রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা : রনির প্রতিবাদী অবস্থান অব্যাহত

রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ৬ দফা দাবি আদায়ে গতকাল রাজধানীর কমলাপুরে স্টেশনে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে অবস্থান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। ৬ দফা দাবি আদায়ে গতকাল বিকেলে প্রথমে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশের চেষ্টা করলে মূল ফটকে মহিউদ্দিন রনিকে আটকে দেয় রেলওয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা। পরে ফলে মূল ফটকের সামনেই অবস্থান নেয় রনি ও তার সঙ্গীরা।

স্টেশনের গেটের সামনে অবস্থানকালে এক পর্যায়ে মধ্য বয়স্ক এক ব্যক্তি রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্দোলনরত মহিউদ্দিন রনিকে নানা প্রশ্ন করতে থাকে। এতে উপস্থিত জনতা উত্তেজিত হয়ে লোকটিকে ধাওয়া দেয়। পুলিশের সহায়তা নিয়ে তিনি সরে পড়েন। এমএ সূর্য নামের লোকটি সবুজবাগের আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানায়। গতকাল বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনে অবস্থান করে মহিউদ্দিন রনি ও সঙ্গীরা। অবস্থাকালে রেলের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।

রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ জানিয়ে ছয় দফা দাবিতে গত ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর টিকেট কাউন্টারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে মহিউদ্দীন রনি। তার দাবিগুলো হলোÑ ১. টিকেট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ২. যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে। ৩. অনলাইনে কোটায় টিকেট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করতে হবে সেই সঙ্গে অনলাইন-অফলাইনে টিকেট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্ব সাধারণের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে ৪. যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ৫. ট্রেনের টিকেট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকা- সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে। ৬. ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

তার দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার পদযাত্রা করে রেলের মহাপরিচালককে স্মারকলিপি দিয়েছেন তিনি। দাবি মেনে নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনার পাশাপাশি রেল কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।

রেলওয়ে টিকেট চেকিংয়ের অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য

রেলওয়ের টিকেট পরিদর্শক (টিটিই) ও টিসির ৭৩২ পদের মধ্যে প্রায় ৫০০ পদেই শূন্য রয়েছে। তাই জনবল সংকটের কারণে রেলওয়ে টিকেট চেকিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ পদ খালি থাকায় চেকিং কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে। এছাড়া রেলওয়ের চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে ট্রেন সংখ্যা ও রেলওয়ের নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করা সম্ভব্য হবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি কর্তৃক বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে ছয় দফা দাবিসহ স্মারকলিপি প্রদানের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রেলওয়ের পক্ষ এই বক্তব্য দেয়া হয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. শরীফুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়- ১. বাংলাদেশ রেলওয়ের কম্পিউটারাইজড টিকেটিং ১৯৯৪ সাল হতে চালু রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ২৭টি স্টেশনে স্ট্যান্ড এলোন সিস্টেমে টিকেটিং চালু হলেও সময়ের পরিক্রমায় ও ডিজিটাল পদ্ধতির আধুনিকতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে সর্বাধুনিক টেকনোলজিক্যাল কৌশলের মাধ্যমে ৮৩টি স্টেশনে টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সহজ লিমিটেড জেভি বর্তমানে রেলওয়ের টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীদের টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে।

টিকেট ইস্যুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক নিয়মিত মনিটরিং করা হয় এবং যাত্রী হয়রানির কোন অভিযোগ রেলওয়ের কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত হলে তা তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিগত ২৮ বছর ধরে চলমান সিস্টেমের যাত্রী চাহিদা বা প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে যখনই প্রয়োজন হয়েছে তখনই সিস্টেমটির মানোন্নয়ন করা হয়েছে, কারণ বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীসেবা প্রদানের জন্য দেশের নাগরিকগদের কাছে দায়বদ্ধ। যদি রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমের উন্নয়নে সুস্পষ্ট অভিমত, মতামত বা সুপারিশ পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে তা বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

