অভিযুক্ত ৬৫ শিশুকে মুক্তি দেয়া হলো সংশোধনের শর্তে

২৫ দম্পতিকে ভাঙতে দেয়া হলো না সংসার

সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন ৫২ মামলায় ৬৫ অভিযুক্ত শিশুকে সংশোধনের শর্তে মুক্তি দিয়েছেন এবং ২৫ দম্পতির মধ্যে স্বামী ও স্ত্রীর ভুল বোঝাবুঝির অবসান করে নতুন করে সংসার গড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলায় ৬৫ শিশু প্রবেশনে ও ২৫ দম্পত্তিকে মিলিয়ে দিয়ে মুক্তি দিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এবং শিশু আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. জাকির হোসেন।

গতকাল সকালে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মুক্তিযুদ্ধের বই, বাংলাদেশের পতাকা, ফুল আর ডায়েরি হাতে ৫২টি মামলায় ৬৫ অভিযুক্ত শিশুকে সংশোধনের ৬টি শর্তে মুক্তি দিয়েছেন আদলত। একই দিনে ফুল দিয়ে ২৫ দম্পত্তিকে মিলিয়েও দেয়া হয়।

আদালত জানায়, কোমলমতি এসব শিশুদের পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মামলায় জড়ানো হয়েছিল যাদের বিরুদ্ধে মারামারি এবং ছোট খাট কিছু চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল। ক্ষুদ্র একটি অভিযোগে এসব শিশুদের আদালতে হাজিরা দিতে হত। মামলা এবং সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার ফলে শিশুদের ভবিষ্যৎ এক অনিশ্চিয়তার মধ্যে নিপতিত হয়। তাদের শিক্ষাজীবন ব্যহত হয়। স্বাভাবিক জীবনে শিশুদের বেড়ে ওঠা হুমকির সম্মুখীন হয়। শিশুদের এসব অসুবিধা থেকে মুক্তি দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি করে দেন বিজ্ঞ বিচারক।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, কারাগারের পরিবর্তে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রেখে সংশোধনের কতিপয় পথ রাখায় বিজ্ঞ বিচারক তারা ৬টি শর্তে তাদের বাবা মায়ের জিম্মায় তাদের ফেরত পাঠিয়েছেন। তারা আগামী একবছর এই নিয়ম পালন করবে এবং আমি তাদের তদারকি করব যদি তারা ব্যার্থ হয় তাহলে আবারও তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি নান্টু রায় বলেন, সুনামগঞ্জের ইতিহাসে আরেকটি ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন আদালত। এতে করে আমরা মনে করি আদালতে মামলা যে জট তা অনেকটা কমে যাবে, আজকে তিনি ৫২ মামলায় ৬৫ শিশুকে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন এবং ২৫টি দম্পতিকে মিলিয়ে দিয়েছেন তাদের ভাঙা সংসার আবারও গড়ে দিয়েছেন। এই রায়ে অভিযুক্ত শিশুরা এবং দম্পতিরা খুশি হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২ , ০৬ শ্রাবণ ১৪২৯ ২২ জিলহজ ১৪৪৩

সুনামগঞ্জে বিচারের রায়

অভিযুক্ত ৬৫ শিশুকে মুক্তি দেয়া হলো সংশোধনের শর্তে

২৫ দম্পতিকে ভাঙতে দেয়া হলো না সংসার

লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন ৫২ মামলায় ৬৫ অভিযুক্ত শিশুকে সংশোধনের শর্তে মুক্তি দিয়েছেন এবং ২৫ দম্পতির মধ্যে স্বামী ও স্ত্রীর ভুল বোঝাবুঝির অবসান করে নতুন করে সংসার গড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলায় ৬৫ শিশু প্রবেশনে ও ২৫ দম্পত্তিকে মিলিয়ে দিয়ে মুক্তি দিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এবং শিশু আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. জাকির হোসেন।

গতকাল সকালে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মুক্তিযুদ্ধের বই, বাংলাদেশের পতাকা, ফুল আর ডায়েরি হাতে ৫২টি মামলায় ৬৫ অভিযুক্ত শিশুকে সংশোধনের ৬টি শর্তে মুক্তি দিয়েছেন আদলত। একই দিনে ফুল দিয়ে ২৫ দম্পত্তিকে মিলিয়েও দেয়া হয়।

আদালত জানায়, কোমলমতি এসব শিশুদের পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মামলায় জড়ানো হয়েছিল যাদের বিরুদ্ধে মারামারি এবং ছোট খাট কিছু চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল। ক্ষুদ্র একটি অভিযোগে এসব শিশুদের আদালতে হাজিরা দিতে হত। মামলা এবং সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার ফলে শিশুদের ভবিষ্যৎ এক অনিশ্চিয়তার মধ্যে নিপতিত হয়। তাদের শিক্ষাজীবন ব্যহত হয়। স্বাভাবিক জীবনে শিশুদের বেড়ে ওঠা হুমকির সম্মুখীন হয়। শিশুদের এসব অসুবিধা থেকে মুক্তি দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি করে দেন বিজ্ঞ বিচারক।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, কারাগারের পরিবর্তে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রেখে সংশোধনের কতিপয় পথ রাখায় বিজ্ঞ বিচারক তারা ৬টি শর্তে তাদের বাবা মায়ের জিম্মায় তাদের ফেরত পাঠিয়েছেন। তারা আগামী একবছর এই নিয়ম পালন করবে এবং আমি তাদের তদারকি করব যদি তারা ব্যার্থ হয় তাহলে আবারও তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি নান্টু রায় বলেন, সুনামগঞ্জের ইতিহাসে আরেকটি ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন আদালত। এতে করে আমরা মনে করি আদালতে মামলা যে জট তা অনেকটা কমে যাবে, আজকে তিনি ৫২ মামলায় ৬৫ শিশুকে প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন এবং ২৫টি দম্পতিকে মিলিয়ে দিয়েছেন তাদের ভাঙা সংসার আবারও গড়ে দিয়েছেন। এই রায়ে অভিযুক্ত শিশুরা এবং দম্পতিরা খুশি হয়েছেন।