মায়ানমারের আপত্তি খারিজ, রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা চলবে

রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা বিচারের এখতিয়ার নিয়ে মায়ানমারের আপত্তির বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলায় মায়ানমারের প্রাথমিক আপত্তি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল আদালতের এ আদেশের ফলে মায়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলতে আপাতত বাধা থাকলো না।

২০১৭ সালে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে দায়ের করা গণহত্যা মামলায় মায়ানমারের প্রাথমিক আপত্তির বিষয়ে আজ রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের এই আদালতে মায়ানমারের আপত্তির বিষয়ে যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। আইসিজে সভাপতি বিচারক জোয়ান ই দোনোঘুই গতকাল স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় তার রায়টি পড়েন।

২০২১ সালে সামরিক অভিযানের মধ্যদিয়ে মায়ানমারের ক্ষমতায় বসা সামরিক জান্তার দাবি, গণহত্যার অভিযোগ তুলে জাতিসংঘের এ আদালতে মামলা করার এখতিয়ার গাম্বিয়ার নেই। তাদের সেই আপত্তি নিয়ে আইসিজেতে গত ২১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ৪টি গণশুনানি হয়। গতকাল বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে চলেছে নেদারল্যান্ডসের হেগে শহরের এ আদালত। রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা-নির্যাতন নিয়ে ২০১৯ সালে মামলাটির প্রাথমিক শুনানিতে মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি, তিনি এখন সেই সামরিক জান্তার হাতে বন্দী। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে বর্তমান জান্তা। এই সরকার জাতিসংঘের স্বীকৃতি না পেলেও তাদের ঠিক করে দেয়া ৮ সদস্যের দল আইসিজেতে লড়ছে। এ দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মায়ানমারের অ্যাটর্নি জেনারেল থিডাও।

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মায়ানমারে সামরিক দমন-পীড়নের ফলে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক রোহিঙ্গা প্রবেশ করে। জাতিসংঘ যাকে ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ বলে অভিহিত করেছে। ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর গাম্বিয়া মায়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় ৫০০-পৃষ্ঠারও বেশি একটি স্মারক দাখিল করে। যেখানে দেখানো হয় কীভাবে তৎকালীন মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে।

স্মারকটিতে গাম্বিয়ার মামলার সমর্থনে ৫ হাজার পৃষ্ঠারও বেশি সহায়ক উপাদান সংযুক্ত করা হয়।

শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২ , ০৮ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৪ জিলহজ ১৪৪৩

মায়ানমারের আপত্তি খারিজ, রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলা চলবে

সংবাদ ডেস্ক

image

রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা বিচারের এখতিয়ার নিয়ে মায়ানমারের আপত্তির বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলায় মায়ানমারের প্রাথমিক আপত্তি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল আদালতের এ আদেশের ফলে মায়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলতে আপাতত বাধা থাকলো না।

২০১৭ সালে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে দায়ের করা গণহত্যা মামলায় মায়ানমারের প্রাথমিক আপত্তির বিষয়ে আজ রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের এই আদালতে মায়ানমারের আপত্তির বিষয়ে যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। আইসিজে সভাপতি বিচারক জোয়ান ই দোনোঘুই গতকাল স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় তার রায়টি পড়েন।

২০২১ সালে সামরিক অভিযানের মধ্যদিয়ে মায়ানমারের ক্ষমতায় বসা সামরিক জান্তার দাবি, গণহত্যার অভিযোগ তুলে জাতিসংঘের এ আদালতে মামলা করার এখতিয়ার গাম্বিয়ার নেই। তাদের সেই আপত্তি নিয়ে আইসিজেতে গত ২১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ৪টি গণশুনানি হয়। গতকাল বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে চলেছে নেদারল্যান্ডসের হেগে শহরের এ আদালত। রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা-নির্যাতন নিয়ে ২০১৯ সালে মামলাটির প্রাথমিক শুনানিতে মায়ানমারের সামরিক বাহিনীর পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি, তিনি এখন সেই সামরিক জান্তার হাতে বন্দী। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মায়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে বর্তমান জান্তা। এই সরকার জাতিসংঘের স্বীকৃতি না পেলেও তাদের ঠিক করে দেয়া ৮ সদস্যের দল আইসিজেতে লড়ছে। এ দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মায়ানমারের অ্যাটর্নি জেনারেল থিডাও।

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মায়ানমারে সামরিক দমন-পীড়নের ফলে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক রোহিঙ্গা প্রবেশ করে। জাতিসংঘ যাকে ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ বলে অভিহিত করেছে। ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর গাম্বিয়া মায়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় ৫০০-পৃষ্ঠারও বেশি একটি স্মারক দাখিল করে। যেখানে দেখানো হয় কীভাবে তৎকালীন মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে।

স্মারকটিতে গাম্বিয়ার মামলার সমর্থনে ৫ হাজার পৃষ্ঠারও বেশি সহায়ক উপাদান সংযুক্ত করা হয়।