২. বাংলাদেশ রেলওয়েতে টিকেট কালোবাজারির বিরুদ্ধে নানাবিধ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। টিকিটের ওপর যাত্রীর নাম, এনআইডি নম্বর, বয়স, ও জেন্ডার উল্লেখ থাকে যাতে একজনের নামে ক্রয় করা টিকিটে অন্যজন ভ্রমণ করতে না পারে। তাছাড়া অনলাইন/মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সাতদিনে সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি রেলওয়ের টিকেট ক্রয় করতে না পারে টিকেটিং সিস্টেমে সে ব্যবস্থা রাখা আছে।

‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ স্লোগান বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ হতে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে সংরক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটা ভেরিফাই করে টিকেট ইস্যুর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ হতে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ফি’ জমা প্রদান করা হয়েছে। অচিরেই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং ব্যবস্থাপনায় জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফাই করার প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাবে যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির বিভিন্ন নামে বা বিভিন্নভাবে টিকেট ক্রয়ের সুযোগ বন্ধ করা সম্ভব হবে। তাছাড়া রেলওয়ে পুলিশ কর্তৃক স্টেশন এলাকায় টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।

টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে ইতোমধ্যে রেলওয়ের গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে টিকেট কালোবাজারি অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কারো যেকোন সুপরামর্শ পাওয়া গেলে বাংলাদেশ রেলওয়ে তা বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যাত্রীসেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রেলওয়ের বিভিন্ন অনিয়ম সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রচলিত আইনানুসারে তদন্তক্রমে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

৩. বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে বা প্রক্রিয়ায় অনলাইন কোটার টিকেট ব্লক করার বা টিকিট বুকিং করার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া অনলাইন বা কাউন্টার (অফলাইন) টিকেটিংয়ের বাংলাদেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার রাখা রয়েছে। টিকেট প্রাপ্যতা সাপেক্ষে যেকোন নাগরিক রেলওয়ে কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে টিকেট ক্রয় করতে পারে। বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে টিকেট বৈষম্যের কোন সুযোগ নেই।

৪. যাত্রী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেনের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার প্রাক্কালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত ২১৮টি। যার মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন ছিল ৬৪টি, আন্তঃদেশীয় ট্রেন ২টি এবং লোকাল/মেইল/এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করত ১৫২টি। বর্তমানে ২০২২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা ৩৬৬টি। যার মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন ১০৪টি, আন্তঃদেশীয় ৮টি এবং লোকাল/মেইল/এক্সপ্রেস ট্রেনের সংখ্যা ২৫৪টি। অর্থাৎ বিগত ১৩ বছরে যাত্রীবাহী ট্রেন বৃদ্ধি করা হয়েছে ১৪৮টি। যার মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন বৃদ্ধির সংখ্যা ৪০টি, আন্তঃদেশীয় ট্রেন ৬টি ও লোকাল/মেইল/এক্সপ্রেস ট্রেন ১০২টি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাছাড়া রেলওয়ের নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি ও ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির নানা প্রকল্প চলমান রয়েছে যার ফলে অচিরেই আরও ১৬ টি জেলা রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে।

৫. বাংলাদেশ রেলওয়েতে দীর্ঘদিন নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সম্প্রতি নিয়োগ কার্যকম শুরু হয়েছে। লোকবল স্বল্পতার কারণে সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে যাত্রীসেবা প্রদানে বিঘœ ঘটে। উল্লেখ করা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে বর্তমান জনবল কাঠামো অনুযায়ী টিটেই পদমঞ্জুরি ৩৬৯টি, কর্মরত ১২২ জন, শুন্য ২৪৭টি পদ। টিসি পদমঞ্জুরি ৩৬৩টি, কর্মরত ১১৬ জন এবং শূন্য ২৪৭টি পদ। অর্থাৎ টিকেট চেকিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ পদ খালি থাকায় চেকিং কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে বর্তমানে চলমান নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে ট্রেনে মনিটরিং কার্যক্রম আরও সুচারুভাবে সম্পন্ন করা যাবে।

