শিক্ষায় ভর্তি ও বয়স অবারিত রাখার পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী

উচ্চশিক্ষায় ভর্তির সুযোগ ও বয়স অবারিত রাখার কথা ভাবছে শিক্ষা প্রশাসন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘উচ্চশিক্ষার সুযোগ সারাবিশ্ব যখন অবারিত করছে, তখন আমরা কেন দেয়াল তুলছি? শিক্ষার্থীরা কেন নির্দিষ্ট বয়স এবং একবারের বেশি ভর্তির সুযোগ পাবে না- এটি আমার বোধগম্য নয়।’

শিক্ষামন্ত্রী গতকাল রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে ‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন। শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানোর লক্ষে এ অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হলো। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীকসহ শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ‘বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে ‘অনেক কিছু করার’ আছে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যখন সারাবিশ্ব সবকিছুতে সুযোগ অবারিত করার কথা বলছে, মানসম্মত শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে আমরা যখন বলছি জীবনব্যাপী শিক্ষা, তখন আমরা সব জায়গায় কেন দেয়াল তুলছি? কেন নির্দিষ্ট বয়সে ভর্তির কথা বলছি। কেন বলছি একবারের বেশি ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবো না?’

মন্ত্রী আইন বিষয়েও পড়ালেখা করেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘কেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে পারবো না? ডিপ্লোমায় আছি, কেন সাহিত্য নিয়ে পড়তে পারবো না? কেন নির্দিষ্ট বয়সের পর আর ভর্তি হতে পারবো না। কেন একবারের বেশি ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবো না। এ বিষয়গুলো দেখতে হবে। শিক্ষার্থীর জীবনের সব পথ বন্ধ করে দেয়া এটা বোধহয় ঠিক না।’

‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে মান নির্ণয় করা হচ্ছে তাই নয়, প্রতিষ্ঠান নিজেই সেলফ অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় তার মধ্য দিয়ে নিজেই মান বাড়াতে পারবে। অনেক কিছু শেখাবে।’

‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের পথচলা’ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তার সুফল সব প্রতিষ্ঠান পেতে শুরু করবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে সবকিছু প্রায় গুছিয়ে আনার একটি কাজ হলো।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘এতদিন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজেদের মধ্যে সমতা বিধানের কোন প্রক্রিয়া ছিল না। আমাদের যেখানে নিজস্ব কোন মানদ-ই ছিল না। ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক ছিল না সেখানে আন্তর্জাতিক মানদ- নিয়ে প্রশ্ন কতটা প্রাসঙ্গিক তা নিয়েও প্রশ্ন ছিল।’

সচিব আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা ‘অ্যাক্রেডিটিশন প্রক্রিয়ার’ একটি বিশাল দায়িত্ব। এজন্য ‘বাংলাদেশ কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ করা হয়েছে। এটির যদি যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা পাবে।

২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইন পাস হয়। ২০১৮ সালে এর চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়।

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২ , ০৬ শ্রাবণ ১৪২৯ ২২ জিলহজ ১৪৪৩

শিক্ষায় ভর্তি ও বয়স অবারিত রাখার পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

উচ্চশিক্ষায় ভর্তির সুযোগ ও বয়স অবারিত রাখার কথা ভাবছে শিক্ষা প্রশাসন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘উচ্চশিক্ষার সুযোগ সারাবিশ্ব যখন অবারিত করছে, তখন আমরা কেন দেয়াল তুলছি? শিক্ষার্থীরা কেন নির্দিষ্ট বয়স এবং একবারের বেশি ভর্তির সুযোগ পাবে না- এটি আমার বোধগম্য নয়।’

শিক্ষামন্ত্রী গতকাল রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে ‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন। শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানোর লক্ষে এ অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হলো। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীকসহ শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ‘বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে ‘অনেক কিছু করার’ আছে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যখন সারাবিশ্ব সবকিছুতে সুযোগ অবারিত করার কথা বলছে, মানসম্মত শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে আমরা যখন বলছি জীবনব্যাপী শিক্ষা, তখন আমরা সব জায়গায় কেন দেয়াল তুলছি? কেন নির্দিষ্ট বয়সে ভর্তির কথা বলছি। কেন বলছি একবারের বেশি ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবো না?’

মন্ত্রী আইন বিষয়েও পড়ালেখা করেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘কেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে পারবো না? ডিপ্লোমায় আছি, কেন সাহিত্য নিয়ে পড়তে পারবো না? কেন নির্দিষ্ট বয়সের পর আর ভর্তি হতে পারবো না। কেন একবারের বেশি ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবো না। এ বিষয়গুলো দেখতে হবে। শিক্ষার্থীর জীবনের সব পথ বন্ধ করে দেয়া এটা বোধহয় ঠিক না।’

‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে মান নির্ণয় করা হচ্ছে তাই নয়, প্রতিষ্ঠান নিজেই সেলফ অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় তার মধ্য দিয়ে নিজেই মান বাড়াতে পারবে। অনেক কিছু শেখাবে।’

‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের পথচলা’ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তার সুফল সব প্রতিষ্ঠান পেতে শুরু করবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে সবকিছু প্রায় গুছিয়ে আনার একটি কাজ হলো।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘এতদিন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজেদের মধ্যে সমতা বিধানের কোন প্রক্রিয়া ছিল না। আমাদের যেখানে নিজস্ব কোন মানদ-ই ছিল না। ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক ছিল না সেখানে আন্তর্জাতিক মানদ- নিয়ে প্রশ্ন কতটা প্রাসঙ্গিক তা নিয়েও প্রশ্ন ছিল।’

সচিব আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা ‘অ্যাক্রেডিটিশন প্রক্রিয়ার’ একটি বিশাল দায়িত্ব। এজন্য ‘বাংলাদেশ কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ করা হয়েছে। এটির যদি যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা পাবে।

২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইন পাস হয়। ২০১৮ সালে এর চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়।