নদী শাসনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসীরা।
তারা জানান, নদীভাঙন রোধে ভাঙনকবলিত এলাকাবাসী এবং শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং পানি বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, শিবালয়ের নদীভাঙনের বিষয়ে আমরা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু করা হবে।