৬. ট্রেনে খাবার সরবরাহের ব্যাপারে বিভিন্ন ট্রেনে ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত রয়েছে। রেলওয়েতে বর্তমান বাজারমূল্যের থেকে কমে খাবারের দাম নির্ধারিত রয়েছে। হ্রাসকৃত ও ন্যায্য মূল্যে খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করণার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তাছাড়া আন্তঃনগর ট্রেনের প্রতিটি কোচে খাবারের মূল্য তালিকা টানানো থাকে এবং রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ফোন নাম্বার উল্লেখ থাকে। যাত্রী হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেলে অথবা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনাকালীন খাবারের মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করা হলে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। এছাড়া বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের নিমিত্তে বাংলাদেশ রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ ও বড় বড় স্টেশনে বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একজন যাত্রী বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি পান ও সংগ্রহ করতে পারেন। তাছাড়া স্যানিটেশন ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬০টি স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম উচ্চতা বৃদ্ধি, ফেন্সিং নির্মাণসহ স্যানিটেশন আধুনিকায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

image

গতকাল কমলাপুর রেলস্টেশনে রেলের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ছয় দফা দাবিতে রনির অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত -সংবাদ

আরও খবর
বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পোশাক শিল্পে
চবিতে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নে ‘ছাত্রলীগ কর্মীসহ’, দুই জনকে শনাক্তের দাবি পুলিশের
পোশাক কারখানায় নারী নিরাপত্তা কর্মীকে ধর্ষণ, সুপারভাইজার গ্রেপ্তার
বিমানের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দুর্নীতি : ৭ প্রকল্পের নথি তলব দুদকের
মায়ানমারের আপত্তি খারিজ, রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা চলবে
এডিসি লাবনী ও কনস্টেবলের আত্মহত্যার হিসাব মিলাতে পারছে না পুলিশ
মাঙ্কিপক্স : ৯৫ শতাংশ সংক্রমণ ছড়িয়েছে যৌনতার মাধ্যমে : গবেষণা
সয়াবিন তেলের দাম কমলেও বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই

শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২ , ০৮ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৪ জিলহজ ১৪৪৩

রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা : রনির প্রতিবাদী অবস্থান অব্যাহত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

গতকাল কমলাপুর রেলস্টেশনে রেলের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ছয় দফা দাবিতে রনির অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত -সংবাদ

রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ৬ দফা দাবি আদায়ে গতকাল রাজধানীর কমলাপুরে স্টেশনে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে অবস্থান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। ৬ দফা দাবি আদায়ে গতকাল বিকেলে প্রথমে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশের চেষ্টা করলে মূল ফটকে মহিউদ্দিন রনিকে আটকে দেয় রেলওয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা। পরে ফলে মূল ফটকের সামনেই অবস্থান নেয় রনি ও তার সঙ্গীরা।

স্টেশনের গেটের সামনে অবস্থানকালে এক পর্যায়ে মধ্য বয়স্ক এক ব্যক্তি রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্দোলনরত মহিউদ্দিন রনিকে নানা প্রশ্ন করতে থাকে। এতে উপস্থিত জনতা উত্তেজিত হয়ে লোকটিকে ধাওয়া দেয়। পুলিশের সহায়তা নিয়ে তিনি সরে পড়েন। এমএ সূর্য নামের লোকটি সবুজবাগের আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানায়। গতকাল বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনে অবস্থান করে মহিউদ্দিন রনি ও সঙ্গীরা। অবস্থাকালে রেলের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।

রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ জানিয়ে ছয় দফা দাবিতে গত ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর টিকেট কাউন্টারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে মহিউদ্দীন রনি। তার দাবিগুলো হলোÑ ১. টিকেট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ২. যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে। ৩. অনলাইনে কোটায় টিকেট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করতে হবে সেই সঙ্গে অনলাইন-অফলাইনে টিকেট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্ব সাধারণের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে ৪. যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ৫. ট্রেনের টিকেট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকা- সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে। ৬. ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

তার দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার পদযাত্রা করে রেলের মহাপরিচালককে স্মারকলিপি দিয়েছেন তিনি। দাবি মেনে নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনার পাশাপাশি রেল কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল।

রেলওয়ে টিকেট চেকিংয়ের অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য

রেলওয়ের টিকেট পরিদর্শক (টিটিই) ও টিসির ৭৩২ পদের মধ্যে প্রায় ৫০০ পদেই শূন্য রয়েছে। তাই জনবল সংকটের কারণে রেলওয়ে টিকেট চেকিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ পদ খালি থাকায় চেকিং কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে। এছাড়া রেলওয়ের চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে ট্রেন সংখ্যা ও রেলওয়ের নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করা সম্ভব্য হবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি কর্তৃক বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে ছয় দফা দাবিসহ স্মারকলিপি প্রদানের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রেলওয়ের পক্ষ এই বক্তব্য দেয়া হয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. শরীফুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়- ১. বাংলাদেশ রেলওয়ের কম্পিউটারাইজড টিকেটিং ১৯৯৪ সাল হতে চালু রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ২৭টি স্টেশনে স্ট্যান্ড এলোন সিস্টেমে টিকেটিং চালু হলেও সময়ের পরিক্রমায় ও ডিজিটাল পদ্ধতির আধুনিকতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে সর্বাধুনিক টেকনোলজিক্যাল কৌশলের মাধ্যমে ৮৩টি স্টেশনে টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সহজ লিমিটেড জেভি বর্তমানে রেলওয়ের টিকেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রীদের টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে।

টিকেট ইস্যুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক নিয়মিত মনিটরিং করা হয় এবং যাত্রী হয়রানির কোন অভিযোগ রেলওয়ের কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত হলে তা তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। বিগত ২৮ বছর ধরে চলমান সিস্টেমের যাত্রী চাহিদা বা প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে যখনই প্রয়োজন হয়েছে তখনই সিস্টেমটির মানোন্নয়ন করা হয়েছে, কারণ বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীসেবা প্রদানের জন্য দেশের নাগরিকগদের কাছে দায়বদ্ধ। যদি রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমের উন্নয়নে সুস্পষ্ট অভিমত, মতামত বা সুপারিশ পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ে তা বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

২. বাংলাদেশ রেলওয়েতে টিকেট কালোবাজারির বিরুদ্ধে নানাবিধ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। টিকিটের ওপর যাত্রীর নাম, এনআইডি নম্বর, বয়স, ও জেন্ডার উল্লেখ থাকে যাতে একজনের নামে ক্রয় করা টিকিটে অন্যজন ভ্রমণ করতে না পারে। তাছাড়া অনলাইন/মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সাতদিনে সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি রেলওয়ের টিকেট ক্রয় করতে না পারে টিকেটিং সিস্টেমে সে ব্যবস্থা রাখা আছে।

‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ স্লোগান বাস্তবায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ হতে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে সংরক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটা ভেরিফাই করে টিকেট ইস্যুর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ হতে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ফি’ জমা প্রদান করা হয়েছে। অচিরেই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং ব্যবস্থাপনায় জাতীয় পরিচয়পত্র ভেরিফাই করার প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাবে যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির বিভিন্ন নামে বা বিভিন্নভাবে টিকেট ক্রয়ের সুযোগ বন্ধ করা সম্ভব হবে। তাছাড়া রেলওয়ে পুলিশ কর্তৃক স্টেশন এলাকায় টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।

টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে ইতোমধ্যে রেলওয়ের গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে টিকেট কালোবাজারি অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কারো যেকোন সুপরামর্শ পাওয়া গেলে বাংলাদেশ রেলওয়ে তা বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যাত্রীসেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রেলওয়ের বিভিন্ন অনিয়ম সম্পর্কে অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রচলিত আইনানুসারে তদন্তক্রমে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

৩. বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে বা প্রক্রিয়ায় অনলাইন কোটার টিকেট ব্লক করার বা টিকিট বুকিং করার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া অনলাইন বা কাউন্টার (অফলাইন) টিকেটিংয়ের বাংলাদেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার রাখা রয়েছে। টিকেট প্রাপ্যতা সাপেক্ষে যেকোন নাগরিক রেলওয়ে কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে টিকেট ক্রয় করতে পারে। বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে টিকেট বৈষম্যের কোন সুযোগ নেই।

৪. যাত্রী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেনের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার প্রাক্কালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত ২১৮টি। যার মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন ছিল ৬৪টি, আন্তঃদেশীয় ট্রেন ২টি এবং লোকাল/মেইল/এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করত ১৫২টি। বর্তমানে ২০২২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা ৩৬৬টি। যার মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন ১০৪টি, আন্তঃদেশীয় ৮টি এবং লোকাল/মেইল/এক্সপ্রেস ট্রেনের সংখ্যা ২৫৪টি। অর্থাৎ বিগত ১৩ বছরে যাত্রীবাহী ট্রেন বৃদ্ধি করা হয়েছে ১৪৮টি। যার মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন বৃদ্ধির সংখ্যা ৪০টি, আন্তঃদেশীয় ট্রেন ৬টি ও লোকাল/মেইল/এক্সপ্রেস ট্রেন ১০২টি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাছাড়া রেলওয়ের নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি ও ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির নানা প্রকল্প চলমান রয়েছে যার ফলে অচিরেই আরও ১৬ টি জেলা রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে।

৫. বাংলাদেশ রেলওয়েতে দীর্ঘদিন নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। সম্প্রতি নিয়োগ কার্যকম শুরু হয়েছে। লোকবল স্বল্পতার কারণে সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে যাত্রীসেবা প্রদানে বিঘœ ঘটে। উল্লেখ করা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে বর্তমান জনবল কাঠামো অনুযায়ী টিটেই পদমঞ্জুরি ৩৬৯টি, কর্মরত ১২২ জন, শুন্য ২৪৭টি পদ। টিসি পদমঞ্জুরি ৩৬৩টি, কর্মরত ১১৬ জন এবং শূন্য ২৪৭টি পদ। অর্থাৎ টিকেট চেকিং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ পদ খালি থাকায় চেকিং কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে বর্তমানে চলমান নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে ট্রেনে মনিটরিং কার্যক্রম আরও সুচারুভাবে সম্পন্ন করা যাবে।

৬. ট্রেনে খাবার সরবরাহের ব্যাপারে বিভিন্ন ট্রেনে ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত রয়েছে। রেলওয়েতে বর্তমান বাজারমূল্যের থেকে কমে খাবারের দাম নির্ধারিত রয়েছে। হ্রাসকৃত ও ন্যায্য মূল্যে খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করণার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তাছাড়া আন্তঃনগর ট্রেনের প্রতিটি কোচে খাবারের মূল্য তালিকা টানানো থাকে এবং রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ফোন নাম্বার উল্লেখ থাকে। যাত্রী হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেলে অথবা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনাকালীন খাবারের মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করা হলে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী ক্যাটারিং প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। এছাড়া বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের নিমিত্তে বাংলাদেশ রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ ও বড় বড় স্টেশনে বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একজন যাত্রী বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি পান ও সংগ্রহ করতে পারেন। তাছাড়া স্যানিটেশন ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬০টি স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম উচ্চতা বৃদ্ধি, ফেন্সিং নির্মাণসহ স্যানিটেশন আধুনিকায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।